Advertisement
Advertisement
IPL 2025

ফাইনালে উঠে ‘অবাধ্য-লোভী’ শ্রেয়সের শাপমোচন! খেতাব জিতে ‘বঞ্চনা’র জবাব দেবেন সরপঞ্চ?

এবার অন্তত প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবেন অধিনায়ক শ্রেয়স?

Shreyas Iyer might shut critics after winning IPL 2025
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:June 2, 2025 4:58 pm
  • Updated:June 22, 2025 3:32 pm   

অণ্বেষা অধিকারী: এখনও তাঁর নাম শুনলেই ক্রিকেটমহল মনে করিয়ে দেয়, ও তো অবাধ্য। তিনি মাঠে নেমে ব্যাট করবেন, দলকে নেতৃত্ব দেবেন, খেতাব জেতাবেন-কিন্তু জয়ের যাবতীয় কৃতিত্ব নেবেন সর্বক্ষণ ডাগআউটে বসে থাকা ‘নিষ্ক্রিয়’ কেউ। তিনি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক, কিন্তু পরের মরশুমে নিজের প্রাপ্য অর্থ দাবি করতে পারবেন না। ১০ বছর পরে ট্রফি জেতানো অধিনায়ককে হেলায় ছেড়ে দেবে দল, স্রেফ টাকা বাঁচানোর জন্য।

Advertisement

গত এক বছরে ঠিক এতগুলো অপমান সহ্য করেছেন তিনি-শ্রেয়স আইয়ার। বোর্ডের নির্দেশ না মেনে রনজি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, যদিও তাঁর পিঠে চোট ছিল। ‘অবাধ্যতা’র কারণে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন। তারপর থেকেই অবাধ্য আর শ্রেয়স সমর্থক হয়ে ওঠে দেশের ক্রিকেটমহলে। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ১০ বছর পর আইপিএল জিতিয়েছিলেন, কিন্তু নাইটভক্তরা মাথায় তুলেছিল মেন্টর গৌতম গম্ভীরকে। আইপিএলের আগে রিটেনশনের সময়েও শ্রেয়সকে ধরে রাখতে ঝাঁপায়নি নাইট ম্যানেজমেন্ট। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ যেখানে ২৩ কোটি টাকা দিয়েও হেনরিখ ক্লাসেনকে রিটেন করেছে, সেখানে ১২.২৫ কোটির থেকে বেশি অর্থ দাবি করায় শ্রেয়সকে সটান বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে শাহরুখ খানের দল। আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিনদের মতো ‘বুড়ো ঘোড়া’দের ধরে রাখতে বেশি মনোযোগী ছিল নাইট ম্যানেজমেন্ট।

কথায় বলে, দুর্দিন কারোওর চিরকাল থাকে না। বছর ঘুরতে শ্রেয়সের ভাগ্যের চাকাও ঘুরেছে। আইপিএল নিলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দাম পেয়ে যোগ দিলেন পাঞ্জাব কিংসে। আবারও পেলেন নেতৃত্বের তাজ। জাতীয় দলে ফিরেই জিতলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ‘অবাধ্য’ শ্রেয়সই ছিলেন ভারতীয় দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও ফিরেছেন স্বমহিমায়। পাঞ্জাবে যোগ দিয়ে দলটার খোলনলচে বদলে দিয়েছেন। তথাকথিত তারকা ছাড়াই সাফল্য ছিনিয়ে নেওয়ার যে টেমপ্লেট কেকেআরে তৈরি করেছিলেন, সেই ফর্মুলাতেই ফুল ফুটিয়েছেন পাঞ্জাব ব্রিগেডে। নেতা-ব্যাটার দুই ভূমিকাতেই দাগ কেটেছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। মুম্বইকরের হাত ধরেই ১১ বছর পর প্লে অফ আর তারপর ফাইনালে উঠেছে পাঞ্জাব।

টেবিল টপার হলেও খেতাবি লড়াইয়ে পাঞ্জাবকে এগিয়ে রাখতে নারাজ ক্রিকেটমহল। কারণ পাঞ্জাবে তো বিরাট কোহলির মতো কোনও মহাতারকার নাম জ্বলজ্বল করে না। কিন্তু ধাক্কা খেয়ে ঘুরে দাঁড়াতে জানে পাঞ্জাব। মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে গিয়ে বিপক্ষকে একশোর কমে শেষ করে দিতে পারে। মরণবাঁচন ম্যাচে দু’শোর টার্গেট হাসতে হাসতে তাড়া করে দিতে পারে। আর পাঞ্জাবের অধিনায়ক বিশ্বাস করেন, একটা খারাপ ম্যাচ তাঁর দলের পরিচয় হতে পারে না। তাই গোটা দেশ যখন বিরাটের আইপিএল ট্রফি জেতার আশায় সময় গুণছে, শ্রেয়স আর তাঁর বাহিনী নিঃশব্দে প্রস্তুতি নিচ্ছে খেতাবি যুদ্ধে নামার। প্যাট কামিন্স যেভাবে জনপ্রিয় ভারতকে হারিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামকে, সেইভাবে বিরাটভক্তদের শব্দব্রহ্ম থামাতে পারবেন শ্রেয়স? গতবারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক চাপা পড়ে গিয়েছিলেন গম্ভীরের ছায়ায়। এবারের অধিনায়ক অন্তত নিজের জৌলুসে ভরিয়ে দিন আইপিএল ট্রফি-পোয়েটিক জাস্টিসের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ