সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ত্রের লড়াইয়ে এঁটে উঠতে না পেরে ইজরায়েলের উপর চাপ বাড়াতে ‘মাইন্ড গেম’ শুরু হামাসের। ৭ অক্টোবরের ঘটনায় পণবন্দি ৪৭ জনের ছবি প্রকাশ করল প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এই ছবিকে ‘ফেয়ারওয়েল ইমেজ’ বা ‘বিদায়ী ছবি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে হামাসের তরফে। যার অর্থ শীঘ্রই মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হবে পণবন্দিদের। ছবি প্রকাশ্যে আসার পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে ইজরায়েলে। বন্দিদের পরিজনের তরফে দাবি তোলা হয়েছে, অবিলম্বে তাঁদের মুক্ত করার ও প্যালেস্টাইনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করার।
সম্প্রতি হামাসের তরফে যে ৪৭ জনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তার প্রতিটি ছবির নিচে লেখা রয়েছে একটিই নাম, রন অরাদ। এই নাম ইজরায়েলের কাছে কাছে একটি বিভীষিকা। কূটনৈতিক ব্যর্থতার নজির। অরাদ ছিলেন ইজরায়েলি বায়ুসেনার একজন ক্যাপ্টেন। ১৯৮৬ সালের ১৬ অক্টোবর আমাল আন্দোলনের সময় লেবাননে একটি মিশনে গিয়ে শত্রু হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর বিমান। অরাদ বেঁচে গেলেও বন্দি করা হয় তাঁকে। আমাল প্রধান নাবিহ বেরি ঘোষণা করেন অরাদ তাদের হাতে বন্দি। পরে তাঁকে হেজবোল্লার হাতে তুলে দেওয়া হয়। ইজরায়েল শিয়া ও লেবানিজ বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে অরাদকে ফেরানোর চেষ্টা করে। তবে মোসাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১৯৮৭ সালে, অরাদের হাতে লেখা তিনটি চিঠি এবং দাড়িওয়ালা অরাদের দুটি ছবি পাওয়া যায়, যা প্রমাণ করে যে তিনি জীবিত ছিলেন। তবে তাঁর কোনও খোঁজ আজ মেলেনি। পণবন্দিদের ছবির নিচে সেই রন অরাদের নাম আসলে হামাসের বার্তা, এদেরও পরিণতি হতে ওই পাইলটের মতোই।
হামাসের একটি শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড কর্তৃক প্রকাশিত এই ছবির সঙ্গে একটি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সমস্ত পণবন্দিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। হামাসের ভাষায়, ‘নেতানিয়াহুর জেদ এবং তার সেনাপ্রধানের যেভাবে গাজা অভিযান শুরু হরেছেন তার প্রেক্ষিতেই পণবন্দিদের এই বিদায়ী ছবি।’ উল্লেখ্য, হামাসের এই বিবৃতি এমন সময়ে সামনে আনা হয়েছে যখন গাজায় চূড়ান্ত সামরিক অভিযান শুরু করেছে নেতানিয়াহু। লক্ষ লক্ষ মানুষ গাজা ছেড়ে পালাচ্ছেন। মৃত্যুর সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এদিকে এই ছবি প্রকাশের পর, ইজরায়েলি বন্দিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁদের পরিবার। তাঁদের মুক্তির জন্য হাজার হাজার ইজরায়েলি সরকারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে। শহরে শুরু হয়েছে মিছিল ও আন্দোলন। স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন করে অবিলম্বে পণবন্দিদের মুক্ত করতে হবে নেতানিয়াহু সরকারকে। সব মিলিয়ে ঘরে বাইরে প্রবল চাপের মুখে নেতানিয়াহু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.