প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেমিকার মন পেতে প্রেমিকের আকাশের চাঁদ এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নতুন নয়। এক্ষেত্রে সাধারণত রূপক অর্থেই ব্যবহৃত হয় চাঁদ। তবে বেপরোয়া রবার্টস চেয়েছিলেন প্রেমিকার সঙ্গে চাঁদের মাটিতে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতে। ‘স্বপ্নাতীত’ সেই ফ্যান্টাসি বাস্তবায়িত করতে রীতিমতো কাণ্ড বাঁধিয়ে বসেছিলেন নাসার এই শিক্ষানবিশ বিজ্ঞানী। মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের সদর দপ্তরে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনিতে থাকা চাঁদের পাথর চুরি করেছিলেন রবার্ট। যা সেই সময় সাড়া ফেলে দিয়েছিল গোটা বিশ্বে।
নাসায় চাঁদের পাথর চুরির এই ঘটনা ঘটেছিল আজ থেকে ২৩ বছর আগে ২০০২ সালে। ২৪ বছর বয়সি থাড রবার্ট, তাঁর প্রেমিকা টিফানি ফাউলার-সহ মোট চার জন এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। নাসার ইন্টার্ন হিসেবে কর্মরত রবার্টসের উদ্দেশ্য ছিল প্রেমিকার সঙ্গে চাঁদের মাটিতে যৌনতা করার। সেই ফ্যান্টাসির লক্ষ্যে নাসার সিকিউরিটি ক্যামেরা হ্যাক করেন। নাসার কর্মীদের জন্য ব্যাজ তৈরি করে বিশেষ ধরনের নিয়োপ্রিন বডিস্যুট (সাঁতারের জন্য ব্যবহৃত পোশাক) পরে ‘মিশনে’ নামেন তাঁরা। এই অপরাধে সফলও হন। নাসার ল্যাব থেকে চুরি যায় ৭.৭ কেজি ওজনের একাধিক পাথর। যার বাজার মূল্য ১০০০ থেকে ৫০০০ ডলার প্রতি গ্রাম। অর্থাৎ প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা।
তবে সমস্যা বাঁধে অন্য জায়গায়। এই পাথর বিক্রির জন্য বেলজিয়ামের একজন ক্রেতাকে ঠিক করা হয়। ওই শিল্পপতি পাথরগুলি কিনতে চাইলেও কোনওভাবে তাঁর সন্দেহ হওয়ায় এফবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। এরপরই গোল বাঁধে। এমন ভয়াবহ তথ্য সামনে আসার পর গোপন অপারেশন শুরু করে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ। ওই পাথর কেনার টোপ দিয়ে যোগাযোগ করা হয় অপরাধীদের সঙ্গে। শেষে এফবিআইয়ের জালে ধরা পড়ে পুরো চক্রটি। পরবর্তী সময়ে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবার্টস জানিয়েছিলেন, এই কান্ড তিনি করেছিলেন প্রেমিকাকে খুশি করতে। চাঁদের মাটিতে যৌন সঙ্গমের ফ্যান্টাসি পূরণ করতে। তিনি স্বীকার করেন, পাথর চুরির পর সেই পাথরগুলি বিছানার উপর সাজিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলেন তিনি। রবার্টসের কথায়, “এটা ছিল এক প্রতীকী অভিব্যক্তি। প্রথমবার পৃথিবীর কেউ চাঁদে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছে।” এই অদ্ভূতুড়ে যৌনসুখ উপভোগ করার পর পাথরটি বিক্রির চেষ্টা করেন রবার্ট ও তার সঙ্গীরা। তাতেই হাতকড়া পড়ে অপরাধীদের হাতে।
২০০২ সালে গ্রেপ্তারের পর রবার্টসকে ৮ বছরের ৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও, ২০০৮ সালে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁর বান্ধবী ফাউলার এবং আরেক সহযোগী শে সাউয়ারকে ১৫০ ঘন্টা সমাজসেবা, ১৮০ দিনের গৃহবন্দী এবং ৯,০০০ ডলারের বেশি জরিমানা করা হয়। চতুর্থ অপরাধী, গর্ডন ম্যাকওয়ার্টারকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জেলে থাকাকালীন, রবার্টস Einstein’s Intuition নামে ৭০০ পৃষ্ঠার একটি বই লিখেছিলেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় পদার্থবিদ হিসেবে কর্মরত। ২০১১ সালে রবার্টসের এই কীর্তির উপর বেন ম্যাজরিক নামে এক লেখক বইও লেখেন। যার নাম ছিল Sex On The Moon।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.