শুভজিৎ মণ্ডল: তাসের আমি, তাসের তুমি, তাস খেলে যায় চেনা। না, এমন কোনও প্রবাদের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু এরপর যদি বাঙলার ঘরে ঘরে এ প্রবাদ শোনা যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ তাস-পাশা আর সর্বনাশা নয়। বরং, বিশ্ববন্দিত খেলা। যে খেলা দিয়ে যে কোনও বয়সে বিশ্বের দরবারে নতুন করে পরিচিতি তৈরি করা যায়। তেমনটাই করে দেখালেন হাওড়ার সালকিয়ার শিবনাথ দে সরকার এবং খাস কলকাতার সন্তোষপুরের প্রণব বর্ধন।
একজন ষাটোর্ধ্ব, অপরজনের বয়স মধ্য পঞ্চাশের কোঠায়। কিন্তু একাগ্রতা আর নেশাকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা দুজনকে আজ এনে দিয়েছে এশিয়া সেরার শিরোপা। স্বাভাবিকভাবেই শিবনাথ-প্রণবের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তাদের পরিবার। প্রণববাবুর স্ত্রী বলছেন, “স্বামী যখন জানালেন এশিয়ান গেমসে পেয়ার-ব্রিজ অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে তখন খুশি হয়েছিলেন, কিন্তু আশংকাও ছিল। দিনে পাঁচ-ছ ঘণ্টা প্র্যাকটিসের পর যদি কোনও সাফল্য না আসে।” প্রণববাবুর মেয়ে অবশ্য শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তিনি জানাচ্ছেন, “যখনই জানলাম এশিয়ান গেমসে ব্রিজ অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে তখনই জানতাম বাবা কিছু একটা হবেই।” শিবনাথ বাবুর তাস খেলিয়ে সঙ্গীদের মধ্যে রীতিমতো সেলিব্রেশনের মুড। তাঁরা বলছেন, “বিশ্বাস ছিল শিবনাথ কিছু একটা করবে।” বয়সে তাঁর অনুজরা বলছেন, “এরপর আর তাস খেলার জন্য আর কেউ কথা শোনাতে পারবে না। আগামীদিনে শিবনাথদার হাত ধরে আরও অনেক ছাত্র এগিয়ে আসবে আন্তর্জাতিক মহলে।”
নেশার টানে তাস খেলা। তাস খেলার জন্য গিন্নির কাছে উঠতে বসতে মুখ শুনছেন, কিংবা বেকার জীবনে তাস পেটা নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে দু’বেলা খোটা শুনতে হচ্ছে। এরপর হয়তো এই তাসই আপনার কেরিয়ার গড়ে দিতে পারে। এশিয়াডের মতো মঞ্চ যখন তাস খেলাকে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে আপনি বা পিছিয়ে থাকবেন কেন। প্রণব-শিবনাথের পথে হেঁটে আপনিও সাফল্য পেতে পারেন। বলছেন, দুই সোনাজয়ীর আত্মীয় পরিজনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.