সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ২০২১ সালে আফগানিস্তান ছেড়েছিল মার্কিন সেনা। তবে মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে ফের কাবুলিওলার দেশের দখল চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নজরে রেখে আমেরিকার দাবি আফগানিস্তানের বগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটি আমেরিকার হাতে তুলে দিক তালিবান। যদিও আফগানিস্তানের মাটিতে ফের মার্কিন সেনার পদধ্বনি শুনতে চায় না তালিবান। আমেরিকার দাবি স্পষ্ট ভাষায় খারিজ করে দিয়েছে তারা।
গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে চান আফগানিস্তানের বাগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটি ফেরত পেতে। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, চিনের আধিপত্য রুখতে কূটনৈতিক দিক কূটনৈতিক দিক থেকে এই ঘাঁটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তালিবানকে বিনামূল্যে এই বিমানঘাঁটি বিলিয়ে এসেছি। আফগানিস্তানে ফেলে আসা প্রতিটি জিনিস আবার আমাদের বুঝে নেওয়া উচিত। ট্রাম্প আরও জানান, এই বায়ুসেনা ঘাঁটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি এর রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৩৬০০ মিটার। কার্গো বিমান থেকে সমস্ত বোমারু বিমান এখানে অবতরণ করতে পারে। পাশাপাশি এমন জায়গায় অবস্থিত যেখান থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে চিন পরমাণু মিসাইল তৈরি করে। অর্থাৎ চিন-সহ পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে নজরে রাখতেই সামরিক দিক থেকে আমেরিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই ঘাঁটি। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলে মার্কিন সেনা ঘাঁটি গাড়লে প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার উপরেও নজর রাখা সহজ হবে।
তবে আমেরিকার হাতে গুরুত্বপূর্ণ এই সেনাঘাঁটি তুলে দিতে একেবারেই নারাজ তালিবান। আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জাকির জালাল সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, আমেরিকার উচিত আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলা। কিন্তু তার অর্থ এটা নয় যে আফগানিস্তানে ফের আমেরিকার সেনা আসবে। এখানে মার্কিন সেনার কোনও জায়গা নেই। আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রাখতে চাই। তবে সেটা একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমেই সম্ভব।
উল্লেখ্য, কাবুলের উত্তরে অবস্থিত এই বাগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটি। রাশিয়া আফগানিস্তানে পা রেখেছিল এই জায়গা থেকেই। পরে কয়েক দশকে আমেরিকার অন্যতম প্রধান সেনাঘাঁটি হয়ে ওঠে এই অঞ্চল। এখানেই রয়েছে এক কুখ্যাত জেল। যেখানে হাজার হাজার মানুষকে বীণা অভিযোগে বন্দি রাখা হয়েছিল আমেরিকার তরফে। ২০২১ সালে আফগানিস্তান ত্যাগের সময় এই জায়গাও তালিবানের হাতে সমর্পণ করে আমেরিকা। তবে বাইডেন প্রশাসনের আমলে এই সেনা প্রত্যাহারের প্রবল বিরোধী ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন এই ঘাঁটি বর্তমানে চিন নিয়ন্ত্রণ করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.