সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আদালত অবমাননা করেছেন প্রাক্তন কিংফিশার কর্তা বিজয় মালিয়া। তাই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল আগামী ১০ জুলাই হাজিরা দিতেই হবে বিজয় মালিয়াকে। ওই দিনই শুনানিতে সাজা ঘোষণা করা হবে। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার নেতৃত্বে ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এই রায় দিল বিচারপতি এ কে গোয়েল এবং ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ।
Supreme Court finds Vijay Mallya guilty of contempt of court, summons him on July 10.
Advertisement— ANI (@ANI_news)
এদিন বিচারপতিরা জানান, ‘দু’টি ক্ষেত্রে আদালত অবমাননা করেছেন মালিয়া। তাই তাঁকে আগামী ১০ জুলাই আদালতের সামনে হাজিরা দিতে হবে।’ এর পাশাপাশি তাঁরা আরও জানান, ওই দিনই মালিয়ার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হবে। প্রায় ৯০০০ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপি মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন কিংফিশার অধিকর্তা কয়েকদিন আগেই ব্রিটিশ সংস্থা ‘দিয়াজিও’-র কাছ থেকে ৪ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা তিনি নিজের অ্যাকাউন্টে না রেখে ছেলেমেয়ের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন।
এই খবর সামনে আসতেই ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি সেটা শীর্ষ আদালতের নজরে নিয়ে আসেন। অভিযোগ করেন, এই কাজ করে মালিয়া আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন। টাকা ফেরত দেবে না জানিয়ে মালিয়া পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তাঁকে অবিলম্বে হাজিরা দিতে বলা হোক। এর সঙ্গেই যোগ করেন, ‘কোর্টের নির্দেশকে নিয়ে মালিয়া ছেলেখেলা করছে। আমরা তাকে দেশে ফেরাতে সচেষ্ট হয়েছি। ৪ কোটি মার্কিন ডলারের ব্যাপারেও মালিয়া সৎভাবে কিছু জানায়নি।’
এরপরে বিচারপতিরা কিংফিশারের প্রাক্তন অধিকর্তাকে কীভাবে দেশে ফেরানো হবে সে ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন। সেই প্রসঙ্গে রোহতগি জানান, কেন্দ্র মালিয়াকে দেশের ফেরাতে চেষ্টা চালাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ সেটায় আরও সাহায্য করবে বলেও মতপ্রকাশ করেন তিনি। যদিও মালিয়ার আইনজীবী সি এস বৈদ্যনাথ তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোহ অস্বীকার করেন। বলেন, সরকার ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা সত্ত্বেও মালিয়াকে বিনা কারণে ফাঁসাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রাক্তন কিংফিশার কর্তা কোনও পরিস্থিতিতেই টাকা ফেরত দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
গত ১৮ এপ্রিল ঋণ খেলাপি ও কর ফাঁকি-সহ একাধিক অভিযোগে স্কটল্যান্ডে ইয়ার্ডের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিজয় মালিয়া। কিন্তু গ্রেপ্তারির তিন ঘন্টার মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়ে যান লিকার ব্যারন। এক বিবৃতিতে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছিল, ভারত সরকারের তরফ থেকে প্রতারণা ও ঋণখেলাপির অভিযোগে তাঁকে তলব করা হয়েছিল। তারপর সেন্ট্রাল লন্ডনের একটি পুলিশ স্টেশনে হাজিরার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রসঙ্গত, বহু ঋণখেলাপি এবং প্রতারণার মতো অভিযোগ রয়েছে মালিয়ার উপর। তাঁকে একাধিকবার সমন পাঠানো হলেও তিনি দেশে ফেরেননি। শেষপর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়।
এর আগে গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক পাসপোর্টের জোরে দেশ ছাড়েন মালিয়া৷ শোনা গিয়েছিল, ব্রিটেনের কোনও অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রয়েছেন তিনি৷ বার বার ইডির ডাকে সাড়া না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয় জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা৷ কিংফিশার মালিককে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যায় সিবিআই৷ এমন অবস্থায় হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপির দায় মাথায় নিয়েও টুইট মহলে বেশ সক্রিয় ছিলেন মালিয়া৷ এমনকী, প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিতেও ছাড়েননি লিকার ব্যারন৷ তবে তাঁর ঋণ মেটানোর তাগিদ নেই বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.