ঋত্বিক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্যারিস: কুড়ি বছর লাগল আবার সেই রাতে ফিরে যেতে! আইফেল টাওয়ারের নিচে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে তখন এটাও ছিল আলোচনার বিষয়।
জিনেদিন জিদানের হাত ধরে ’৯৮-এ প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স। থুরাম-অঁরিদের নিয়ে মাতোয়ারা হয়েছিল সেদিনের প্যারিস। সেদিন কাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বর্তমান কোচ দেশঁ। ভিড়ের মধ্যে থেকে এক তরুণ চিৎকার করে বলে উঠলেন, “দারুণ লাগছে। আমরা খুব খুশি। কুড়ি বছর লেগে গেল আর একটা কাপ জিততে। এই বিশ্বকাপই আমাদের এক ছাতার নিচে নিয়ে এল।” চ্যাম্পস-এলিসিস অ্যাভিনিউ ধরে তখন হাজার হাজার মানুষের জনস্রোত এগোচ্ছে। সেই দলে শামিল হয়েছিল ফ্রান্সে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালিরাও। একটু আগেই শেষ বাঁশি বেজেছে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। প্যারিসের ভিড়ে প্রায় সবার গায়েই ফ্রান্সের জার্সি। তাতে অনেকেরই পিঠে আবার দশ নম্বর লেখা। কারণটা খুব সহজ। এই বিশ্বকাপের ফরাসি নায়ক কিলিয়ান এমবাপেও দশ নম্বর পরেই খেলেন। ১৯ বছরের তরুণ এখন ফরাসিদের কাছে স্বপ্নের নায়ক।
আগের ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠার পর বিক্ষিপ্ত হাঙ্গামায় অশান্তি জুড়েছিল প্যারিসে। ঠিক ততটা না হলেও রবিবারও ম্যাচের শেষে লুঠপাট-গন্ডগোল হয়েছে শহরে। তরুণদের একটা দল পানশালায় ঢুকে একগাদা পানীয়ের বোতল বের করে নিয়ে যান। বেশিরভাগটাই ছিল শ্যাম্পেন। যেটা ছাড়া উৎসব হয় না। গন্ডগোল ঠেকাতে গোটা শহর পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও গন্ডগোল এড়ানো যায়নি। ফলে পুলিশকেও টিয়ার গ্যাস ছুড়তে হয়েছে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে। তবে কোনও গ্রেপ্তারের খবর রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিন্তু কাপ জেতার দিনে এ আর এমন বড় ব্যাপার কী?
এক তরুণ দু’বছর আগে জঙ্গিহানার কথা টেনে এনে বললেন, “এখানে প্রচুর সমস্যা আছে। কিন্তু ফুটবলের সামনে আমরা সবাই এক।” ভিড়ের মধ্যে অনেকের হাতেই ছিল স্মোক বম্ব। যা ফাটলেই বেরিয়ে এল ফ্রান্সের তিনটি রং। নীল, সাদা আর লাল। ততক্ষণে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে হাজার হাজার গাড়ি। তার হর্নের আওয়াজে কান পাতা দায়। এটাও সেলিব্রেশনের অঙ্গ। রাস্তায় নাচছিল ফরাসিরা। সেই হুজুগে মেতে ফ্রান্সের জন্য গলা ফাটিয়ে নাচতে দেখলাম কয়েকজন বাঙালিকেও। কয়েকশো নিরাপত্তারক্ষী এসব সামলানোর জন্য রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। ফ্যান জোনেই চার হাজার পুলিশ ছিল। রাতে আবার আইফেল টাওয়ারের আলোয় ভেসে উঠল ১৯৯৮-২০১৮। অর্থাৎ, ফ্রান্সের কাপ জয়ের সময়টুকু। প্যারিস কেন, উৎসব পালিত হয়েছে গোটা দেশে। ফরাসিদের মুখে একটাই কথা – আমরা গর্বিত।
FRANCE celebrating their win in style.
— Victor Mochere (@VictorMochere)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.