আফগানিস্তান: ২৫২/৮ (শেহজাদ-১২৪, নবি- ৬৪)
ভারত: ২৫২/৯ (রাহুল-৬০, রায়ডু-৫৭, কার্তিক- ৪৪, জাদেজা- ২৫)
ম্যাচ অমীমাংসিত
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কে ভেবেছিল, এমনটাও হতে পারে? কিন্তু ক্রিকেটের মজা তো সেখানেই লুকিয়ে। ভাবনাকেও ছাপিয়ে যায় বাস্তব। আর মঙ্গল-সন্ধেয় ঠিক সেটাই হল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ শেষ হল অমীমাংসিতভাবে।
চলতি এশিয়া কাপ থেকে ক্রিকেটের প্রাপ্তি কী? পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জোড়া জয়? সে তো আছেই। তবে প্রাপ্তির তালিকার শীর্ষে অবশ্যই থাকবে আফগানিস্তানের নাম। শুরুতে হোঁচট খেলেও ধীরে ধীরে কী দারুণভাবে টুর্নামেন্টে নিজেদের মেলে ধরলেন আফগানরা। ভাগ্য আর অতিজ্ঞতার অভাবে ফাইনালে পৌঁছনো হল না ঠিকই, তবে নিজেদের পারফরম্যান্স দিয়ে দর্শকের মন জয় করেই দুবাই ছাড়ছেন তাঁরা। ক্রিকেটের মানচিত্রে নবীন সংযোজন হয়েও চলতি টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশকে হারিয়েছে তাঁরা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও দারুণ লড়াই দিয়েছে। আর গোটা টুর্নামেন্টে যা অন্য দলগুলো পারেনি, সেটাই করে দেখালেন রশিদরা। ভারতকে রুখে দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিলেন তাঁরা।
পাক্কা ৬৯৬ দিন পর নেতার তকমা গায়ে চাপিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ক্যাপ্টেন কুল। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে তাঁর ২০০তম ম্যাচটা বিশেষ সুখকর হল না ভারতের জন্য। ফাইনালের টিকিট একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল রোহিতদের। তাই প্রথম দলের পাঁচ ক্রিকেটারই ছিলেন বিশ্রামে। আর বাকিদের জন্য আফগানিস্তানের
বিরুদ্ধে ম্যাচটা ছিল নেহাতই নেট প্র্যাকটিস। এমন পরিস্থিতিতেও আচমকাই ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ে। সৌজন্যে ‘অধিনায়ক’ মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিন্তু মাহিকে এদিন মাত্র ৮ রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হল। তবে রিভিউ ব্যবহার করলে সিদ্ধান্ত বদলে যেতেও পারত। ড্রেসিংরুমের দিকে যাওয়ার সময় ধোনিও যেন হাত কামড়াচ্ছিলেন। কে এল রাহুলের রিভিউ নষ্টটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। কার্তিকের আউট নিয়েও সংশয় রয়ে গেল।
তবে এমন ফল কি প্রত্যাশিত ছিল? যে টিম ইন্ডিয়া পাকিস্তানকে একপেশে খেলে হারিয়েছে, তারাই কিনা আফগানদের সামনে হিমশিম খেল! হ্যাঁ এ কথা ঠিক যে, ধোনির দলে প্রথম একাদশের অনেকেই ছিলেন না। কিন্তু ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চও কতটা তৈরি, তা জাদেজাই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এদিনও তুলে নেন তিনটি উইকেট। কিন্তু আফগানিস্তান ছিল নাছোড়বান্দা। বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়েনি তারা। ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে তাঁদের দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস প্রশংসনীয়। সাতটা ছক্কা ও ১১টা চার সহযোগে ১২৪ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেললেন শেহজাদ। মিডল অর্ডারে ধস নামলেও আফগানদের বড় রানে পৌঁছে দেন নবি। হাত ঘুরিয়ে জোড়া উইকেটও তুলে নেন তিনি।
100-run stand between and . Making it look like a breeze this pair
— BCCI (@BCCI)
ডেভিড আর গোলিয়াথের লড়াই বললে একেবারেই বাড়িয়ে বলা হবে না। বিশ্ব ব়্যাঙ্কিংয়ে দু’নম্বর ‘গোলিয়াথ’ ভারতকে ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস দিয়েই আটকে দিল ডেভিড আফগানিস্তান। ভারতের কাছে যা হারের সমানই বলা যায়। শেহজাদ, নবিরা বুঝিয়ে দিলেন লম্বা রেসের ঘোড়া তাঁরা। যে দেশের ঘুম ভাঙে গোলাগুলির শব্দে, সেই আফগানিস্তান ওয়ানডের আকাশে ক্রমেই উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। মঙ্গল-রাতের ফল অপ্রত্যাশিত হলেও, ইতিহাসের সাক্ষী রইলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অধিনায়ক হিসেবে ধোনির ২০০ তম ম্যাচে তাই কোনও দল নয়, জিতল ক্রিকেটই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.