Advertisement
Advertisement
ক্যারাটেতে পদকজয়ী

দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে সাফল্য, এশিয়া কাপ ক্যারাটেতে পদকজয়ী ক্যানিংয়ের চম্পা

ক্যানিংয়ে দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ এলাকাবাসী।

Bengal girl wins bronze in full contact karate tournament
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:January 30, 2020 6:25 pm
  • Updated:January 30, 2020 6:25 pm   

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: আন্তর্জাতিক ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় অনন্য নজির গড়ল ক্যানিংয়ের হতদরিদ্র পরিবারের এক মেয়ে। ক্যানিং দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী চম্পা নাইয়া। তার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পরিবার ও এলাকাবাসী।

Advertisement

এবছরের ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম এশিয়া কাপ ওপেন ইন্টারন্যাশনাল ফুল কন্ট্রাক্ট ক্যারাটে টুর্নামেন্ট (ACOIFCKT), ২০২০। এশিয়ার ১০টি দেশ ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে চম্পা নাইয়া ৫০-৫৫ কেজি বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এর আগেও সে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে সাফল্য অর্জন করেছে।

[আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিয়েই কটাক্ষের শিকার সাইনা নেহওয়াল, খোঁচা সতীর্থেরও ]

 

ক্যানিংয়ের উত্তর নিকারীঘাটা গ্রামের বাসিন্দা তপন নাইয়ার ছোট মেয়ে হল চম্পা। তারা পাঁচ বোন, এক ভাই। বাবা পেশায় সামান্য একজন রাজমিস্ত্রি। আর মা লক্ষ্মী নাইয়া অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। অভাবের সংসারে চম্পার পড়াশোনা,ক্যারাটে ও কোচিংয়ের খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য তার পরিবারের নেই। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সে সপ্তাহে দুদিন বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার হেঁটে ক্যানিং স্টেশন পৌঁছাত। তারপর সেখান থেকে ট্রেনে করে গড়িয়ায় ক্যারাটে কোচিংয়ে যেত। এই অভাবের কথা জেনে তাকে সহযোগিতা করতে এবং তার পড়াশোনার খরচ বহন করতে এগিয়ে আসে ক্যানিংয়ের যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা। সব কথা শোনার পর কোচিংয়ের জন্য কোনও টাকা নিতেন না তার ক্যারাটে কোচ ফিরোজ আলি সাঁফুইও। এবার আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় সুযোগ পাওয়ার পর নেপালের কাঠমান্ডুতে যাওয়ার মতো টাকাও ছিল না চম্পার কাছে। বিষয়টি জানতে পেরে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন মাতলা ১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হরেন ঘোড়ুই ও উত্তম দাস। তারপরই কাঠমান্ডু পৌঁছানো সম্ভব হয় চম্পার পক্ষে।

[আরও পড়ুন: কোর্ট থেকে রাজনীতির ময়দানে, বিজেপিতে যোগ দিলেন সাইনা নেহওয়াল ]

 

এপ্রসঙ্গে চম্পা বলে, ‘আমার মতো গ্রাম বাংলার গরিব ঘরের মেয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। এই কাজে আমাকে উৎসাহ দিয়েছে যুক্তিবাদী সংস্থা। আমার কোচ ফিরোজ আলি সাঁফুই এবং উত্তম কাকু,হরেন কাকুদের সহযোগিতা না পেলে আমি আজ এই জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম না।’  চম্পার বাবা তপন নাইয়া বলেন, ‘আমি গরিব রাজমিস্ত্রি। মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করার সামর্থ্য আমার নেই। বহু গুণী মানুষের সহযোগিতায় ও আজ ওই জায়গায় পৌঁছেছে। তাই আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’

কোচ ফিরোজ আলি সাঁফুই বলেন, ‘ও অনেক প্রতিভাবান মেয়ে। ওর অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং কঠোর পরিশ্রম ওকে এই জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। স্থানীয় দুই প্রধান উত্তম দাস ও হরেন ঘোড়ুই বলেন, ওর কষ্টের কথা জেনে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই। ও আমাদের গর্ব। আগামিদিনে আরও বড় জায়গায় যাক সেটাই আমরা চাই। এর জন্য সবরকম সহযোগিতা করব।’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ