নিজস্ব সংবাদদাতা, বিধাননগর: বিশ্বকর্মার বিগ্রহের পরিবর্তে শীত, গ্রীষ্ম রোদ-বৃষ্টি-ঝড়-জলে পুড়ে ভিজে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া রিকশাওয়ালাদের পুজো করা হল কলকাতায়। তাঁরাই হয়ে উঠলেন বিশ্বকর্মা! রাজারহাটের নারায়ণপুর এলাকার রিকশাচালকদের বিশ্বকর্মা হিসাবে পুজো করার ভাবনা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁরই উদ্যোগে ‘আমার বিশ্বকর্মা’ হিসেবে পুজো পেলেন ইসলাম আলি, মনসুর আলি, উত্তম কর-সহ অন্যান্য রিকশাচালকরা।
কোনও জাঁকালো মণ্ডপ, ঠাকুরের মূর্তি, রীতি-উপাচার নেই, একফালি জায়গায় কাপড়ের ছাউনির প্যান্ডেলের নীচে বসেছিলেন তাঁরা। খেটে খাওয়া, দরিদ্র অবয়বগুলোর কারও মুখ ভর্তি সাদা ধবধবে দাড়ি, কারও কপালে লম্বা তিলক। এঁরা সকলে রাজারহাটের নারায়ণপুর অঞ্চলে রিকশা চালিয়ে পেট চালান। বুধবার মাইকে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণ এবং মসজিদের ইমাম সাহেবের দু’হাত তোলা দোয়ার কণ্ঠধ্বনির মধ্যে রিকশাচালকদের মাথায় ফুলের পাপড়ি ও গঙ্গাজল ছিটিয়ে বিশ্বকর্মা পুজো সারলেন তাপসবাবু। অনন্য দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে পথচলতি লোকজন অভিভূত। অনবদ্য এক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত তৈরি হল বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁরা।
বিধায়ক তাপসবাবু বলেন, “একদা পরিবহণ ব্যবস্থায় নারায়ণপুরবাসীর মূল ভরসা ছিল পায়ে টানা রিকশা। তাই আমি বিশ্বকর্মা হিসেবে রিকশাচালক ভাইদের পুজো করলাম। ওঁদের পরিবারের জন্য অর্থ প্রদানও করেছি। পাশাপাশি ওঁদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাতে প্রতি মাসে হরলিক্স দেওয়া হবে।” এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বামী বেদসনন্দ মহারাজ, মাওলানা আশফাক আলম নুরি, রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর, বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলর আরাত্রিকা ভট্টাচার্য, রহিমা বিবি, বরো চেয়ারম্যান শাহওনাজ আলি মণ্ডল প্রমুখ। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এদিন ‘আমার বিশ্বকর্মা’ মঞ্চ থেকে বিধাননগর পুরসভার নারায়ণপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরোহিতদের সম্মানজ্ঞাপন ও শিশুদের ঘুড়ি-লাটাই প্রদান করা হয়েছে। এলাকায় দুর্গোৎসব, শ্যামাপুজা, ইদ মিলন উৎসব, মহরম কমিটি, ছট পুজো, বুদ্ধ জয়ন্তী, গণেশ পুজো প্রভৃতির ধর্মীয় সংগঠনগুলিকেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.