সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্বাসরোধ করে খুনের পর অন্তঃসত্ত্বার গর্ভ থেকে বের করা হল শিশুকে। পাশবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার শিকাগো শহরের পশ্চিম দিকে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ দুই মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম ক্ল্যারিসা ফিগুয়েরা(৪৬) ও ডেসিরি(২৪)। সম্পর্কে তারা মা ও মেয়ে। তবে কী কারণে এই ধরনের নারকীয় কাজ তারা করল তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। বর্তমানে শিশুটিকে শিকাগোর একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তার অবস্থায় গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ডেসিরি-র প্রেমিককেও জেরা করছেন তদন্তকারীরা।
এপ্রিলের ২৩ তারিখ শেষবার যখন মারলেন ওকোয়া লোপেজকে দেখা গিয়েছিল, তখন তিনি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শিকাগোর অল্টারনেটিভ হাই স্কুল থেকে দুপুর তিনটে নাগাদ নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন ১৯ বছরের এই যুবতী। কিন্তু, দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। ইতিমধ্যে ডে কেয়ার সেন্টার থেকে তিন বছরের ছেলেকে তিনি যে নিতে যাননি তাও ফোন করে জানানো হয়। আরও জানা যায়, ওইদিন তাঁর
ফোন থেকে স্বামী ইয়োভানি লোপেজের ফোনে একটি মেসেজ গিয়েছিল। তাতে লেখা ছিল, তিনি খুব ক্লান্ত। তাই আর গাড়ি চালাতে পারছেন না। ব্যস এরপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। যেন বেমালুম উধাও হয়ে যান মারলেন।
এরপর কেটে যায় একমাস। ক্রমশ এগিয়ে আসে মারলেন-এর সন্তান প্রসবের সময়ও। কিন্তু, কোনও সন্ধান না মেলায় খারাপ কিছু হয়েছে বলে দুঃশ্চিন্তা করতে থাকেন মারলেন-এর মা রাকুয়েল। মেয়ের খারাপ পরিণতির আশঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে পরিবারের। তাই মারলেনকে ফিরে পাওয়ার যাবতীয় চেষ্টা করতে থাকে তারা। এর মধ্যেই গত বুধবার মারলেন-এর বাড়ির সামনে আবর্জনা ভরতি একটি ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হয় একটি মহিলার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্যে আরও চিন্তিত হয়ে পড়েন ওই যুবতীর আত্মীয়রা। কারণ, পুলিশ জানায় ওই মৃতদেহের গর্ভ থেকে ছিঁড়ে বের করা হয়েছে সদ্যোজাতকে। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, মৃতদেহটি নিখোঁজ মারলেনের। দড়ির ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে জানান ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা। পাশাপাশি তারা আরও জানান, খুন করার পরেই মারলেন-এর গর্ভ থেকে শিশুটিকে কেটে বের করে নেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ক্ল্যারিসা ফিগুয়েরার কাছ থেকে বাচ্চাদের জিনিসপত্র কিনতেন মারলেন। সেই থেকেই দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যেদিন মারলেন নিখোঁজ হয়েছিলেন, সেদিন তাঁদের দু’জনের মধ্যে ফেসুবকে কথাও হয়েছিল। তারপর স্কুল থেকে বেরিয়ে ক্ল্যারিসার বাড়িতে কিছু জিনিসপত্র আনতে গিয়েছিলেন মারলেন। সেখানেই তাঁকে খুন করা হয়।
এই ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে পড়েছেন মারলেন-এর পরিবারের সদস্যরা। এপ্রসঙ্গে তাঁর মা রাকুয়েল বলেন, “সব থেকে সমস্যা হচ্ছে মারলেন-এর তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে। মাকে না দেখে কিছু খেতে চাইছে না সে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে বাড়িতে থাকা মারলেন-এর সব ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাও বাচ্চাটাকে সামলানো যাচ্ছে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.