সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়াদ শেষের পরেও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে থাকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তা নিয়ে এবার তাঁকে ‘খোঁচা’ দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই।
সম্প্রতি বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি গাভাই। সেখানে একটি কথার প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “কিছু মানুষ আছেন, যারা মেয়াদ শেষের পরেই বাসভবন ছেড়ে দেন।” এরপর নিজের কথা বলতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আগামী নভেম্বরে অবসরের পরই নিয়ম মেনে আমি সরকারি বাসভবন ছেড়ে দেব।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি গাভাই আসলে চন্দ্রচূড়কেই খোঁচা দিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে প্রাক্তন বিচারপতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি কারও সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাই না। বর্তমান প্রধান বিচারপতি হয়তো কোনও মন্তব্য করেছেন। সেটা তাঁর মতামত। আমি তাঁর সঙ্গে একমত নাও হতে পারি। কিন্তু আমি আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি অঙ্গকে সম্মান করি। প্রত্যেকেরই তাঁদের মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে।”
গত ১ জুলাই কেন্দ্রের নগরোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়েছিল, মেয়াদ শেষের পরেও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় কৃষ্ণ মেনন মার্গের ৫ নম্বর বাংলোটিতে (প্রধান বিচারপতির বাসভবন) বসবাস করছেন। কিন্তু নিময় অনুযায়ী, তিনি আর সেখানে বসবাস করতে পারেন না। শীর্ষ আদালতের তরফেও সেখানে তাঁকে আর বসবাসের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই দেরি না করে অবিলম্বে তিনি যেন সেই আবাসন খালি করে দেন।
বস্তুত, কৃষ্ণ মেনন মার্গের ‘টাইপ ৮’ বাংলোটি দেশের প্রধান বিচারপতিদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। তবে অবসরের পর তাঁরা ‘টাইপ ৬’ বাংলোতে থাকতে পারেন। এক্ষেত্রে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের উত্তরসূরি প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বর্তমান প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ‘টাইপ ৮’ বাংলোতে থাকতে রাজি হননি। তাই তখন থেকে সেই বাংলোতেই বসবাস করছিলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
সুপ্রিম কোর্টের পাঠানোও ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, বিচারপতি চন্দ্রচূড় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাক চিঠি লিখে আবেদন করেছিলেন, সংশ্লিষ্ট কিছু কারণের জন্য যাতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁকে ওই বাংলোতে বসবাস করতে দেওয়া হোক। তার এই আবেদনে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল। তারপর ফের তিনি বর্তমান প্রধান বিচারপতি গাভাইকে তাঁর সেখানে বসবাসের মেয়াদবৃদ্ধি নিয়ে মৌখিক আবেদন জানিয়েছলেন। কিন্তু সেই সময়সীমাও অতিক্রম হয়েছে। তাই অবিলম্বে বিচারপতি চন্দ্রচূড় যেন বাংলোটি খালি করে দেন।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “ব্যক্তিগত কিছু কারণের জন্য বাংলোটি ছাড়তে দেরি হচ্ছে। গোটা বিষয়টি শীর্ষ আদালতকেও আমি জানিয়েছি। আমার দুই মেয়ে অসুস্থ। তাঁরা দিল্লি এইমসে চিকিৎসাধীন। তাই উপযুক্ত একটি বাড়ির প্রয়োজন। আমি বাড়িও খুঁজছি।” তাঁর কথায়, “সরকারের তরফে আমার জন্য যে বাড়িটির বন্দোবস্ত করা হয়েছে, সেটি বসবাসের অযোগ্য। মেরামতির কাজ চলছে। কাজ শেষ হলেই আমি সেখানে চলে যাব।” এরপর গত ১ আগস্ট পদত্যাগের আট মাস পর চন্দ্রচূড় প্রধান বিচারপতির বাসভবন খালি করে দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.