সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাড়ে তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করলেও ফলাফল শূন্য। এই অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মিলে কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে বড়সড় ষড়যন্ত্র করছেন ট্রাম্প? শান্তি আলোচনার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশে। যেখানে পুতিনের বিরুদ্ধে জারি রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। যার জেরেই জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে, তবে কী ইউরোপে ডেকে পুতিনকে গ্রেপ্তারের ছক করছেন ট্রাম্প?
গত ১৬ অক্টোবর পুতিনকে ফোন করে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই সোশাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, এই হতাশাজনক যুদ্ধ শেষ করতে শীঘ্রই হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে সাক্ষাৎ হতে চলেছে। এদিকে ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে ট্রাম্পই বুদাপেস্টের প্রস্তাব দেন পুতিনকে। সে প্রস্তাব আপাতত মেনে নেওয়া হয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর বিবৃতি দেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর আর্বন। তিনি বলেন, “শান্তিপ্রেমীদের জন্য অসাধারণ খবর। বুদাপেস্ট হল ইউরোপের একমাত্র স্থান যেখানে এই বৈঠক হতে পারে।”
এতদূর পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক হলেও এই বৈঠক নিয়ে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক আদালত (ICC) পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইউক্রেনের হাজার হাজার বাচ্চাকে অপহরণ করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। আইসিসির ১২৫টি সদস্য দেশের উপর এই গ্রেপ্তারির দায়িত্ব রয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে হাঙ্গেরিও। যদিও এই সদস্য তালিকা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে প্রস্তুত হয়েছে হাঙ্গেরি। যদিও সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ২০২৬ সালের জুনে। রিপোর্ট বলছে, তার মধ্যে পুতিন হাঙ্গেরিতে এলে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য থাকবে দেশটি। যদিও হাঙ্গেরির বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমরা পুতিনকে সম্মানের সঙ্গে অভ্যর্থনা জানাব। এবং তাঁর সমস্তরকম নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।” তবে জার্মানি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, “হাঙ্গেরির উচিত আইসিসির নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করা।” উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে নেতানিয়াহুকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল দেশটি। তখন তাঁর বিরুদ্ধেও আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।
তবে সমস্যা শুধু এখানেই নয়, বুদাপেস্ট যেতে গেলেও যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হতে পারে পুতিনকে। রাশিয়া থেকে হাঙ্গেরি যাত্রায় পুতিনকে পোল্যান্ড, রোমানিয়া বা স্লোভাকিয়ার মতো আইসিসির সদস্য দেশগুলির উপর থেকে যেতে হবে। সেখানেও তাঁর গ্রেপ্তারির সম্ভাবনা রয়েছে। পুতিন যদি বিকল্প রাস্তা ধরেন সেক্ষেত্রে সার্বিয়া বা ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে যা আরও বিপজ্জনক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আধিকারিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, শান্তির জন্য এই ছাড় পুতিনকে দেওয়া হতে পারে। তবে জার্মানি-সহ একাধিক দেশ এর বিরোধিতায় সরব হয়েছে।
এই ঘটনায় নানা মহলে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, “পুরোটাই ট্রাম্পের ষড়যন্ত্র। ট্রাম্পই পুতিনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে নিয়ে এসে আইসিসিকে পদক্ষেপ করতে বাধ্য করছে। যদি হাঙ্গেরি পুতিনকে গ্রেপ্তারে রাজি না হয় সেক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশ তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠবে।” সোশাল মিডিয়াতেও শুরু হয়েছে চর্চা। কেউ বলছেন, এটা শান্তির রাজনীতি নয়, পুতিনকে ফাঁসানোর জাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.