বিজ্ঞানীদের চোখে মঙ্গলের নদীপ্রবাহ।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছলাৎছল ছন্দে নদী বইত একসময়। আর্দ্রতায় ভরে যেত রুখাশুখা মাটি। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ছিল সেই নদীপথ। আমাদের গঙ্গানদীর চেয়েও দীর্ঘ। সেসব অবশ্য প্রাচীনকালের কথা। এখন তো প্রতিবেশী মঙ্গল শুষ্ক। উপল-বন্ধুর মঙ্গলপৃষ্ঠের জন্য তাকে লালগ্রহ বলা হয়। এই গ্রহ আদৌ বসবাসযোগ্য কিনা, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চলছে। আর সেই গবেষণার ফলেই সম্প্রতি মঙ্গলে নদীপথের অস্তিত্ব মিলেছে বলে দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, ১৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল সেই জলভাগ। যা ভাবা হচ্ছিল, তার চেয়েও বেশি আর্দ্র ছিল মঙ্গলের মাটি। পৃথিবীর চেয়েও বেশি। বিজ্ঞানীদের এহেন দাবির পর প্রতিবেশী গ্রহটিকে নিয়ে নতুন ভাবনার জন্ম দিচ্ছে।
ইংল্যান্ডের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সাহায্যে ওপেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা মঙ্গল নিয়ে একটি গবেষণা চালাচ্ছেন। সেই টিমের প্রধান বিজ্ঞানী অ্যাডাম লুসকুট জানাচ্ছেন, তাঁরা হাই রেজলিউশন ক্যামেরা ব্যবহার করে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। মূলত তিনটি যন্ত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে গবেষণার কাজ চলেছে। কনটেক্সট ক্যামেরা, মার্স অরবিটার লেসার আলটিমিটার এবং হাই রেজলিউশন ইমেডিং সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট। মঙ্গলের ‘নোয়াচিস টেরা’ এলাকার অবস্থান, নদীপথের রূপ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে যা জানা যাচ্ছে, তা অনেকটা এরকম – একসময়ে লালগ্রহে বিস্তৃত নদীপথ ছিল। পারস্পরিক সংযোগ ছিল তাদের মধ্যে। জলে ভরা ছিল সেসব এলাকা। আর এসব থেকে ইঙ্গিত, কোনও এক সময়ে জীবনধারণের যোগ্য ছিল মঙ্গল গ্রহ।
প্রায় একশো কোটি বছর আগে কেমন ছিল সেসব দিন? সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ ফলাফল অনুযায়ী, বিশাল এলাকা দিয়ে কয়েক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ নদীপথ ছিল। মাটি থেকে তার উচ্চতা ছিল ১০ মিটার প্রায়। নদীপথের মধ্যে পারস্পরিক সংযুক্তি এবং তাদের প্রবাহ শুধুমাত্র গ্রহের একটি দশাকেই চিহ্নিত করে না। তার ভূতাত্ত্বিক গুরুত্ব রয়েছে। ৩৭০ কোটি বছর আগে মঙ্গলে এটাই ছিল জলের মূল উৎস। তখনও বরফ গলা জলে সিক্ত হয়নি তার মাটি।
বিজ্ঞানী লুসকুটের কথায়, ”মঙ্গলের নোয়াচিস টেরা এলাকা, যা নিয়ে সবচেয়ে কম গবেষণা হয়েছে, তা আমাদের চমকে দিচ্ছে। যা পেয়েছি তা আসলে একটা টাইম ক্যাপসুল! পৃথিবীতে বসে এর চেয়ে বেশি পাওয়া সম্ভব ছিল না।” সাম্প্রতিক গবেষণা মঙ্গল সম্পর্কে ধারণাগত সাহায্য করছে, তা নয়। তার এমন পরিবর্তনের কারণ নিয়েও বহু প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূ্র্ণ প্রশ্ন, মঙ্গল কি বসবাসযোগ্য ছিল নাকি হয়ে উঠতে পারবে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.