সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক সংঘাতের মাঝেই এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে চিন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই মোদিকে স্বাগত জানিয়ে ভারতের দিকে বন্ধুত্বের হাত বড়াল বেজিং। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও একতার বার্তা দেওয়া হল চিনের তরফে। তবে দীর্ঘ দশক ধরে ভারতের শত্রু তালিকায় থাকা চিনের সঙ্গে ভারতের এই ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে সন্ধিহান কূটনৈতিক মহল।
চিনের তিয়ানজিনে আয়োজিত এই এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে আগামী ৩১ আগস্ট চিনে যাবেন মোদি। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে থাকবেন। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘাতের পর এটাই হতে চলেছে মোদির প্রথম চিন সফর। পাশাপাশি সম্প্রতি ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার বিরোধিতা করে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। এই অবস্থায় মোদির সফরের দিকে বাড়তি নজর গোটা বিশ্বের। এই সফর প্রসঙ্গে মোদিকে অভ্যর্থনা জানিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেন, ‘এসসিও তিয়ানজিন শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিন স্বাগত জানায়। আমরা বিশ্বাস করি সকল পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় এই সম্মেলন ঐক্য, বন্ধুত্ব এবং সুনির্দিষ্ট ফলাফলের প্রতীক হয়ে উঠবে। এসসিও এক নতুন শিখর ছুঁতে চলেছে, যেখানে সদস্য দেশগুলি আগের চেয়ে আরও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে এবং যার আরও ভালো ফলাফল সামনে আসবে।’
উল্লেখ্য, মার্কিন আগ্রাসনকে পাল্লা দিতে ভারত ও চিনকে একজোট হওয়ার বার্তা একাধিকবার এসেছে বেজিংয়ের তরফে। হাতে হাত মিলিয়ে বিশ্বকে হাতি ও ড্রাগনের নাচ দেখানোর বার্তা দিয়েছিল চিন। যদিও সে বিষয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য করেনি ভারত। সম্প্রতি ভারতের উপর আমেরিকা ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং ট্রাম্পকে ‘মস্তান’ বলে তোপ দাগেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘মস্তানকে এক ইঞ্চি জায়গা দিলে মাইলকে মাইল দখল করে নেবে।’ সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, ‘শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে অন্য দেশগুলিকে অবদমন করতে চাইলে তা রাষ্ট্রসংঘের বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী হবে। এটা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।’ এই অবস্থায় মোদির এই সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য এসসিও সম্মেলন হলেও এর নেপথ্যে অন্য অঙ্ক রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে চিন ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধিতা ও মোদিকে স্বাগত জানালেও। চিনের গতিবিধি একেবারেই সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ববাণিজ্যে চিনের ক্রমশ আধিপত্য বিস্তার আমেরিকার কাছে সিঁদুরে মেঘ। দুই দেশের মধ্যে ঠোকাঠুকি লেগেই রয়েছে। এর আগে চিনের উপর নেমে এসেছিল মার্কিন শুল্কবাণ। পরে যদিও তা স্থগিত করা হয়। এই অবস্থায় ভারতের সঙ্গে চলা দ্বন্দ্ব দূরে সরিয়ে আমেরিকাকে টক্কর দিতে নয়াদিল্লিকে পাশে চায় বেজিং। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেই লক্ষ্যেই আপাতভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক বিরোধ দূরে সরিয়ে রাখতে আগ্রহী বেজিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.