ছবি: ফাইল
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় অব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের জোড়া চিঠিতে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ডেথ অডিট কমিটি এবং রাজারহাট কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও এমআর বাঙুর হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জোড়া চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র। কেন্দ্রীয় দলের অভিযোগকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তোপ দাগলেন তৃণমূল সাংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন। তিনি পালটা অভিযোগ করেন, এবার বোঝাই যাচ্ছে কোন উদ্দেশ্যে রাজ্যে এসেছেন পর্যবেক্ষকরা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরের পর করোনা পরিস্থিতি পরিদর্শনে বেরোন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। তার আগে অবশ্য রাজ্যের প্রতিনিধির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁদের। এরপরই দুটি চিঠি পাঠানো হয় রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে। চিঠি পাওয়ার পরই রাজ্য সরকারের এক প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের কাছে আসেন। উল্লেখ্য, শুক্রবার জোড়া চিঠিতে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের অভিযোগ, রাজ্যে করোনা নমুনা পরীক্ষা ঠিকমতো হচ্ছে না। টেস্ট করতেও অনেক সময় লাগছে। বৃহস্পতিবারই রাজারহাটের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও এমআর বাঙুর হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পর্যবেক্ষকরা। শুক্রবার প্রথম চিঠিতে এই দুই জায়গার অব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের গা ছাড়া মনোভাবের কথা উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
একইসঙ্গে বাঙুর হাসপাতালের উদাহরণ দিয়ে অপূর্ব চন্দ্র চিঠিতে লিখেছেন, কয়েকজন বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের টেস্ট রিপোর্ট এখনও আসেনি। কয়েকজনের টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা হাসপাতালে রয়েছেন। হাসপাতালে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে চিঠিতে। এই প্রেক্ষিতে পালটা অভিযোগ তুলেছেন শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন বোঝা যাচ্ছে কোন উদ্দেশ্যে তাঁরা রাজ্যে এসেছেন। খুবই দুর্ভাগ্যজনক বিষয় যে রাজ্যের ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য চক্রান্ত চলছে।’ তাঁর অভিযোগ, ‘ত্রুটিপূর্ণ টেস্ট কিট পাঠানো হয়েছে কেন? সেই প্রশ্ন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে জানতে চাক কেন্দ্রীয় দল। ত্রুটিপূর্ণ টেস্ট কিটের জন্য মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে। কারও শরীরে যদি জীবাণুর হদিশ না মেলে এবং পরে যদি সংক্রমণের কারণে যদি মৃত্যু হয় তখন কে দায়ী থাকবে? কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের কাছে কোনও উত্তর আছে?’।
দ্বিতীয় চিঠিতে রাজ্যে ডেথ অডিট কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অপূর্ব চন্দ্র। কীসের ভিত্তিতে, কেন এই কমিটি গঠন করা হল তা জানতে চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। কোন পদ্ধতিতে এই কমিটি কাজ করছে তা জানতে চেয়েছে পর্যবেক্ষক দল। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে কেন এত সময় নিচ্ছে কমিটি সে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তা নিয়েও তোপ দেগেছেনব শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি নিজে চিকিৎসক, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসাবে বলছি, পর্যবেক্ষকদের জানা উচিত, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এখন অনেক নতুন নিয়ম হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, অন্তত চার ঘণ্টা পর মৃত্যু ঘোষণা করা। আর ICMR এবং WHO গাইডলাইন মেনেই সব করা হচ্ছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয় যখন রাজ্যের ভাবমূর্তিকে এভাবে নষ্ট করা হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.