বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পর্যটনের বিকাশ। সিকিমের মুকুটে নতুন পালক। ভারতের প্রথম ‘ডিজিটাল নোমাড ভিলেজ’ পাকিয়ং জেলার ইয়াকটেন গ্রাম। সিকিম রাজ্য সরকার এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের যৌথ উদ্যোগে ইয়াকটেন গ্রামকে পর্যটনের মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে মিলবে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা এবং পরিবেশবান্ধব হোম স্টে। স্বভাবতই ফ্রিল্যান্সার, ইউটিউবার-সহ ডিজিটাল যুগের পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে চলেছে ইয়াকটেন। সিকিমের বিভিন্ন স্থানীয় খাবার, প্রজাপতির সংসার, বনে হাঁটা পথ, অর্কিড বাগান, হিমালয়ের পাখি, মাঠ এবং হিমালয়ের মনোরম দৃশ্য ইয়াকটেনকে মনোরম করে তুলেছে।
সিকিম রাজ্য পর্যটনের উপদেষ্টা রাজ বসু বলেন, “ডিজিটাল নোমাড ভিলেজ-এর পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য পর্যটকদের দীর্ঘ সময় ইয়াকটেন গ্রামে থাকতে উৎসাহিত করা। এর ফলে একদিকে পর্যটকরা যেমন পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পাবেন অন্যদিকে স্থানীয় অর্থনীতিও লাভবান হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।”
সিকিম পর্যটন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্যাংটক ৩২ কিলোমিটার দূরে পূর্ব সিকিমের পকিয়ং জেলার পাহাড়ি গ্রাম ইয়াকটেন এমনিতেই প্রকৃতিপ্রেমী এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। এখানকার সবুজ জঙ্গল, অর্কিড, প্রজাপতি, পাখি দেখার জন্য মরশুমে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় থাকে। এখন গ্রামটি আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে ‘ডিজিটাল নোমাড ভিলেজ’-এ পালটে যাওয়ায়। ‘ডিজিটাল নোমাড ভিলেজ’-এর বাংলা আভিধানিক অর্থ ‘ডিজিটাল যাযাবর গ্রাম’। পর্যটকরা ওই গ্রামের আনাচে-কানাচেতে থেকেও উচ্চ গতির ইন্টারনেট পরিষেবা পাবেন। ল্যাপটপ অথবা ফোন চালিয়ে সহজে তৈরি করে নিতে পারবেন রিল, ডকুমেন্টরি সহ আরও অনেক কিছুই। তাই গ্রামটি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক এবং ডিজিটাল ক্রিয়েটরদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। মূলত আধুনিক প্রজন্মের পর্যটকদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই গ্রামটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এখানে থাকতে হবে সবুজের মাঝে পরিবেশ-বান্ধব হোম স্টে-তে।
সিকিম প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বিলাসিতা নয়। ‘ডিজিটাল নোমাড ভিলেজ’-এ মিলবে পাহাড়ি সৌন্দর্যের নান্দনিকতা। গ্রামীণ জনজীবনের ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ। পর্যটকরা সিকিমের জাতিগত খাবার সহ ঘরে তৈরি খাবার পাবেন। উপভোগ করবেন বাহারি প্রজাপতির বসতি, পাইন-ফারের জঙ্গল পথে হাঁটার রোমাঞ্চ, অর্কিড বাগান, হিমালয় পাখি, মাঠ এবং হিমালয়ের মনোরম দৃশ্য। গ্রামটি ঝান্ডিদারা ভিউপয়েন্টের খুবই কাছে। এখান থেকে ট্রেকিং করে ঝান্ডিদারায় পৌঁছানো যায়। সেখানে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ মিলবে। রাজ বসু বলেন, “সিকিমের পর্যটন মানচিত্র আরও বৈচিত্র্যময় করার জন্যই এই উদ্যোগ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.