সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সালটা ২০০০। নানা টানাপোড়েনের পর ভারতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে নাম উঠে এসেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। শক্ত হাতে দলের ভার নিয়েছিলেন তিনি। ১৯ বছর পর সেই স্মৃতিই যেন ফিরল তাঁর জীবনে। আচমকা খবরটা জানতে পারলেন তিনি। রবিবার রাতে মহানাটকীয়ভাবে সৌরভকে বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে বাছার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধিনায়কত্বের মতো প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব ভার সামলাতে প্রস্তুত দাদা।
সোমবারই প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল। এদিনই মুম্বইয়ে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। আগামী ২৩ অক্টোবর বোর্ডের কার্যভার গ্রহণ করবেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। দাদা বলছেন, “গত তিন বছর ধরে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে বোর্ড। এই মুহূর্তে বিসিসিআইয়ের ভাবমূর্তি ঠিক করার এটাই আমার কাছে সেরা সুযোগ।” এদিন সচিব পদের জন্য মনোনয়ন জমা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ছেলে জয় শাহ। কোষাধক্ষ্য পদে আসতে চলেছেন অনুরাগ ঠাকুরের ভাই অরুণ ধুমল। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে থাকবেন ব্রিজেশ প্যাটেল।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিজের কাছেও অকল্পনীয় ঠেকছে এই রূপান্তর। রবিবার দুপুরে দিল্লি থেকে যখন মুম্বইয়ে নামেন তখন জানতেন, সাম্রাজ্য প্রাপ্তি কয়েক ঘণ্টার মাত্র অপেক্ষা। রাতে আচম্বিতে আবিষ্কার করেন, তাঁকে প্রেসিডেন্ট বা সচিব, কিছুই করা হচ্ছে না। ব্রিজেশ প্যাটেল হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। অপমানিত, অসম্মানিত সৌরভ হোটেল লবিতে দাঁড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের জানিয়েও দেন তিনি কিছু হচ্ছেন না। এরপর চলে যান নিজের ঘরে। সেখানে আচমকা ফোন আসে জনৈক প্রভাবশালী বোর্ড কর্তার, ‘তোমাকেই আমরা প্রেসিডেন্ট করছি!’ সৌরভ ভাবতেই পারেননি এমন কিছু হতে পারে।
কীভাবে এমন অকল্পনীয় পরিবর্তন ঘটে গেল? ঠিক কার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল সে সময়? সৌরভ বলছেন, “আমি কাউকে কোনও ফোন করিনি। কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। বোর্ড সদস্যরা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাই আমায় জানানো হয়েছে। নিঃসন্দেহে খুব বড় দায়িত্ব। যেভাবে নেতৃত্ব সামলেছিলাম, সেভাবেই এবার প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করব।” প্রেসিডেন্ট পদে এসে প্রথমেই যে বিষয়গুলির দিকে আলোকপাত করতে চান সৌরভ, তা হল-
১. আইসিসির থেকে গত তিন বছরে ঠিকমতো অর্থ পাচ্ছে না বিসিসিআই। এভাবে তো চলতে পারে না। সে বিষয়টি ঠিক করতে হবে।
২. আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিসিসিআইয়ের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হবে।
৩. স্বার্থের সংঘাত নিয়ে ইদানীং নানা বিতর্ক ও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। একই ব্যক্তির একাধিক পদে থাকার বিষয়টির সমাধান প্রয়োজন। তা তিনি ব্যাটিং কোচ, বোলিং কোচই হোন কিংবা ধারাভাষ্যকর হিসেবে অথবা প্রশাসনিক পদে থাকুন- পুরো বিষয়টা বির্তকমুক্ত করতে হবে।
৪. জাতীয় দলে ভাল ক্রিকেটার পেতে হলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এবিষয়টিতেও কড়া নজর থাকবে দাদার।
Sourav Ganguly after filing his nomination for post of BCCI President, in Mumbai: To be in a position where I can make a difference along with team would be extremely satisfying. Hopefully in next few months we can put everything in place & bring back normalcy in Indian cricket.
— ANI (@ANI)
সৌরভ অবশ্য বলছেন, দলকে নেতৃত্ব দেওয়া ছিল বোর্ড সভাপতি হওয়ার থেকেও বেশি চ্যালেঞ্জিং। প্রায় ছ’বছর প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন সৌরভ। পাশে যাঁদের পাবেন, তাঁদেরও এই ক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞতা। তাই একসঙ্গে বোর্ড তথা ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতিসাধনে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছেন দাদা। ইতিমধ্যেই সৌরভকে নয়া পদের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইট করেন, “সর্বসম্মতিক্রমে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ায় সৌরভকে আন্তরিক অভিনন্দন। আগামিদিনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল। বাংলাকে তুমি গর্বিত করেছ। সিএবির প্রেসিডেন্ট হিসেবেও তুমি আমাদের গর্বিত করেছ। তোমার দুর্দান্ত ইনিংসের অপেক্ষায় রইলাম।” মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পেয়ে তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন দাদা। মঙ্গলবারই কলকাতায় ফিরবেন তিনি। নয়া চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত প্রিন্স অফ ক্যালকাটা। এবার শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।
Heartiest congratulations to for being unanimously elected President. Wish you all the best for your term. You have made India and proud. We were proud of your tenure as CAB President. Looking forward to a great new innings.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.