Advertisement
Advertisement
CFL Derby

‘সব খেলার সেরা…’, পিতৃশোক সঙ্গে নিয়ে সোজা মাঠে, ডার্বি দেখতে হাজির বিরল রোগে আক্রান্ত যুবকও

মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দ্বৈরথে শেষ পর্যন্ত জিতে যায় ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা।

Arun Halder and Vikram Ghatak came to see CFL Derby despite their personal problem
Published by: Arpan Das
  • Posted:July 26, 2025 5:10 pm
  • Updated:July 26, 2025 5:10 pm  

প্রসূন বিশ্বাস: কল্যাণীতে বহুপ্রতীক্ষিত ডার্বি। আবেগের, ভালোবাসার, লড়াইয়ের বড় ম্যাচ। সবুজ-মেরুন আর লাল-হলুদ জার্সি পরে মাঠে নামবেন ফুটবলাররা। আর মাঠের বাইরে তাঁদের জন্য প্রার্থনা, আনন্দ, বিষাদের স্রোত। কারা থাকেন সেই স্রোতে? আমার-আপনার মতো সাধারণ ফুটবল পাগল মানুষ। সাধারণ নাকি অসাধারণ? ফুলিয়ার অরুণ হালদার বা কল্যাণীর বিক্রম ঘটকরা প্রতি মুহূর্তে প্রমাণ করে দেন, ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল’।

Advertisement

এই প্রথমবার কল্যাণীতে ডার্বির আয়োজন। কলকাতা থেকে বেশ কিছুটা দূরে। দর্শকসংখ্যাও বেশি নয়। ফলে অসন্তোষও আছে। কিন্তু সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজি নন নদিয়া জেলার ফুটবলভক্তরা। বাবাকে হারানোর শোক সঙ্গে নিয়েই ফুলিয়া থেকে কল্যাণী স্টেডিয়ামে উপস্থিত অরুণ হালদার। অন্ধ ইস্টবেঙ্গল ভক্ত। গত বৃহস্পতিবার বাবাকে হারিয়েছেন। পরনে সাদা থান, মুখে কাঁচাপাকা গোঁফদাড়ি। কপালে লাল-হলুদ ফেট্টি বাঁধা। তিনি বলছিলেন, “আমি বহুবার ডার্বি দেখেছি। এবার তো কল্যাণীতে প্রথম ডার্বি। এখানে কলকাতা লিগ, আই লিগের ম্যাচ হয়েছে। কিন্তু ডার্বি এই প্রথম। নদিয়া জেলায় ডার্বির জন্য আমি গর্বিত। তাই এই ম্যাচের সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলাম। মাকে যতটা শ্রদ্ধা করি, ইস্টবেঙ্গলকেও ততটাই শ্রদ্ধা করি। বাবাও নিয়মিত খেলা দেখতেন। তাই এই ম্যাচটা দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি।”

আছেন কল্যাণীর বিক্রম ঘটকও। ২৭ বছর বয়সি মোহনবাগান ভক্ত স্নায়ুর বিরল রোগে আক্রান্ত। দুটি পা সক্রিয় নয়, হুইল চেয়ারই ভরসা। কথা বলতেও সমস্যা হয়। কিন্তু ভালোবাসার কাছে বোধহয় ভাষা কোনও বাধা নয়। বাবা বিক্রম ঘটকের সঙ্গে তিনি উপস্থিত কল্যাণী স্টেডিয়ামে। পরনে সবুজ-মেরুন জার্সি, হাতে একটা বড় ব্যানার। যাতে লিগ-শিল্ড জয়ী মোহনবাগানের ফুটবলাররা। সঙ্গে লেখা, ‘ভরা থাকা স্মৃতি সুধায়’। কথা বলতে সমস্যা হলেও মোহনবাগানের জন্য জয়ধ্বনি দিতে ভুললেন না বিক্রম। তাঁর বিশ্বাস, না, বিশ্বাস নয়, আত্মবিশ্বাস মোহনবাগান কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হবেই। ডার্বিজয় দিয়ে সেই পথচলার সূচনা হবে।

মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দ্বন্দ্ব তো চলবেই। কিন্তু মাঠের বাইরে এঁদের জন্যই বেঁচে থাকে ফুটবলের প্রতি বাঙালির ভালোবাসা। সেখানে জয়ী হয় ফুটবল। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement