Advertisement
Advertisement
Heart attack

হার্ট অ্যাটাক মানেই ফেলিওর নয়, কারণ ও লক্ষণ আলাদা, পার্থক্য বোঝালেন বিশেষজ্ঞ

হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেলিওর- এই দু'টি শব্দ প্রায়শই সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।

Heart attack and heart failure not same, their causes, symptoms, treatments are different
ad

ডা. সুপ্রতীপ কুন্ডু

ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট

  • Published by: Buddhadeb Halder  |  
  • Posted:July 2, 2025 6:10 pm   |  
  • Updated:July 2, 2025 6:22 pm  

সাধারণের বোঝার ভুল, মুখে মুখে ঘোরে অনেক কথা। অধিকাংশই বলে হার্ট অ্যাটাক করেছে। না জেনেই নিজের মতো ব্যাখ্যা করেন। আসল বিষয়টা সবার জানা অত্যন্ত জরুরি। বুঝিয়ে বললেন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. সুপ্রতীপ কুণ্ডু।

হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেলিওর- এই দু’টি শব্দ প্রায়শই সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। যদিও উভয়ই হার্টের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুতর অসুস্থতা, তাদের কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসার পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই দু’টি অবস্থার মূল পার্থক্য বোঝা জরুরি, কারণ সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ জীবন বাঁচাতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক
হার্ট অ্যাটাক একটি আকস্মিক ঘটনা। যখন হার্টের পেশিগুলিতে রক্ত সরবরাহকারী প্রধান ধমনী (করোনারি আর্টারি) সম্পূর্ণরূপে বা আংশিকভাবে অবরুদ্ধ হয়ে যায়, তখন হার্ট অ্যাটাক হয়। এই অবরোধ সাধারণত ধমনীতে চর্বি জমার কারণে তৈরি হওয়া প্লাক ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে ঘটে। রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হার্টের পেশির সেই অংশ অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতে শুরু করে।

Heart attack and heart failure are both serious heart diseases, but their causes, symptoms, and treatments are different

কারণ
ধমনীর ভিতরে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থের প্লাক জমা হওয়া (এথেরোস্ক্লেরোসিস)। এই প্লাক ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বাঁধা, যা রক্তনালিকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।

লক্ষণ
বুকে তীব্র ব্যথা বা চাপ, যা বুক থেকে বাম হাত, ঘাড়, চোয়াল বা পিঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা বমি, ঠান্ডা ঘাম, মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ও অত্যন্ত দুর্বল অনুভব করা এর অন্যতম লক্ষণ। হার্ট অ্যাটাক একটি জরুরি অবস্থা এবং অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে হার্টের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে বা রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। চিকিৎসা পদ্ধতিতে সাধারণত রক্তনালি খুলে দেওয়া (অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি) বা বিকল্প রক্তনালি তৈরি করা (বাইপাস সার্জারি) এবং ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

হার্ট ফেলিওর
হার্ট ফেলিওর সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা। এর মানে এই নয় যে হার্ট কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে; বরং এর অর্থ হল, হার্ট শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারছে না। এটি একটি প্রগতিশীল অবস্থা, যা ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হার্টের পেশি দুর্বল বা শক্ত হয়ে যেতে পারে, যার ফলে এটি কার্যকরভাবে রক্ত পাম্প বা গ্রহণ করতে অক্ষম হয়।

Heart attack and heart failure are both serious heart diseases, but their causes, symptoms, and treatments are different

কারণ
১. পূর্ববর্তী হার্ট অ্যাটাক, যা হার্টের
পেশিকে দুর্বল করে দেয়।
২. উচ্চ রক্তচাপ, যা হার্টের উপর
অতিরিক্ত চাপ ফেলে।
৩. ডায়াবেটিস।
৪. হার্টের ভালভের সমস্যা।
৫. অ্যারিদমিয়া (অনিয়মিত হৃদস্পন্দন)।
৬. কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ।

লক্ষণ
১. শারীরিক কার্যকলাপের সময় বা বিশ্রামকালে শ্বাসকষ্ট, বিশেষ করে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া।
২. পা, গোড়ালি এবং পেটে তরল জমা কারণে ফোলাভাব।
৩. ক্লান্তি এবং দুর্বলতা।
৪. নিয়মিত কাশি বা বুকে কফ জমা।
৫. দ্রুত ওজন বৃদ্ধি (শরীরে তরল জমার কারণে)।
৬. ক্ষুধামান্দ্য এবং বমি বমি ভাব।
৭. হার্ট ফেলিওরের চিকিৎসা সাধারণত জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ওষুধের মাধ্যমে লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ এবং হার্টের কার্যকারিতা উন্নত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। কিছু ক্ষেত্রে, পেসমেকার, ডিফিব্রিলেটর বা গুরুতর পরিস্থিতিতে হার্ট প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে।

উপসংহারে বলা যায়, হার্ট অ্যাটাক হল হার্টের রক্ত সরবরাহকারী ধমনীর একটি আকস্মিক অবরোধ, যেখানে হার্ট ফেলিওর হল হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা কমে যাওয়ার একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা। উভয়ই গুরুতর হৃদরোগ, তবে তাদের উৎপত্তি, লক্ষণ এবং চিকিৎসার পদ্ধতি ভিন্ন। হৃদরোগের যে কোনও লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

পরামর্শ: 8697011201

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ