সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ ৭৮ বছরের ঐতিহ্যের অবসান। মাল্টিপ্লেক্সের দাপটে দীর্ঘ পথচলায় অবশেষে ছেদ পড়ল। বন্ধ হয়ে গেল ধর্মতলা চত্বরের সুপ্রাচীন এলিট সিনেমা। হল কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিস দিয়ে মঙ্গলবার জানিয়ে দেওয়া হল, আর্থিক কারণেই বন্ধ হল সিনেমা হলটি। ৩১ মে শেষবারের মতো সিনেমা দেখানো হয়েছিল এই প্রেক্ষাগৃহে।
বর্তমানে সিনেপ্রেমীদের অধিকাংশই সিনেমা দেখার জন্য মাল্টিপ্লেক্সে ভিড় জমান। টিকিট মূল্য খানিকটা বেশি হলেও সেখানকার পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা অনেক উন্নতমানের। আর সেই কারণেই শহরের বাকি সিনেমা হলগুলোর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তাঁরা। এমন প্রতিযোগিতার বাজারে সিনেমা হলে দর্শকদের জন্য নানারকম সুবন্দোবস্ত করে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন অন্যান্য হল মালিকরা। কিন্তু দিনের পর দিন দর্শকের অভাবে বাজারে টিকে থাকা দুঃসহ হয়ে উঠছে অনেকের পক্ষেই। তেমনই অবস্থা হল কলকাতার ধর্মতলা এলাকার এলিট সিনেমা হলের। কর্তৃপক্ষের কথায়, যতদিন যাচ্ছে, দর্শকের পরিমাণ ততই কমছে। ফলে সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবির খরচ তোলা কঠিন হয়ে পড়ছে। গত মে মাসে আয় হয় মাত্র ৩০ হাজার টাকা। অথচ সেই মাসে ইলেকট্রিক বিল দিতে হয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। তাছাড়া এমন অবস্থায় কর্মীরাও চাকরি ছেড়ে দিচ্ছিলেন। ফলে একপ্রকার ফাঁকাই হয়ে পড়ে প্রজেকশন রুম। আর তাই শেষমেশ সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলেন হল মালিক। তবে জানিয়ে দিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই কর্মীদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে।
শুধু এলিট নয়, ধর্মতলা চত্বরে এর আগেও একাধিক হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে দর্শকের অভাবে। বর্তমানে সেসব হল পরিণত হয়েছে শপিং মল কিংবা রেস্তরাঁয়। কিন্তু এলিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অশনিসংকেত দেখছেন বাকি হল মালিকরাও। গলা চেপে ধরছে মাল্টিপ্লেক্স। তাদের জৌলুসের সামনে ফিকে সাধারণ সিনেমা হল। কীভাবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.