Advertisement
Advertisement
Pakistan

৮৫০-র বেশি মৃত্যু, ২০ লক্ষ ঘরছাড়া! ভয়াবহ বন্যায় কার্যত ‘নরক’ পাকিস্তান

শুধুমাত্র খাইবার পাখতুনখোয়ায় বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ৪০৬ জনের।

Over 850 people dead, 2 million hit by historic floods in Pakistan

ফাইল ছবি

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:September 1, 2025 2:50 pm
  • Updated:September 1, 2025 2:50 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির রোষে কার্যত নরকে পরিণত হয়েছে পাকিস্তান। গত জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির জেরে হড়পা বান, ভূমিধসের পাশাপাশি ডুবে গিয়েছে পাকিস্তানের বড় অংশ। রেকর্ড বন্যার জেরে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের রিপোর্ট বলছে, গত ২৬ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত দুর্যোগের জেরে দেশে মৃত্যু হয়েছে ৮৫৪ জনের। আহত এক হাজার ১০০ জন। ঘরছাড়া হয়েছেন ২০ লক্ষের বেশি মানুষ।

Advertisement

পাক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ভয়াবহ বৃষ্টির কবলে পড়েছে পাকিস্তান। যার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গত ৪০ বছরের মধ্যে এত ভয়াবহ বন্যা পাকিস্তানে দেখা যায়নি। অজস্র গ্রাম চলে গিয়েছে জলের নিচে। হাজার হাজার একর ক্ষেত্রে ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাঞ্জাবের সম্প্রচার মন্ত্রী আজাম বুখারি বলেন, “শুধু পাঞ্জাবে ভয়াবহ বন্যার জেরে প্রভাবিত হয়েছেন ২০ লক্ষের বেশি মানুষ। তবে উদ্ধারকাজে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। বন্যা কবলিত অঞ্চল থেকে ৭ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। ৫ লক্ষের বেশি গবাধি পশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতেও গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো জারি রয়েছে বৃষ্টির প্রকোপ। রিপোর্ট অনুযায়ী লাহোর, হাফিজাবাদ এবং মুলতান জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ মিমি-র বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কমপক্ষে চারটি জায়গায় ১২০ মিমি-রও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিন্ধুর শাখা নদী চন্দ্রভাগা, ইরাবতী ভাসিয়ে দিয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। দুর্যোগের জেরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়ায়। শুধুমাত্র এই প্রদেশে হড়পা বান ও অন্যান্য দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪০৬ জনের।

পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি জনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় পাঞ্জাব প্রদেশকে। গত এক সপ্তাহে ভয়ংকর বন্যার কারণে এই প্রদেশের ১৭০০ গ্রাম জলের নিচে চলে গিয়েছে। রেহাই পায়নি শিখদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র কর্তারপুর। সম্প্রতি জলমগ্ন কর্তারপুর সাহেবের ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে লাহোরের ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ মুসা রাজা বলেন, “৩৮ বছর পর এই প্রথম বন্যায় ডুবল লাহোর। ১৯৮৮ সালে এখানে শেষবার বন্য হয়েছিল।” তাঁর দাবি, প্রবল বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ভারত অতিরিক্ত জল ছাড়ার জেরে পূর্বাঞ্চলের তিন নদী শতদ্রু, ইরাবতী ও চন্দ্রভাগা ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

এর আগে পাকিস্তানের বন্যার জন্য সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন পাক মন্ত্রী আহসান ইকবাল। তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জল অস্ত্র ব্যবহার করছে। যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাকিস্তানে শুরু হয়েছে, তার মোকাবিলা করা সম্ভব শুধুমাত্র প্রতিবেশীর সহযোগিতায়। ভারতের উচিত ছিল, বিষয়টিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করে পাকিস্তানের সঙ্গে একত্রে এর মোকাবিলা করা। কিন্তু তা না করে তারা হঠাৎ ভয়ংকরভাবে জল ছাড়ছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে জল অস্ত্র প্রয়োগ করছে।” যদিও সূত্রের খবর প্রতিবার জল ছাড়ার আগে পাকিস্তানকে আগাম বার্তা পাঠানো হয়েছে ভারতের তরফে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ