সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন গড়িমা পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই কড়া অভিবাসী নীতি নিয়েছেন তিনি। ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, আমেরিকায় ভূমিপুত্ররাই অগ্রাধিকার পাবেন। সেই পদক্ষেপে তাঁর সাম্প্রতিক বাণ এইচ-১বি ভিসা। এই বিষয়ে শুক্রবার নতুন নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর জেরে এবার থেকে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগে মার্কিন সংস্থাগুলিকে বছরে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) করে দিতে হবে ট্রাম্প সরকারকে। অর্থাৎ, ব্যক্তিগত স্তরে কোনও ভারতীয়কে আমেরিকায় কাজ করতে হলে বছরে ৮৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে মার্কিন সরকারকে এমনটা নয়। তবে ঘুরিয়ে প্রভাব পড়বে ব্যক্তিগত স্তরেই। কীভাবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট করে কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের এইচ-১বি ভিসা নীতির ফলে ভারতীয়রাই বেশি করে সমস্যায় পড়বেন। আমেরিকায় এইচ-১বি ভিসার সবচেয়ে বেশি আবেদনকারী এবং সুবিধাভোগী ভারতীরা (গত বছর ভারত থেকে ৭১ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে)। যারা বিভিন্ন মার্কিন সংস্থায় উচ্চ পদে কর্মরত। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এবার থেকে কোনও ভারতীয় কিংবা অন্য বিদেশি কর্মীকে নিয়োগ করতে হলে সরকারকে (ভিসার মূল্য হিসাবে) বছরে ৮৮ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। এত বড় অঙ্ক সরকার পক্ষকে দিয়ে, কর্মীকেও বিপুল বেতন দেওয়া কী সম্ভব? মনে হয় না। অর্থাৎ, শেষ পর্যন্ত দক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগ নীতি বদলাতে বাধ্য হবে মার্কিন কোম্পানিগুলি। প্রশ্ন হল, ট্রাম্প হঠাৎ ভিসাবোমা ছুড়লেন কেন?
এক্ষেত্রেও বিদেশি হঠাও নীতিই কারণ। মনে রাখতে হবে, ১৯৯০ সালে আমেরিকায় এইচ-১বি ভিসা চালু হয়েছিল। ন্যূনতম স্নাতক স্তরের ডিগ্রি থাকলে এই ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। তা বৃদ্ধিও করা যায়। এই ভিসায় আমেরিকায় থেকে, পেশাদার হিসাবে কাজ করতে করতে আমেরিকার গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন কর্মীরা। গ্রিন কার্ড বা স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে এইচ-১বি ভিসার মেয়াদ ইচ্ছামতো বাড়ানো যায়। আসলে এই ভিসার অধীনে বিদেশ থেকে যাঁরা আমেরিকায় কাজ করতে যান, মার্কিন কর্মীদের সমান বেতনই তাঁরা পেয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিষয়েই আপত্তি রয়েছে ট্রাম্পের। মেধায় সমান হলেও মার্কিন সংস্থাগুলি থেকে ভারতীয়-সহ সমস্ত বিদেশিদের তাড়ানোই উদ্দেশ্য ধনকুবের মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে অ্যামাজন এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলি ১২ হাজার এইচ-১বি ভিসার আবেদন মঞ্জুর করেছে। মাইক্রোসফ্ট, মেটার মতো সংস্থা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে পাঁচ হাজার করে আবেদনে। এখানেই আপত্তি ট্রাম্পের। এই ধারাকে পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর বর্তমান মার্কিন সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.