নিজস্ব ছবি
গোবিন্দ রায়: ছটে ব্যবহার করা যাবে না বেলুড়ের শিব কৃষ্ণ দেবত্তর স্টেটের মালিকানাধীন রাসবাড়ির ঘাট। ওই সম্পত্তি দেবোত্তর হলেও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন, সরকারি সম্পত্তি নয়। এই যুক্তিতে আসন্ন ছটে বেলুড়ের রাসবাড়ি ঘাট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু এবছর নয়, এবার থেকে আর ওই ঘাট ব্যবহার করা যাবে না বলেও জানিয়েছে হাই কোর্টের পুজোর অবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল।
যদিও জানা গিয়েছে, সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে চলেছে রাজ্য। আদালতে রাজ্যের যুক্তি ছিল, ওই এলাকায় পর্যাপ্ত ঘাট না থাকায় এই ঘাট ব্যবহার করার ব্যবস্থা করে এসেছে প্রশাসন। কিন্তু দেবোত্তর স্টেটের পক্ষের রিসিভারের দাবি, ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা এই ঘাট সর্বসাধারণের ব্যবহারে দেওয়া যায় না বা প্রশাসন নিতে পারে না। তার প্রেক্ষিতে, রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের মতে, ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা ঘাট কোনওভাবেই রাজ্য নিতে পারে না। তাই আদালতের নির্দেশ, এবার ওই ঘাট ছট পুজোর কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, ১৯ য়ের দশকে ১৮৯০ সালে শিবকৃষ্ণ দাঁয়ের পুত্র পূর্ণচন্দ্র দাঁ ও শিবকৃষ্ণ দাঁয়ের সহধর্মনি কাদম্বিনী দাসীর হাতে তৈরি বেলুড়ের রাসবাড়ি। ৪০ ফুট উঁচু নবরত্ন মন্দির, রাস মঞ্চ আজও ইতিহাস বহন করে নিয়ে চলেছে। একইসঙ্গে, ২৪ ফুট উঁচু ছয়টি শিবমন্দির, নাটমন্দির, নহবতখানা ভোগঘর এবং বাগান। জোড়াসাঁকোর শিবকৃষ্ণ দাঁ লেনের দাঁ বাড়ির এই সম্পত্তি নিয়েই দড়ি টানাটানি। এই সম্পত্তি ‘পাবলিক প্রোপার্টি’ নাকি ‘প্রাইভেট’, তা নিয়েই এবার মামলা গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে।
শিবকৃষ্ণ দেবত্তর স্টেটের আদালত নিযুক্ত রিসিভার হলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী দ্বিজদাস চক্রবর্তী। তিনিই হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। তাঁর দাবি, প্রতিবছর ছট পুজোর সময় সেখানে বেআইনিভাবে পাঁচিল, গেট টপকে ঢুকে যথেচ্ছ অব্যবহার করা হয়। বাধা দেওয়া হলে জোর করে সেবায়েতদেরকে দিয়ে গেট খোলানো হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিবছরই ছটের সময় স্থানীয় ছট কমিটি দাঁ বাড়ির সম্পত্তিকে পাবলিক ট্রাস্ট দাবি করে স্থানীয়দের নিয়ে সেখানে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে বলে অভিযোগ করেন আইনজীবী। যা নিয়ে ২০২২ সালে মামলাও দায়ের হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, সে সময় স্থানীয় ছট কমিটির করা ওই মামলায় সেবায়েত বা পরিবারের কাউকে মামলায় পক্ষভুক্ত করা হয়নি। ফলে আদালতে সেবায়েত বা পরিবারের কেউ তাদের বক্তব্য পেশ করতে পারেনি বলে অভিযোগ। তাতে শেষ ফয়সালা কিছু হয়নি। তাই এবার ছটের আগেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় শিবকৃষ্ণ দেবত্বর স্টেট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.