Advertisement
Advertisement
Omar Abdullah

পাঁচিল টপকে শহিদদের শ্রদ্ধা ওমর আবদুল্লার! পুলিশি বাধার নিন্দায় সরব মমতা

'আমরা কারও গোলাম নই', হুঙ্কার ওমরের।

Omar Abdullah Climbs Wall To Reach Martyrs’ Graveyard, Jostles With Police
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:July 14, 2025 2:50 pm
  • Updated:July 14, 2025 3:40 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহিদ দিবসকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত জম্মু ও কাশ্মীর। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা আগেই অভিযোগ করেছিলেন গৃহবন্দি করা হয়েছে তাঁকে। এবার পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো হাতাহাতি করে পাঁচিল টপকে ‘শহিদদের’ কবরস্থান মাজার-ই-শুহাদায় প্রবেশ করলেন ওমর। শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর পর কেন্দ্রের পুলিশবাহিনীর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন তিনি। উপত্যকার এই ঘটনায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

Advertisement

১৯৩১ সালের ১৩ জুলাই তৎকালীন মহারাজা হরি সিংয়ের সেনার গুলিতে ২২ জন কাশ্মীরি আন্দোলনকারীর নিহত হওয়ার দিনটিকে ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালনের রেওয়াজ রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিভাজন ঘটিয়ে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন তথা ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর নরেন্দ্র মোদি সরকার ‘শহিদ দিবসে’র ছুটি বাতিল করেছিল। এবার নির্দিষ্ট দিনটির আগেই উপত্যকার লেফ্টেন্যান্ট গভার্নরের তরফে জানানো হয়েছিল, ‘শহিদ দিবস’ পালন করা যাবে না। ‘শহিদদের’ কবরস্থান মাজার-ই-শুহাদায় প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। প্রশাসনের কাছে ওই কবরস্থানে প্রবেশের অনুমতি চাওয়া হলে তা খারিজ করা হয়। এতেই ক্ষিপ্ত হন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী।

সোমবার সকালে নিরাপত্তাবাহিনীর নজর এড়িয়ে সকালে মাজার-ই-শুহাদার সামনে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। ওমরের সঙ্গে রীতিমতো হাতাহাতি হয় তাঁদের। এই অবস্থায় পাঁচিল টপকে শহিদদের কবরস্থানে প্রবেশ করেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী। জুতো হাতে কবরস্থানে পৌঁছে সেখানে শহিদদের শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক গতকাল থেকে আমাদের এখানে আসতে দেওয়া হয়নি। আমাদের সবাইকে ঘরবন্দি করা হয়েছিল। আমি ওদের জানিয়েছিলাম, ওখানে ফাতিহা পাঠ করতে চাই। তবে ওরা অনুমতি না গিয়ে আমার বাড়ির সামনে রীতিমতো বাঙ্কার তৈরি করে।’

কেন্দ্রীয় সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘নির্লজ্জের মতো আজও আমাদের আটকানোর চেষ্টা হয়েছে। আসলে এই পুলিশ কর্মীরা পুলিশের পোশাক পরেন, কিন্তু আইন ভুলে যান। আমি জানতে চাই, ঠিক কোন আইনে আমাদের আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল। যদি কোনও বাধা থাকে তবে তা গতকালের জন্য ছিল।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রে বাস করি। কিন্তু ওরা মনে করে আমরা ওদের গোলাম। স্পষ্টভাবে আমি জানিয়ে দিতে চাই যে, আমরা কারও ক্রীতদাস নই, যদি আমরা কারও গোলাম হই তবে সেটা এখানকার জনগণের। আমাদের আটকানোর সবরকম চেষ্টা হয়েছিল। তবে তা আমরা ব্যর্থ করেছি। ওরা এটা ভুলে যায় যে শহিদের কবরগুলি এখানেই থাকবে। ১২ জুলাই না হলে ১৩ জুলাই, ১৫ জুলাই, ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি কতদিন এরা আমাদের আটকাবে।’

এদিকে গোটা ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর ওমর আবদুল্লার পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘কেউ যদি শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে যান তাতে সমস্যা কোথায়? এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার সামিল। আজ সকালে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ