সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোজনরসিক বাঙালির পুজো মানেই পেটপুজো। আর সেই রসনা তৃপ্ত হলে, উদর ‘বাবাজি’র থেকে বেশি খুশি বোধহয় আর কেউ হন না! উৎসবের প্রহর দুয়ারে কড়া নাড়লেই আনন্দের স্বাদ আরও বেশি করে চেটেপুটে নিতে চায় মন। সারা বছর অফিস-বাড়ি সামলে বিশেষ কিছু রান্না করার সুযোগ হয় না। কিন্তু পুজোর দিনগুলোয় পরিবারের জন্য রান্না নিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট করবেন ভাবছেন? ‘কুছ পরোয়া নেহি’! বছরের বাছাই করা সেরা রেসিপিগুলি রইল আপনাদের জন্য। পুজোর চারদিনে মিলিয়ে মিশিয়ে রেঁধে ফেলুন।
দুধ পোলাও
উপকরণ
দেরাদুন চাল (১ কাপ), দুধ ফোটানো (দেড় লিটার), গোটা গরমমশলা (২ চামচ), স্টার অ্যানিস (৪-৫টা), কিশমিশ (১ চামচ), কড়াইশুঁটি (২ চামচ), ঘি (৪ চামচ), নুন (আধ চামচ), চিনি (স্বাদমতো), মিল্কমেড (৩ চামচ)
প্রণালী
প্রথমে চাল ভালো করে ধুয়ে ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরে পাত্রে ঘি গরম করে গরমমশলা ও স্টার অ্যানিস ফোড়ন দিন। গন্ধ বেরোতে শুরু করলে ওর মধ্যে কড়াইশুঁটি, কিশমিশ, চাল দিয়ে অল্প নেড়ে নিন। ওর মধ্যে এবার ফুটিয়ে রাখা দুধটা দিন। নুন-চিনিও দিন। এবার পাত্রের ঢাকনা আটকে রাখুন, ঢিমে আঁচ রাখুন। ধোঁয়া বেরোতে শুরু করলে বুঝবেন পোলাও তৈরি। আঁচ থেকে নামিয়ে স্ট্যান্ডিং টাইমে রাখুন। পরে ঢাকনা খুলে মিল্কমেড ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
গন্ধরাজ চিকেন পাতুরি
উপকরণ
৩০০ গ্ৰাম বোনলেস চিকেন, ৩ টেবিল চামচ পোস্তবাটা, ৩ টেবিল চামচ নারকেলবাটা, আধ চা চামচ রসুনবাটা, ১.৫ চা চামচ কাঁচা লঙ্কাবাটা, ১ চা চামচ গোলমরিচগুঁড়ো, ৩ চা চামচ লেবুর রস, ১/৪ কাপ সাদা তেল, স্বাদ মত নুন, ১৫ টি কুমড়ো পাতা, ১ টি সুতোর রিল, ১৬ টি গন্ধরাজ লেবুর পাতা, পরিমাণ মতো ভাজার জন্য সামান্য সাদা তেল।
প্রণালী
চিকেন কিমা বানিয়ে নিতে হবে। একটি পাত্রে চিকেনের কিমা নিয়ে, তার মধ্যে পোস্তবাটা, নারকেলবাটা, রসুনবাটা, কাঁচা লঙ্কাবাটা ও ১ টি গন্ধরাজ লেবুর পাতাবাটা, গন্ধরাজ লেবুর রস, সাদা তেল ও গোলমরিচগুঁড়ো পরিমাণ মতো নুন দিয়ে খুব ভালো করে মেখে নিতে হবে। এবার একটি কুমড়ো পাতা ধুয়ে হালকা সেঁকে নিন তাওয়ায়। তার মধ্যে এই মিশ্রণটি ৩ টেবিল চামচ নিয়ে, উপরে একটি গন্ধরাজ লেবুর পাতা রেখে খুব ভালো করে সুতো দিয়ে বেঁধে দিন। এবার একটি ফ্রায়িং প্যান তেল গরম করে এরমধ্যে একে একে পাতুরিগুলো দিয়ে, ঢিমে আঁচ রেখে ঢেকে দিন উপর থেকে। বারে বারে উলটেপালটে ভেজে নিতে হবে। চারিদিকে সুন্দর লালচে কালার চলে এলে, নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
হিং চিকেন
উপকরণ
বোনলেস চিকেন (ব্রেস্ট পিস) ১ কেজি, গোটা হিং বা হিং গুঁড়ো ১/৪ চা-চামচ, একটি তুলনামূলক বড় পাতিলেবুর রস, নুন স্বাদমতো, গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা-চামচ, চিকেন মশলা অথবা গরম কারিপাতা গুঁড়ো (যদি না থাকে পরিবর্তে এক চা-চামচ গরম মশলা ও আধ চা-চামচ গরম লঙ্কা গুঁড়ো ব্যবহার করা যেতে পারে) ১ চা-চামচ।
প্রণালী
মাঝারি আকারে মাংসের টুকরো কাটুন। সেগুলোর সঙ্গে বাকি সমস্ত মশলা একটা পাত্রে মিশিয়ে নিন। এরপর বড় কড়াইয়ে মশলা-মাখানো চিকেনের টুকরোগুলো হালকা আঁচে নাড়াচাড়া করে নিন, যতক্ষণ না জল শুকিয়ে আসছে। প্রয়োজনে ৫ মিনিটের জন্য মাইক্রোওয়েভে সেঁকে তারপর কড়াইয়ে ফেলে জল শুকিয়ে নিতে পারেন। বিষয়টি শুকনো শুকনোই হবে যাতে হিংয়ের স্বাদ আলাদা করে তরলে মিশে না যায়, মাংসে মাখা মাখা থাকে। গরম গরম পরিবেশন করুন।
মাটন নিহারী
উপকরণ
১ কিলো খাসির মাংস (লেগ পিস), ৪ টেবিল চামচ ঘি, ৩ টে বড় মাপের পেঁয়াজ কুঁচি, ১ টেবিল চামচ আদা বাটা, ১ টেবিল চামচ রসুন বাটা, ২ টেবিল চামচ ধনে গুড়ো, ১ চা চামচ হলুদ গুড়ো, ২ টেবিল চামচ গরম মশলা গুড়ো, ২ টেবিল চামচ ময়দা, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, আন্দাজ মতো নুন।
প্রণালী
প্রেসার কুকারে মটন আর জল দিয়ে ২ টো সিটি দিয়ে নামিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে মটনের স্টক আলাদা করে অন্য পাত্রে রেখে দিন। একটি ননস্টিক কড়াইতে ঘি গরম করে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে দিন । ভাল করে ভেজে নিন। এরপর এতে মটন, ধনে গুড়ো, হলুদ গুড়ো, আদা বাটা, রসুন বাটা, আন্দাজ মতো নুন দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। মিনিট পাঁচেক রান্না করুন। এরপর গরম মশলা ও মটনের স্টক দিয়ে কম আঁচে ভাল করে মিশিয়ে ঢেকে রান্না করুন যাতে মাংস খুব ভাল মতো সেদ্ধ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে ঢাকা সরিয়ে নাড়িয়ে নিন। প্রয়োজনে আরও একটু স্টক ঢেলে দিতে পারেন। এরপর একটি ছোট বাটিতে ময়দা ও মটনের স্টক খুব ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে মাংসের উপর ঢেলে দিন। ঢেকে দিয়ে আরও মিনিট দশেক রান্না হতে দিন যাতে মাংসের গ্রেভি ঘন হয়ে যায়। রান্না হয়ে গেলে মাংসের উপর লেবুর রস ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন। রুমালি রুটি বা পরোটার সঙ্গে দারুণ লাগবে মটন নিহারী।
কাতলা রেজালা
উপকরণ
কাতলা মাছ (লবণ-হলুদ গুঁড়ো দিয়ে মাখানো), নুন, চিনি, জিরেগুঁড়ো, ধনেগুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো, গরম মশলাগুঁড়ো, গোটা গরমমশলা, কাঁচালঙ্কা, পিঁয়াজ পেস্ট, আদা পেস্ট, কাজু-কিশমিশ পেস্ট, জলে ভেজানো জাফরান, সরষের তেল, সাদা তেল।
প্রণালী
প্রথমে তেল গরম করে ম্যারিনেট করা মাছগুলোকে সোনালি করে ভেজে তুলে রাখুন। এবার এতে গোটা গরম মসলা ফোঁড়ন দিন, গন্ধ বেরোতে শুরু করলে কাজু-কিশমিশের পেস্ট দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে এতে পিঁয়াজ ও আদা বাটা দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিয়ে একে একে সব গুঁড়োমশলা দিয়ে ভালো করে কষান। প্রয়োজনে সামান্য জল দিয়ে ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। ফুটতে থাকলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে আরও ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। নামানোর আগে উপর থেকে জাফরান জল ছড়িয়ে দিন।
আম শিরখন্দ
উপকরণ
টকদই (৩ কাপ), আমন্ড (৬টা), কাজুবাদাম (৬টা), এলাচগুঁড়ো (১/৪ চা-চামচ), কেশর (৬ আঁশ), ঈষদুষ্ণ দুধ (১ চামচ), পাকা আমের পিউরি (১ কাপ), ক্যাস্টর সুগার (আধ কাপ)।
প্রণালী
একটা মসলিন কাপড়ে দই নিয়ে অন্তত ৬-৭ ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখুন যাতে সমস্ত জল বেরিয়ে যায়। এবার কাপড় বাঁধা অবস্থাতেই দই ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। আমন্ডগুলো জলে ভিজিয়ে দিন। পরে আমন্ডের খোসা ছাড়ান। ছোট ছোট করে আমন্ড এবং কাজু কুচিয়ে নিন। কেশরটা হালকা গরম দুধে ভিজিয়ে রাখুন। ফ্রিজে রাখার প্রায় ঘণ্টা খানেক বাদে দইটা বের করে একটা বড় বাটিতে রাখুন। খুব ভাল করে একসঙ্গে দই এবং ক্যাস্টর সুগার ফেটিয়ে মেশান। একে একে ওই বাটিতে দিন গরম দুধে ভেজানো কেশর, কুচনো কাজুবাদাম ও আমন্ড, পাকা আমের পিউরি এবং এলাচগুঁড়ো দিয়ে ভাল করে মেশান। মিশ্রণটা আরও ২ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে রাখুন। ফ্রিজ থেকে বের করে ওপর দিয়ে আরও খানিকটা কাজুবাদাম-আমন্ড কুচি ছড়িয়ে স্কুপ করে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন আমের শিরখন্দ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.