পাকিস্তান: ১২৭/৯ (সাহিবজাদা ৪০, কুলদীপ ১৮/৩, অক্ষর ১৮/২)
ভারত: ১৩১/৩ (সূর্যকুমার ৪৭, তিলক ৩১, সাইম ৩৫/৩)
ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যা হওয়ার ছিল তাই হল। ব্যস, এটুকু বলাই বোধহয় যথেষ্ট এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে। কী হল? ভারত জিতল। অনায়াসেই জিতল। কোনও রকম প্রতিরোধ ছাড়াই। বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, আর এখন এশিয়া কাপ, সব ‘অপারেশনে’ সফল ভারত। সূর্যকুমারদের সামনে ৭ উইকেটে হারল পাকিস্তান। ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করলেন ভারত অধিনায়ক। আর সেই সঙ্গে সুপার ফোরের টিকিটও হাতে চলে এল ভারতের।
দুবাইয়ে দুই দলের মোকাবিলা নিয়ে অন্য ধরনের আবেগ কাজ করেছে ভারতের মানুষের মনে। পহেলগাঁও জঙ্গিহানার পরবর্তী সময়ে কেন ক্রিকেট মাঠে পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ রাখা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সূর্যকুমাররা সম্ভবত পাকিস্তানকে নিয়ে একটা শব্দই ভেবেছিলেন, তা হল ‘প্রতিপক্ষ’। কোনও হাত মেলানো নয়, বাড়তি সৌজন্য নয়। ব্যাটে-বলেও সূর্য-কুলদীপরা কোনও সৌজন্য দেখায়নি। একটাই লক্ষ্য, পাকিস্তানকে হারাতেই হবে।
কাজটা শুরু করেছিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। রবিবারের ম্যাচে টস হারেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাক অধিনায়ক সলমন আলি আঘা। প্রথম ওভারেই হার্দিক পাণ্ডিয়ার বলে আউট হয়ে যান ওপেনার সাইম আয়ুব। দ্বিতীয় ওভারে জশপ্রীত বুমরাহর শিকার মহম্মদ হ্যারিস। তারপর অবশ্য কিছুটা সামলে নেয় পাক বাহিনী। কিন্তু পাওয়ার প্লের পরই যে কে সেই। ভারতীয় স্পিনারদের সামনে একের পর এক উইকেট খোয়ান সলমনরা। মাত্র ৩ রান করে ফেরেন পাক অধিনায়ক। হাসান নওয়াজ, মহম্মদ নওয়াজরাও মাত্র এক অঙ্কের রানে ফেরেন। একমাত্র রান পান সাহিবজাদা ফারহান (৪০)। ৩ উইকেট কুলদীপের। দুটি অক্ষর প্যাটেলের ও বরুণ চক্রবর্তীর একটি উইকেট। জশপ্রীত বুমরাহও দুই পাক ব্যাটারকে ফেরান। একসময় মনে হচ্ছিল একশোর আগেই গুটিয়ে যাবে পাকিস্তান। সেটা হল না নেহাত শাহিন আফ্রিদির ১৬ বলে ৩৩ রানের দৌলতে। পাকিস্তানের ইনিংস থেমে যায় ১২৭ রানে।
সেটা একেবারেই যথেষ্ট নয় ভারতকে আটকানোর জন্য। আর সেই ‘মুড’টা ঠিক করে দিলেন দুই বিধ্বংসী ওপেনার। অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিল, দুজনের চার-ছক্কায় বিধ্বস্ত হয়ে যায় পাক বোলাররা। তবে সাইম আয়ুবের ক্যারম বলে আচমকা স্টাম্প হয়ে যান গিল (১০)। কিন্তু তারপরও অভিষেকের তাণ্ডব চলে কিছুক্ষণ। বিশেষ করে ফর্মে ফেরার চেষ্টা করা শাহিন আফ্রিদিকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিলেন তিনি। ১৩ বলে ৩১ রান করেন অভিষেক। তিনিও সাইমের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর বেশি ঝুঁকি নেননি সূর্যকুমার-তিলক বর্মা। কিন্তু তা বলে চার-ছক্কা মারবেন না তা কী হয়? পাকিস্তানের স্পিন আক্রমণকে বুঝে নিয়েই আক্রমণের রাস্তা ধরেন তাঁরা। প্রয়োজনে স্ট্রাইকও রোটেট করতে থাকেন। আর সবই যখন হল, তখন পাকিস্তানকে ‘বিখ্যাত’ ফিল্ডিং দেখানোর সুযোগই বা কেন দেওয়া হবে না। তিলক বর্মা সোজা ক্যাচ তুলেছিলেন মহম্মদ নওয়াজের হাতে। কিন্তু পাক স্পিনার ‘ঐতিহ্য মেনেই’ ক্যাচ ছাড়েন। কিন্তু সাইমের বলে তারপরই বোল্ড হন তিলক (৩১)। তবে বাকি কাজটা দ্রুত শেষ করেন সূর্য। মাঝে একটি ৯০ মিটারের বিরাট ছক্কাও হাঁকান। ভারত অধিনায়ক ম্যাচটা জেতালেনও ছক্কা মেরে। সূর্য অপরাজিত থাকেন ৪৭ রানে। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ২৫ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।
এশিয়া কাপে এই ম্যাচের পর যেন একটা বিষয় ফের স্পষ্ট হয়ে উঠল। পহেলগাঁও হামলা, অপারেশন সিঁদুর, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে ভারতীয়দের ‘না’- ঘটেছে একের পর এক ঘটনা। এসব তো আছেই। কিন্তু বদলায়নি একটা জিনিস। সেটা হল, এশিয়া কাপের মঞ্চে ভারতের কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.