সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ‘আপনাদের জন্যই অপহৃত হয়েছে শিশু’, কর্তব্যের গাফিলতির অভিযোগে দিল্লি পুলিশকে তুলোধোনা করল সুপ্রিম কোর্ট। ভিক্টোরিয়া বসুর মামলায় দিল্লি পুলিশ এবং বিদেশ মন্ত্রকের তরফে যে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, তা দেখে কার্যত ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের বেঞ্চ।
গত জুলাই মাসেই আদালতকে কেন্দ্র জানায়, বিহার, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি হয়ে ছেলেকে নিয়ে রাশিয়া চলে গিয়েছেন চন্দনগরের বাসিন্দা সৈকত বসুর রুশ স্ত্রী ভিক্টোরিয়া। যদিও বিমান পরিবহণ সংস্থা কোনও তথ্য দেয়নি, তবে ভিক্টোরিয়ার ইমেলের আইপি অ্যাড্রেসের লোকেশন দেখেই এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। এদিন সেই মামলা ওঠে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে। দুই বিচারপতি বলেন, শিশুটির কাস্টডি কীভাবে আদালতের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে পথ খুঁজে বের করতে হবে দিল্লি পুলিশ এবং বিদেশ মন্ত্রককে। শিশুর অপহরণের পিছনে দিল্লি পুলিশও সমানভাবে দায়ী। তাঁরা কর্তব্য পালন করেননি বলেই শিশুটিকে অপহরণ করা সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করে আদালত।
বিচারপতিদের বেঞ্চের তরফে আরও জানানো হয়েছে, অপহৃত শিশুর বাবা একটি বন্ধ খামে কিছু তথ্য দিয়েছেন আদালতকে। যেখানে হংকংয়ের একটি সংস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতিরা। শিশুর বাবার থেকে দেওয়া নথি এএসজি ঐশ্বর্য ভাটিকে তুলে দেওয়ার জন্য বলেছেন বিচারপতিরা। মামলার পরবর্তী শুনানি দশ দিন পর।
উল্লেখ্য, চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসু কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন চিনে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় রাশিয়ার ভিক্টোরিয়া জিগালিনার। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিয়ে করে চন্দননগরের বাড়িতে ফেরেন যুগল। তখনই সৈকত ও বসু পরিবার জানতে পারে ভিক্টোরিয়ার বাবা ছিলেন রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ‘এফএসবি’-র প্রাক্তন আধিকারিক। সৈকতের দাবি, বিয়ের পর থেকে ফোর্ট উইলিয়ামে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন থাকেন স্ত্রী। কিন্তু সৈকতের বাবা প্রাক্তন নৌসেনা অফিসার সমীর বসু সেই অনুরোধে বেঁকে বসেন। সৈকতের দাবি, তাতেই ভিক্টোরিয়া সন্তানকে শুধুমাত্র নিজের কাছে রাখার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান। সেই মামলা চলাকালীন হঠাৎই সন্তানকে নিয়ে উধাও হয়ে যান ভিক্টোরিয়া। গত ৪ জুলাই শেষবার ওই রুশ নাগরিককে এক আধিকারিকের সঙ্গে দিল্লির রাশিয়ান দূতাবাসে দেখা গিয়েছিল। এবার তাঁর দেশ ছাড়ার তথ্য নিশ্চিত করল কেন্দ্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.