শুভময় মণ্ডল: ইনি কি উত্তমকুমার! আর ইনি নাকি সুচিত্রা সেন! দিনকয়েক হল সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি করছে দুটি ছবি। আর তা দেখেই এরকম বিস্ময় প্রতিক্রিয়া নেটিজেনদের। নিউটাউনের মাদার ওয়াক্স মিউজিয়ামে মহানায়ক ও মহানায়িকার মূর্তি বসানো হয়েছিল বছর কয়েক আগেই। নেটদুনিয়ায় সে দুটিরই ছবি ঘোরাঘুরি করছে। কিন্তু দেখে বোঝার বিন্দুমাত্র উপায় নেই যে এঁরাই তাঁরা। বরং মনে হচ্ছে গরমে ঘেমে নেয়ে (পড়ুন মোম গলে) একসা হয়ে উঠেছেন দু’জনে। আর তাই এই বিকৃতি। তা নিয়ে দেদার খোরাকও চলছে। কেউ কেউ বলছেন, আসলে বাঙালির আবেগ নিয়েই ছেলেখেলা হচ্ছে। অভিযোগ জমা হচ্ছে পোস্টের পর পোস্টে। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে কী?
[ বাংলায় এখন এক গাছে আম-আমড়া-কাঁঠাল ফলছে: মমতা ]
ছবি দুটি যে ওয়াক্স মিউজিয়ামের মূর্তিরই তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে বাস্তব হল, সেগুলি সাম্প্রতিক ছবি নয়। হিডকোর সিএমডি দেবাশিস সেন জানাচ্ছেন, যে দুটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি করছে তা আসলে বছর তিনেকের পুরনো। একেবারে গোড়ার দিকে মূর্তির এই অবস্থা ছিল। তারপর অনেক পরিবর্তন করা হয়। বহু দর্শকই সেই পরিবর্তিত মূর্তি দেখেছেন। কিন্তু কোনও কারণে আবার পুরনো ছবি দুটিই ভেসে উঠেছে। এক প্রখ্যাত শিল্পীও সোশ্যাল মিডিয়ায় তা শেয়ার করেন। ফলে অনেকেই ধরে নেন এ ছবি সাম্প্রতিক। দারুণ গ্রীষ্মে গলছে মোম। আর তার জেরেই মূর্তি দুটির এই ‘গলদঘর্ম’ অবস্থা। কিন্তু মূর্তির এই অবস্থার ছবি যে পুরনো, সেই সত্যিটাই অনেকের অগোচরে থেকে যাচ্ছে।
মূর্তি দুটি দেখে এ ব্যাপারে সক্রিয় হয়ে ওঠেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। হিডকোর চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ নিয়ে তাঁর কথাও হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মূর্তি দুটি এখন যেমন আছে তার থেকে আরও উন্নত করা হবে। উত্তম-সুচিত্রা বাঙালির চিরন্তন আবেগের স্মারক। সুতরাং তাঁদের মোমমূর্তি আরও যথাযথ হওয়াই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছেন কর্তারা। সেই বিবেচনা করেই মূর্তি দুটি পাঠানো হয়েছে আসানসোলে। শিল্পী সুশান্ত রায় মূর্তি দুটির উপর কাজ করবেন। বাস্তবের সঙ্গে মূর্তির সামঞ্জস্য নিশ্চিত করতেই পুনরায় কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হিডকোর কর্তাদের আশা, নতুন করে কাজ করার পর মূর্তিদুটি বাঙালির মনে ধরবে। দিনকয়েক আগে পাঞ্জাবের একটি ওয়াক্স মিউজিয়ামে কিংবদন্তিদের ছবি নিয়ে নেটদুনিয়ায় বিস্তর খোরাক শুরু হয়েছিল। অযাচিত হলেই খানিকটা সে পরিণতি হয় উত্তম-সুচিত্রার মূর্তির ক্ষেত্রেও। কিন্তু সেটি যে মূর্তির পুরনো ছবি তা না জেনেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাঙালিরা। ধন্দ কাটিয়ে বাঙালির প্রাণের মানুষকে চেনা রূপেই ফেরাতে তাই উদ্যোগী হয়েছেন কর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.