সুদীপ রায়চৌধুরী: রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে সর্বদলীয় বৈঠকে কমিশনের নিরপেক্ষতার দাবি তুলল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। শনিবার কার্যালয়ে বৈঠকে সামান্য অশান্তির খবরও মিলেছে। যদিও দিনশেষে তৃণমূলের দাবি একটাই, কাউকে ভোটাধিকার থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। তৃণমূলের তরফে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সাংসদ পার্থ ভৌমিক-সহ ৩ জন। কংগ্রেস ও বিজেপির তরফেও তিনজন করে প্রতিনিধি যান। সিপিএমের ২ প্রতিনিধি ছিলেন বৈঠকে। এদিন কংগ্রেস বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে এসআইআর-এর বিরোধিতা করেছে। প্রতিনিধিদের গলায় ছিল ‘নো এসআইআর’ প্ল্যাকার্ড। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মনোজ আগরওয়াল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন নিয়ে কোনও পরিকল্পনা নেই এই মুহূর্তে। তাই ওই প্রসঙ্গে আলোচনাও প্রাসঙ্গিক নয়। একই বক্তব্য মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসেরও। তিনিও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ”বাংলায় এসআইআর হবে না, এটা তৃণমূলের অঙ্গীকার। তবে আজকের বৈঠকে এসআইআর নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।”
এসআইআর নিয়ে হাজারও তর্কবিতর্কের আবহে শনিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে বুথ বিন্যাস নিয়ে বৈঠক ছিল। তা নিয়ে এবার নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে কমিশন। বলা হয়েছে, প্রতি বুথে ভোট দিতে পারবেন ১২০০ ভোটার। যা এর আগে ছিল ১৫০০। এনিয়ে তৃণমূলের তরফে অরূপ বিশ্বাস বলেন, “আগে একটা বুথে ১৫০০ জনের বেশি ভোটার ভোট দিতে পারতেন। কিন্তু কমিশনের নয়া নিয়ম অনুয়ায়ী, এবার থেকে প্রতি বুথে ১২০০ জন ভোটার থাকবেন। বাড়তি ভোটারদের নিয়ে আলাদা বুথ তৈরি হবে। আমাদের এই নিয়মে কোনও আপত্তি নেই। শুধু একটাই দাবি, ভোটারের ভোটকেন্দ্র যেন তাঁর বাড়ির কাছে হয়। কমিশন যেন কোনও উপায়ে ভোট কমানোর চেষ্টা না করে।”
বিজেপির তরফে এদিনের বৈঠেক হাজির ছিলেন শিশির বাজোরিয়া-সহ দু’জন। শিশির বাজোরিয়ার বক্তব্য, ”বুথ বিন্যাস নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা ২৪ টি জেলা তালিকায় পেয়েছি। আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হল। এটা কী করে সম্ভব যে কোনও রাজনীতিক দল প্রতিবাদ করেনি? আমাদের রাজ্য অনেক জায়গা রাজনৈতিক অশান্তি চলছে। অনেক জায়গায় ভোট পরবর্তী এলাকায় বুথ পরিবর্তন করার দাবি তুলেছি। আগামী ৮ তারিখ পর্যন্ত অভিযোগ জানানোর সমস্যা আছে। যেখনে ৫০০ থেকে ৬০০ ভোটার আছে। সেখানে বুথ করতে হবে। আমরা সেই সব জায়গায় বুথ করতে হবে। BLO দের তালিকা আমাদের দেওয়া হয়নি। ৪০% বেশি অস্থায়ী কর্মীদের বিএল ও করা হয়েছে। ভোট চুরি করার জন্য এটা করা হয়েছে। একটি রাজনীতিক দল SIR উঠলেই শাসক দল প্রতিবাদ জানিয়েছে।”
এদিনের বৈঠকে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী বলেন, ”আজ মূলত আলোচনা ছিল বুথ বিন্যাস নিয়ে। এটা নিয়ে জেলা স্তরে বৈঠক হয়েছে। আজকে আসল প্রস্তাব না দিয়ে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। যেখনে ৮০ হাজার থেকে বেশি বুথ সেখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। এভাবে পক্ষপাতিত্ব করে স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব। আমরা বলেছি যে কেন ফলস রিপোর্ট জেলা নির্বাচনী আধিকারিক রিপোর্ট দিয়েছে। ডিএম অসত্য রিপোর্ট দিতে আসল রিপোর্ট গোপন করে দিয়েছে। SIR নিয়ে নিজেই সুপ্রিম কোর্টে ফেঁসে গেছে। তারা একজন অনুপ্রবেশকারীদের নাম দিতে পেরেছে। একজন বিজেপি নেতা বলেছেন যে এখনে রোহিঙ্গারা আছে।”
কংগ্রেসের আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ”আমরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নির্দেশে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগদান করেছি। আজকে আমরা সম্মিলিত ভাবে যে ফুটেজ আমরা রাখলাম। সেটা হল নো পলিটিক্যাল SIR। আমরাই প্রথম SIR নিয়ে বলেছি যে এখনে পলিটিক্যাল SIR হবে না। তখন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেছেন যে আজকে এটা আলোচ্য বিষয় নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.