সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণবিদ্রোহে উত্তাল নেপাল। সোমবারের মতোই মঙ্গলবারও ছাত্র-যুবদের আন্দোলনে (Nepal Gen Z Protest) অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি রাজধানী কাঠমান্ডু-সহ একাধিক শহরে। এই পরিস্থিতিতে কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতন কি সময়ের অপেক্ষা মাত্র? সেই দিকেই এগোচ্ছে পরিস্থিতি। গতকালই গভীর রাতেই জনরোষের চাপে সোশাল মিডিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সরকার। এবার খবর, উপপ্রধানমন্ত্রী-সহ ৯ মন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, বন, কৃষি, আইন, জল সরবরাহ, শক্তিমন্ত্রী। একটি সূত্রের দাবি, বড় বিপদ এড়াতে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পরিস্থিতি বুঝে দুবাই উড়ে যেতে পারেন তিনি। একটি নেপালি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইতিমধ্যে হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছেড়েছেন ওলি।
জনকণ্ঠ রোধে সোশাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞার অভিযোগে সোমবার সকালে তরুণ তুর্কিদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল নেপালে, রাতের মধ্যে তা হিংসাত্মক চেহারা নেয়। পুলিশ, এমনকী সেনার প্রতিরোধেও কাজ হয়নি। এর ফলে বিপ্লবের বলি হয় ২১ জন। আহত তিনশোর বেশি। এই অবস্থায় সোমবার গভীর রাতে সোশাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। যদিও এরপরেও আন্দোলন থামেনি। দুর্নীতির অভযোগ এনে ওলি সরকারকে মসনদ থেকে সরানোর ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এদিন সকালে পুলিশ-সেনার ঘেরাটোপ উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে জনতা। জানা গিয়েছে, সেখান বিক্ষোভকারীদের রুখতে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তারক্ষীরা। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দু’জন। কোণঠাসা প্রধানমন্ত্রী ওলি সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন।
Inside president private residence
— Out of Context Nepal (@NoContextNepol)
গতকালই ইস্তাফা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। মঙ্গলবার তাঁর বাসভনে আগুন লাগিয়ে দেয় একদল জনতা। এছাড়াও বিভিন্ন শহরে একাধিক প্রশাসনিক ভবনে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। যেমন, কির্তিপুর পৌরসভায় ভাঙচুরের পর আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। নেপাল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবার বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জনতার রোষাণল থেকে বাদ যায়নি নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনও। সেখানেও ইট-পাথর ছোড়ার পর বাড়ির একাংশে আগুন লাগায় একদল বিদ্রোহী। উপ-প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতেও পাথর ছোড়ে উন্মত্ত জনতা। এরপরেই তিনি ইস্তাফা দেন বলে জানা গিয়েছে। শেষ খবরে জানা গিয়েছে, নেপালের প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। সেখানেও চলছে ভাঙচুর, আগুন লাগানো। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ২০২২-এর শ্রীলঙ্কা এবং ২০২৪ সালের বাংলাদেশের মতো।
| Nepal: People in Kathmandu stage a massive protest against the government over alleged corruption and the recent ban on social media platforms, including Facebook, Instagram, WhatsApp and others.
At least 18 people have died and more than 250 people have been injured…
— ANI (@ANI)
এদিকে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে নেপালে থাকা ভারতীয়দের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। নেপালে থাকা ভারতীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের নিয়মাবলি মেনে চলতে বলা হয়েছে ভারতীয়দের। বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘গতকাল থেকে নেপালে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এবং ঘটনাক্রম যেদিকে এগোচ্ছে, সেদিকে আমরা নজর রাখছি। এতগুলি তরুণ প্রাণ হারিয়ে যাওয়ায় আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা করি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.