Advertisement
Advertisement
Durga Puja

পুজোয় বিরাট চমক, প্রথমবার কিংবদন্তি গণেশ হালুইয়ের ভাবনায় গড়ে উঠবে দুর্গা

কীভাবে রাজি করানো সম্ভব হল ৯০ ছুঁইছুঁই বর্ষীয়ান শিল্পীকে?

Ganesh Halui to create idols for Durga Puja in Beliaghata 33 Pally
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 16, 2025 6:05 pm
  • Updated:August 16, 2025 7:15 pm  

সুলয়া সিংহ: তিনি কিংবদন্তি শিল্পী। তাঁর আঁকা ছবির গুণমুগ্ধ গোটা বিশ্ব। কিন্তু বাংলার সেই প্রবাদপ্রতীম শিল্পীকে পুজোর আঙিনায় রং-তুলি হাতে দেখা যায়নি কখনও। এবার সেই অসাধ্যসাধন করলেন পুজোর থিমশিল্পী শিবশংকর দাস। তাঁর হাত ধরেই প্রথমবার বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব পাবে গণেশ হালুইয়ের দুর্গা। এবছর বেলেঘাটা ৩৩ পল্লিতে পা রাখলেই গণেশ হালুইয়ের ভাবনায় ফুটে ওঠা দুর্গার সাক্ষী থাকতে পারবেন আপনিও। 

Advertisement

শিবশংকর দাসের সৃজন সৌজন্যে বিগত বছরগুলিতে বহু পুরস্কার এসেছে এই ক্লাবে। কয়েক বছর পর এবার ২৫ বছরের পূর্তিতে আবারও ডাক পড়েছে তাঁর। এবারের থিম ‘তিন শর্ত তিন তিন’। আর তাঁর সেই থিমভাবনাকেই অন্যমাত্রায় পৌঁছে দেবে গণেশ হালুইয়ের সৃষ্টি। এমনটাই আশা শিবশংকরের। কিন্তু কীভাবে রাজি করানো সম্ভব হল ৯০ ছুঁইছুঁই বর্ষীয়ান শিল্পীকে? সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শিবশংকর জানাচ্ছেন, ”বহু মানুষ বহু বছর ধরে চেষ্টা করেছেন ওঁকে রাজি করানোর। আমরাও করেছি। কিন্তু প্রথমে মোটেই উনি রাজি ছিলেন না। পাত্তাই দিচ্ছিলেন না সেভাবে। কিন্তু দিন দশ-বারো আগে কনসেপ্ট শুনতে রাজি হন। দেখা করে শোনালাম সবটা। আমার পুরনো কাজ দেখালাম। অনেক প্রশ্ন করলেন। জানতে চাইছিলেন, এটা কেন করেছি, ওটা কেন করলাম। তবে কনসেপ্ট শোনার পরে চুপ করে গেলেন। বেশ কিছুক্ষণ কোনও কথাই বলছিলেন না। তারপর দেখলাম খুঁজে খুঁজে নিজের নানা স্কেচ বের করছেন। তবে সেই সঙ্গে এও বলছিলেন, আমার তো বয়স হয়েছে। কী করে আঁকব? আসলে উনি তো অসুস্থ অনেকদিন ধরেই। এই মুহূর্তেও উনি হাসপাতালে ভর্তি। তবে আমাকে কিন্তু উনি এঁকে দিয়ে দিয়েছেন সেদিনই। কেবল প্রতিমার ড্রইং নয়, যেখানে ঠাকুর বসবে তার ডান-বাম-উপর-নিচ সবটাই করে দিয়েছেন।” কেবল ভাবনাই নয়, নিজেই প্রতিমায় রংও করতে পারেন গণেশ হালুই। এমনটাই জানাচ্ছেন শিবশংকর।

beleghata 33 palli

এখানেই বলে রাখা ভালো, ২০২৩ সালে ঠাকুরপুকুর এসবি পার্ক সর্বজনীনে যে প্রতিমা রূপ পেয়েছিল, তার নেপথ্যে ছিল কলাভবনের কিংবদন্তি শিল্পী রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনা। প্রতিমায় তাঁর নাম জুড়ে যাওয়ায় সম্বৃদ্ধ হয়েছিল কলকাতার দুর্গোৎসব। সেখানেও নেপথ্য কারিগর ছিলেন সেই শিবশংকর। এবার গণেশ হালুইকে রাজি করিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিলেন তিনি।

কিন্তু কেন হঠাৎ কিংবদন্তি শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে চাইলেন? যেখানে দুর্গাপুজোর সঙ্গে এর আগে তিনি যুক্তই হননি? এপ্রসঙ্গে শিবশংকর বলছেন, ”গোটা পৃথিবীর সব আর্ট মিউজিয়ামেই ওঁর আঁকা ছবি রয়েছে। উনি বাংলারই মানুষ। অথচ দুর্গাপুজোয় একবারও যুক্ত হবেন না তা কি হয়? যেমন রামানন্দবাবুও সারা জীবন দুর্গার ছবি এঁকেছেন। অথচ ওঁকে আমরা কখনও ডাকিনি। এই ভাবনা থেকেই ওঁর কাছে গিয়েছিলাম। আর সেখান থেকেই এবার গণেশবাবুর কাছে যাওয়া।” এতকাল নিজে পুজোয় সরাসরি যুক্ত না থাকলেও নিয়মিত শহরের নানা মণ্ডপ ও প্রতিমার ছবি দেখেন গণেশ হালুই। প্রতিমার বিবর্তন নিয়ে চর্চা করেন। আর সেই কিংবদন্তিই এবার গড়বেন প্রতিমা। এতে বাংলার প্রাণের উৎসব যে আরও ‘ধনী’ হল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement