ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শৃঙ্খলায় দলকে বেঁধে রাখতে জেলা থেকে ব্লক, অঞ্চল থেকে বুথ– সর্বস্তরে স্ক্রিনিং চলছে। অভিযোগ যে কোনও স্তর থেকেই আসুক, কখনও শোকজ করে, কখনও তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠিয়ে খুব স্পষ্ট করে দলীয় শৃঙ্খলার পাঠ পড়িয়ে দিচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্ব।
ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শীর্ষ নেতৃত্বের বার্তা একটাই, দলের কোনও স্তরে কোথাও কোনও ভেদাভেদ নেই। রাজ্যজুড়ে দলীয় সংগঠনে দুর্বলতারও কোনও প্রশ্ন নেই। আর সেটা নেই বলেই, স্রেফ ক্ষুদ্র স্বার্থে কোনও কোনও স্তরে দলেরই কেউ কেউ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলছেন। এতে সার্বিকভাবে দলের বদনাম হচ্ছে। এসব কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নির্দেশ, “প্রত্যেককে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়। নেত্রীর পরিশ্রম আর অভিষেকের সহযোগিতা এই দুয়ের মিশেলে দল চলছে। কোথাও কোনও সামগ্রিক সমস্যা তৈরি হলে শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তা মিটিয়ে দলের পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করেন। ফলে মিথ্যা দ্বন্দ্ব তৈরি করে ভেদাভেদ দেখিয়ে ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করতে দলকে বদনাম করা যাবে না।”
সামনেই দলের বার্ষিক কর্মসূচি ২১ জুলাই। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের মূল মন্ত্র বলে দেবেন। ধর্মতলায় সেই সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। নেতা-কর্মীদের নির্দিষ্ট করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া, চলছে দ্রুত।
উত্তরবঙ্গ থেকে একটা বড় সংখ্যক কর্মী ২১ জুলাইয়ের আগেই কলকাতায় এসে পৌঁছন। আসে অন্যান্য জেলা থেকেও। ফলে তাঁদের আসা, থাকার একটা বন্দোবস্ত আগে থেকেই করে ফেলতে হয়। সেসব নিয়েও শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। তার মধ্যেই চলছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির পর্যালোচনার কাজও। যারা শৃঙ্খলায় অবাধ্য, তাঁদের দলীয় অনুশাসনের পাঠও দেওয়া হচ্ছে।
এই পর্বেই আরেকটি কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছে। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে ২১ জুলাইয়ের পরপরই দলীয় নেতৃত্ব তা শুরু করবে। রাজ্য সভাপতি নিজেও আলাদা করে সেই কাজ শুরু করবেন। কোনও ক্ষেত্রে রাজ্য সভাপতি নিজে জেলা সফরে যাবেন, কোনও ক্ষেত্রে দলের জেলা নেতৃত্বকে তৃণমূল ভবনে ডেকে নেওয়া হবে। তার আগেই দলের বার্তা স্পষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। জেলায় যিনি যে স্তরের নেতাই হোন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বার্তাই তাঁর কাছে শেষ কথা। অযথা দলে ভেদাভেদ দেখিয়ে, ‘লবি’ করে দলকে বদনাম করা যাবে না। বিরোধী কোনও দল যাতে এর সুযোগ না পায়, সে কথা মাথায় রেখে নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়তে হবে। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের কঠিন লড়াইয়ের আগে শৃঙ্খলার প্রশ্নে কঠোর বার্তা মেনেই চলতে হবে দলের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.