Advertisement
Advertisement
Asia Cup

স্রেফ দু’টো টিকিটের জন্য জন্ম এশিয়া কাপের! একসঙ্গে লড়াইয়ে ভারত-পাক, রইল টুর্নামেন্টের জন্মকথা

এশিয়া কাপে আয়োজনের প্রধান কারিগর ছিলেন তৎকালীন বোর্ড প্রেসিডেন্ট এনকেপি সালভে।

This is the story of how Asia Cup started
Published by: Arpan Das
  • Posted:September 13, 2025 3:08 pm
  • Updated:September 13, 2025 4:46 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে কীভাবে দেখা উচিত? পহেলগাঁও জঙ্গিহামলার পর দুই দলের ম্যাচ নিয়ে অনেকেই অসন্তুষ্ট। ‘বয়কটে’র দাবিও উঠেছে বিভিন্ন মহলে। যেখানে পাকিস্তানকে পুরোপুরি ‘বয়কটে’র কথা হচ্ছে, সেখানে ক্রিকেট মাঠে কেন ‘বয়কট’ নয়? কিন্তু ১৯৮৪ সালে এই এশিয়া কাপ শুরুর লগ্নের ছবিটা অন্যরকম ছিল। তখন নতুন টুর্নামেন্ট শুরুর জন্য ভারত-পাকিস্তান, দু’দলই এগিয়ে এসেছিল। সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও ছিল। মূল উদ্যোক্তা ছিল অবশ্য ভারতই। আরও স্পষ্ট করে বললে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এনকেপি সালভে। আর এশিয়া কাপ শুরুর পুরো গল্পটার নেপথ্যে রয়েছে দুটো টিকিটের আবেদন!

Advertisement

১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডের মাটিতে তখনও ভারতের বিজয় পতাকা ওড়েনি। সদ্য ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে কপিল দেবের ভারত। কার্যত অসম্ভবের লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে একটা দেশ। সেই সময় সালভের কাছে ফাইনালে ভারতের ম্যাচের জন্য দুটি টিকিটের অনুরোধ আসে। বলা হয়, সেই অনুরোধটি এসেছিল পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের থেকে। সালভে দ্রুত টুর্নামেন্টের আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু মাত্র দুটো টিকিটও তাঁকে দেয়নি লর্ডস কর্তৃপক্ষ। কারণ, ইতিমধ্যেই নাকি সালভেকে দুটো টিকিট দেওয়া হয়েছিল। ফাইনালে স্টেডিয়ামের ওই জায়গা ফাঁকা ছিল, তবু বিসিসিআই’কে টিকিট দেওয়া হয়নি। স্পষ্টতই, এটা ছিল শক্তিপ্রদর্শন। আমাদের হাতে ক্ষমতা আছে, তাই যাকে ইচ্ছে তাকে টিকিট দেব। আর সেই ক্ষমতাটা পুঞ্জীভূত ছিল ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার হাতে। যাই হোক, সেবার বিশ্বকাপ জিতে ক্রিকেটমঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলে ভারত।

কিন্তু সালভে অপমান ভোলেননি। গোটা দেশ বিশ্বজয়ের আনন্দে ডুবে থাকলেও বোর্ড প্রেসিডেন্টের মনে ছিল অন্য চিন্তা। ১৯৮৭-এ ভারতে রিলায়েন্স কাপ আয়োজন ছিল সবচেয়ে বড় উত্তর। তবে শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে এশিয়া কাপের মাধ্যমে। তার আগের বছর লাহোরে একটি মিটিং আয়োজন করা হয়। যেখানে সালভের সঙ্গে হাত মেলালেন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা। শুরু হল এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পথচলা।

কিন্তু তাতেও কি শান্তি আছে? ইংল্যান্ড থেকে প্রায়ই খোঁচা আসত এশিয়ায় ৬০ ওভারের ম্যাচ করা অসম্ভব। তাই ঠিক হল, টুর্নামেন্ট হবে ৫০ ওভারের। এবার দ্বিতীয় সমস্যা, আর সম্ভবত সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেটা হল অর্থ। তাই দিল্লিতে আরও একটি মিটিংয়ের আয়োজন করা হল। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত শারজার শেখ বুখাতির। ক্রিকেট নিয়ে বুখাতিরের প্রবল আগ্রহ। অর্থেরও অভাব নেই। শারজা স্টেডিয়ামে প্রায়ই বেসরকারি ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করেন। এবার তাঁর কাছে সুযোগ এল ‘সরকারি’ তকমা পাওয়ার।

অবশেষে ১৯৮৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেই শুরু হয় এশিয়া কাপ। সেবার শুধু অংশগ্রহণ করেছিল ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। শারজা স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলো হয়েছিল। লিগ ফরম্যাটের টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সুনীল গাভাসকরের ভারত। রানার্স হয় শ্রীলঙ্কা। আসলে শারজায় যে খেলা হয়েছিল, তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল এশিয়া কাপ আয়োজনের ‘খেলা’। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার দর্পচূর্ণ করে ক্রিকেটবিশ্বে শক্তিশালী জায়গা দখল করে এশিয়া ও ভারত।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ