Advertisement
Advertisement
ক্যানসার

মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত, হাসপাতালেই জন্মদিন পালন ক্যানসার আক্রান্ত খুদের

ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ায় জন্মের পরই ওই খুদেকে হাসপাতালে ফেলে রেখে যায় মা।

Doctors of medical colleges celebrate birthday of a orphan girl
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 24, 2019 1:33 pm
  • Updated:November 24, 2019 1:33 pm   

স্টাফ রিপোর্টার: চতুর্দিকে রংবেরঙের বেলুন। চারিপাশে রঙিন কাগজ উড়ছে। এমনই ছবি দেখা গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক বিভাগে। আর এত আয়োজন যার জন্য বর্তমানে তার ঠিকানা হাসপাতালই।  পিতৃপরিচয় নেই। জন্মের পর মা-ও পালিয়ে গিয়েছে তাকে হাসপাতালে ফেলে। রেজিস্টারে লেখা ঠিকানায় খোঁজ করতে গিয়েছিলেন কেউ কেউ। তবে সে ঠিকানাতেও মেলেনি কিছুই। অগত্যা হাসপাতালই আশ্রয় খুদের। 

Advertisement

শরীরে মারণ ক্যানসার নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল শিশুটি। মারণ রোগের চিকিৎসা করার সামর্থ্য ছিল না চালচুলোহীন মায়ের। তাই হাসপাতালে একরত্তিকে ফেলেই পালিয়ে গিয়েছিল জন্মদাত্রী। কোথায় ঠাঁই হবে সদ্যোজাতর? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, আরএমওরাই দায়িত্ব নেন শিশুটির। মায়ের নামেই নাম রাখা হয় মিনু বেগম। সেই মিনুরই দু’ বছরের জন্মদিন পালন হল হাসপাতালে। কেক থেকে, মোমবাতি, রাঙতায় মোড়া উপহার কোনও কিছুই বাদ ছিল না। হাজির ছিলেন সুপার ডা. ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, প্রিন্সিপাল ডা. মঞ্জুশ্রী রায়, নার্সিং সুপারিন্টেনডেন্ট মীনা পাল পেডিয়াট্রিক বিভাগের আরএমও এবং ক্লিনিকাল টিউটর ডা. অজয়কুমার দাস।

এমন বিশেষ দিনে শামিল করা হয়েছিল পেডিয়াট্রিক বিভাগের চিকিৎসাধীন শিশুদেরও। ডা. অজয়কুমার দাস জানিয়েছেন, অনেক প্রান্তিক অঞ্চলের শিশু এখানে ভরতি। তাদের হাতেও আমরা ছোট উপহার তুলে দিয়েছি।
২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইডেন বিল্ডিংয়ে ভূমিষ্ঠ হয় মিনু। জন্ম থেকেই তার শরীরের কক্সিয়াল অংশে অর্থাৎ মেরুদণ্ডের একদম নিচে প্রকাণ্ড এক টিউমার ছিল। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন ওই টিউমারে ক্যানসারের সেল রয়েছে। বাঁচার সম্ভাবনা কম। তবে হাল ছাড়েননি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। বায়োপসি করে দেখা যায় মস্তিষ্কের ক্যানসারের বিরলতম এক কোষ রয়েছে ওই টিউমারে। অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয় সেই টিউমার। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ডা. অজয়কুমার দাস এবং প্রফেসর সুকান্তকুমার দাস। তবে এখানেই শেষ নয়, শিশুটির পেটের ভিতরেও একটি ক্যানসার সেলের সন্ধান মেলে।

একসময় মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী ভেবে কেমো বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। তবে কেমো বন্ধ করার পর থেকেই দ্রুত ছোট হতে থাকে পেটের ভিতরের টিউমার। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় তা উধাও হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন ঘটনা বিরলতম বলেই জানিয়েছেন ডা. অজয়কুমার দাস। এদিন সেই মিনুর জন্মদিন পালন করে সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, “ওর নিজের মা-বাবা নেই। হাসপাতালের আমরাই ওর অভিভাবক। সারদিন নার্সদের কোলে কোলেই থাকে ও।”

[আরও পড়ুন: ‘বিজেপি জিতলে খড়গপুরের আরও সর্বনাশ হবে’, আশঙ্কায় পদ্ম শিবিরের প্রাক্তন নেতা]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ