Advertisement
Advertisement
Buddhadeb Bhattacharya

‘বলেছিলাম স্মোক করলে ব্ল্যাক কফি খেও না’, বন্ধু বুদ্ধর স্মৃতিচারণায় বিমান বসু

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আড়ম্বরহীন জীবনযাত্রার কথাই উঠে এল বিমান বসুর স্মৃতিচারণায়।

Biman basu remembers Former CM Buddhadeb Bhattacharya after his demise
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:August 8, 2024 8:40 pm
  • Updated:August 8, 2024 8:44 pm   

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ‘প্রিয় বন্ধুকে’ হারিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম‌্যান বিমান বসু। দীর্ঘদিনের সঙ্গীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। দেহ পিস ওয়ার্ল্ড রওনা হওয়ার পর ভারাক্রান্ত মনে ফিরলেন আলিমুদ্দিনে। সেখান থেকেই বৃদ্ধবাবুর স্মৃতিতে ডুব দিলেন বিমান বসু।

Advertisement

অভ‌্যাসমতো বৃহস্পতিবারও তাঁর ভোর ৫টায় ঘুম ভেঙেছিল। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পার্টির রাজ‌্য অফিসের তেতলায় তাঁর ঘর। ভোরে উঠে বিমানবাবুর প্রথম কাজ দলের মুখপত্র গণশক্তির পাতায় চোখ বোলানো। এদিনও সেই কাজ সেরে আরও কিছুক্ষণ শুয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার চোখ খোলে সকাল ৮টায়। বাকিসব কাগজের পাতা ওলটাতে ওলটাতে চা খাচ্ছিলেন। ততক্ষণে নিচের ঘরে বুদ্ধবাবুর প্রয়াণের খবর এসে গিয়েছে। একটু ইতস্তত করেই বিমানবাবুকে খবরটা দেওয়া হয়। তখন নিজের ঘরে দাঁড়িয়েছিলেন বিমানবাবু। খবরটা শুনে ধপ করে বসে পড়েন। আলিমুদ্দিনের পার্টি অফিস থেকে বেরোচ্ছেন তখন সংবাদমাধ‌্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজেই বলেন, “বসা অবস্থা থেকে উঠতে কষ্ট হচ্ছিল। আমার বন্ধু চলে গেল! কথা বলার অবস্থায় নেই। প্লিজ! কিছু বলতে চাই না” সাদা গাড়িটায় চড়ে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন বন্ধুর পাম অ‌্যাভিনিউয়ের বাড়ি। সেখান থেকে দুপুরে পার্টির রাজ‌্য দপ্তরে ফিরে নিজের ঘরেই ছিলেন। অনুরোধের পর দোতলায় এলেন। বললেন, “কী জানতে চাও বলো।”

[আরও পড়ুন: ‘বিতর্কিত’ বুদ্ধ থেকে ‘ভদ্রলোক’ মুখ্যমন্ত্রী, অমলিনই রয়ে গেল সেই সাদা ধুতি]

কোভিডের আগে বুদ্ধবাবু পার্টি অফিসে গিয়েছিলেন, তখন শেষ কি কথা হয়েছিল? স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিমানবাবু বললেন, ‘‘আমি ওঁকে (বুদ্ধদেব) বলেছিলাম, যাঁরা স্মোক করেন তাঁদের ব্ল‌্যাককফি খাওয়া উচিত নয়। পার্টি অফিসের ঘরে বসে স্মোক করার পাশাপাশি ব্ল‌্যাক কফি খেতো। আমি বলেছিলাম, এটা কোরো না। আমার সঙ্গে প্রায় ঝগড়া হওয়ার উপক্রম।’’ আলিমুদ্দিনে বসেই এদিন বন্ধুর স্মৃতিচারণায় ডুব দিয়েছিলেন বিমান। বুদ্ধদেবের সঙ্গে তাঁর পরিচয় কফি হাউসে। বিমানের কথায়, ‘‘জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভায় যখন তথ‌্য-সংস্কৃতি মন্ত্রী হয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, তখন দপ্তরে যাওয়ার সময় আমায় বলেছিল চলো। আমি একটা কভার ফাইল ওঁকে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম ওটাতে কাগজপত্র রাখতে হবে।’’

আবার জরুরি অবস্থায় আত্মগোপনের সময় বুদ্ধদেববাবুর সঙ্গে একঘরে এক বিছানাতেই কাটিয়েছেন বিমান। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কুঅভ‌্যাস, আমি একা শুতে ভালবাসতাম। কিন্তু এক বিছানাও ওই সময়ে বুদ্ধর সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম।’’ একইসঙ্গে বিমান বসুর কথায়, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চিরকাল আড়ম্বরহীন জীবন কাটিয়েছেন। স্যাঁতস‌্যাতে মেঝের ঘরে থাকতেন। জ্যোতি বসুও বলেছিলেন, গৌতম দেবও আবাসনের ফ্ল‌্যাট দেওয়ার কথা বললেনও যায়নি। আড়ম্বর বা বিলাসিতা তাঁর ছিল না।’’ এর পরই বিমানের আক্ষেপ, ‘‘এখন যাঁরা রাজনীতি করে, তারা জীবনযাত্রার মান কত বেশি উন্নত করা যায় তার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে।’’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ