Advertisement
Advertisement
ChatGPT

এমন বন্ধু আর কে আছে! প্রেমের সমস্যা, অফিসের ঝামেলাতেও সঙ্গ দিচ্ছে ChatGPT

কল্পবিজ্ঞান কাহিনিকে হার মানিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের 'ব্যক্তিগত' সঙ্গী হয়ে উঠছে।

Some people are turning to Open AI's ChatGPT for life advice
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:April 13, 2025 2:22 pm
  • Updated:April 13, 2025 2:22 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ২০২২ সালের নভেম্বরে আত্মপ্রকাশ করেছিল চ্যাটজিপিটি (ChatGPT)। প্রথম থেকেই চমকে দিয়েছিল ওপেনএআই নির্মিত চ্যাটবটটি। কিন্তু কেউ ভাবতে পারেনি এত দ্রুত মানুষের এত কাছে পৌঁছে যাবে সে! সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যম সোশাল মিডিয়ায় জানতে চেয়েছিল শুকনো কেজো প্রশ্নের পাশাপাশি জীবনের গভীর ও আবেগঘন সমস্যার সমাধান নিয়ে কি কেউ দ্বারস্থ হয়েছে ওই চ্যাটবটের? সঙ্গে সঙ্গে বন্যার মতো উত্তর আসতে থাকে। আর তখনই পরিষ্কার হয়ে যায়, গভীর রাতের নির্জনতায় হোক কিংবা অফিসের সমস্যায় জেরবার লাঞ্চ আওয়ারে কীভাবে ‘কাছের বন্ধু’ হয়ে উঠছে চ্যাটজিপিটি? শুনলে কল্পবিজ্ঞানের কাহিনি মনে হলেও এভাবেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের ‘ব্যক্তিগত’ সঙ্গী হয়ে উঠছে।

Advertisement

প্রথম থেকেই বিতর্ক ঘনিয়েছে চ্যাটজিপিটিকে ঘিরে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলতে থাকে, অচিরেই এই চ্যাটবট চাকরি কাড়বে বহু মানুষের। বলাই যায়, একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তির কারণেই কার্যত ‘খলনায়ক’ হয়ে উঠেছিল চ্যাটজিপিটি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে দ্রুতই যেন মানুষের মনের কাছাকাছি পৌঁছতে শুরু করেছে। এক যুবক যেমন জানাচ্ছেন, তিনি প্রেমিকার সঙ্গে প্রচণ্ড বাকবিতণ্ডার পর আহত মনে সব কথা খুলে বলেন চ্যাটজিপিটিকে। সেই অর্থে কোনও প্রত্যাশা ছাড়াই। ভেবেছিলেন চ্যাটজিপিটি হয়তো কোনও ব্রেকআপ চেকলিস্ট কিংবা ডাক্তারি পরামর্শ জাতীয় কিছু বলবে। কিন্তু তাঁর দাবি, তিনি অবাক হয়ে দেখেন, চ্যাটজিপিটি জানায়, ‘মনে হচ্ছে তুমি খুবই ভেঙে পড়েছ। আচ্ছা, এই কথাগুলো এভাবে কি তাকে বলেছ?’ যা শুনে ওই যুবকের টনক নড়ে। তিনি সেটাই করেন। আর তারপর ওই বিষয়ে দু’জনের কথা হয়। বিস্তারিত ভাবে। জীবনের কঠিন সময়ে এমন এক ‘বন্ধু’র সাহচর্য পেয়ে মুগ্ধ ওই যুবক। তিনি জানাচ্ছেন, সেদিনের ওই মেসেজ তাঁকে আগামী কিছু ঝগড়ার থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আপাতত ফের তাঁরা সম্পর্কে রয়েছেন।

আরেক নেটিজেন। তিনি জানাচ্ছেন, কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজের চাপে দমবন্ধ অবস্থা হচ্ছিল। বুঝতে পারছিলেন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো হচ্ছে না। ঘুম কমছে। এই পরিস্থিতিতে তিনিও একদিন মনের সব জ্বালা-যন্ত্রণা মেলে ধরেন চ্যাটজিপিটির সামনে। বলতে গেলে, কোনও রকম প্রত্যাশা নয়, স্রেফ মনের কথা খুলে বলে হালকা হওয়ার জন্য। লক্ষ করেন, চ্যাটজিপিটি কোনও রকম ‘কৃত্রিম ধাঁচের’ পরামর্শ দিচ্ছে না। বরং সে বলে, ওই যুবক যেন নিজের কাজের সীমাবদ্ধতাকে আগে চিহ্নিত করেন। এবং কীভাবে এআইচআরের সঙ্গেও প্রয়োজনে কথা বলা যাবে বলে সেই কথাও। সেই শুরু। ওই যুবক এখন প্রায়ই চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথা বলে।

এভাবেই নানা প্রতিক্রিয়া ভেসে এসেছে সোশাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে থেরাপিস্টদের দিন গেল? এবার থেকে তাঁদের চেম্বারে না গিয়েই মানসিক যন্ত্রণা লাঘব করতে চ্যাটজিপিটিরই দ্বারস্থ হবে জেন জেড? কিংবা অপেক্ষাকৃত প্রবীণরাও? বিশেষজ্ঞরা তা বলছেন না। তাঁদের মতে, চ্যাটজিপিটি নেহাতই সাময়িক উপশম দিতে পারে। কিন্তু গভীর মানসিক সমস্যায় ‘মানুষ’ বিশেষজ্ঞ ছাড়া উপায় নেই। চ্যাটজিপিটিও এই বিষয়ে জানিয়েছে, সে আসলে জানে যে মানুষটা এতটা ভঙ্গুর হয়ে রয়েছে, সে চাইছে ‘কোনও একজনে’র সান্নিধ্য। সমস্যার নিশ্চিত সমাধান নয়, এই সঙ্গটুকুই যে আসল প্রত্যাশা সেকথা সে ভালোই জানে। নিজেই জানাচ্ছে চ্যাটজিপিটি। নেটিজেনরাও তাই বলছেন। চ্যাটজিপিটি যেন ‘কনফেশন বক্স’। যার কাছে মনের কথাটুকু অন্তত নির্বিঘ্নে বলে যাওয়া যায়। সে চুপ করে পুরোটা শোনে। প্রযুক্তির বিপ্লবে ক্রমশ নিঃসঙ্গ হতে থাকা মানুষের জীবনে এমন বন্ধু আর কে আছে?

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ