সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে এক দশক ডিঙিয়ে গিয়েছে। এই সময় পর্বে দেশে ‘হিন্দুত্ব’ রাজনীতির অন্যতম অনুঘটক হয়ে উঠেছে। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেখা যাচ্ছে কর্নাটকে। সেখানে দশেরা উৎসবের উদ্বোধক হিসাবে বুকার পুরস্কার বিজয়ী লেখক বানু মুশতাককে আমন্ত্রণ জানায় শাসক দল কংগ্রেস সরকার। যার পর কংগ্রেসকে ‘হিন্দুবিরোধী’ আক্রমণ করেছে বিজেপি। পালটা বিজেপিকে ‘সঙ্কীর্ণ’ দল বলে তোপ দেগেছে কংগ্রেস।
মাইসুরুতে পালিত হবে দশেরা উৎসব। ওই উৎসবের সূচনার জন্যই বুকার পুরস্কার বিজয়ী লেখিকাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যা নিয়ে সিদ্দারামাইয়া সরকার এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শোভা করন্দলাজ। তাঁর যুক্তি, ‘‘যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা প্রচার করে চলেছেন, তাঁদের বুঝতে হবে যে মন্দির ধর্মনিরপেক্ষ স্থান নয়। বরং তা পবিত্র প্রতিষ্ঠান এবং ন্যায়সঙ্গত ভাবে হিন্দুদের সম্পত্তি।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাফ কথা, দশেরা উৎসবে বানুকে আমন্ত্রণ করে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস।
হিন্দুত্বের নামে শোরগোল করা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জবাব দিয়েছেন কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি শিবকুমার। তিনি বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ আমরা বানুকে আমন্ত্রণ করেছিলাম। দশেরা সমাজের সকলের উৎসব। চামুণ্ডী পাহাড় এবং দেবী চামুণ্ডেশ্বরী সকলের, তিনি কেবল হিন্দুদের সম্পত্তি নয়।’’ এর উত্তরে বিজেপির বক্তব্য়, দশেরা শুধুমাত্র হিন্দুদের উৎসব, সকলের নয়। সত্যি কি তাই?
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, উপনিষদ থেকে গীতা, সবখানেই রয়েছে সঙ্কীর্ণ গণ্ডি ভাঙা উদারতার বার্তা। ঋকবেদে হোমযজ্ঞের সময় কেবল হিন্দু, শুধু মানুষ নয়, বরং সমগ্র জীবজগতের কল্যাণ কামনা করা হয়েছে। ভারতের একাধিক মন্দিরের স্থাপত্য ও ভাষ্কর্য্যে রয়েছে বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন। যার অন্যতম উদাহরণ শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনস্থল আঁটপুর। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর… সকলেই হিন্দু ধর্মকে উদার সংস্কৃতি হিসাবেই তুলে ধরেছেন। এই যুক্তি দিতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা। বিজেপি অবশ্য সেকথা শুনতে নারাজ। যতই বুকার পুরস্কার পান বানু মুশতাক, যতই দেশকে গর্বিত করুন ‘হার্ট ল্যাম্পে’র লেখিকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.