সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের প্রথম পূর্ণ সময়ের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বুধবার যুদ্ধবিমান সুখোইয়ে সওয়ার হলেন। যোধপুর বেস থেকে এদিন টু-সিটার, টুইন ইঞ্জিন ফাইটার জেট সুখোই-৩০ এমকেআই ওড়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। যুদ্ধের জন্য বায়ুসেনা কতটা তৈরি, তা খতিয়ে দেখতেই মূলত এদিন উড়ান ভরেন সীতারমণ।
বায়ুসেনার জেটে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সওয়ার হতে দেখে দেশবাসী, চিত্রগ্রাহক ও সেনার একাংশ উল্লাসিত হলেও কিছু প্রশ্ন কিন্তু এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। চিনের তুলনায় এখনও ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে পর্যাপ্ত যুদ্ধবিমান নেই। গতমাসে লোকসভা অধিবেশনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরই পেশ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে একথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২৫-এর মধ্যে নতুন যুদ্ধবিমান না কিনলে বায়ুসেনার স্কোয়াড্রন আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০১৯-এও নতুন কোনও স্কোয়াড্রন যুক্ত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়নি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। অথচ, স্কোয়াড্রন বাড়ানোর ধীর গতি নিয়ে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিজেপি সরকারই তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে। বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে আশ্বাস দেওয়া হয়, ক্ষমতায় এলে ঢেলে সাজানো হবে বায়ুসেনাকে।
ইউপিএ-র নীতি দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছে বলেও সরব হয় বিজেপি। অথচ, লোকসভাতে পেশ হওয়া তথ্য বলছে, এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আজ পর্যন্ত নতুন একটিও স্কোয়াড্রনও বায়ুসেনায় যুক্ত হয়নি। এভাবে চললে ২০২৫-এ বায়ুসেনার স্কোয়াড্রন আরও কমতে বাধ্য। কারণ, বেশ কয়েকটি রুশ বিমান কর্মক্ষমতা হারাতে চলেছে। বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের প্রশ্নের উত্তরে সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ ভামরে জানান, ২০২০-র মধ্যে বায়ুসেনার কাছে ৩২টি ফাইটার স্কোয়াড্রন ও ৩৯টি হেলিকপ্টার থাকবে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৪-এর মধ্যে আরও অন্তত ১২টি স্কোয়াড্রন অবসর নেবে। যদিও বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানোয়ার যুক্তি, ২০৩২-এর মধ্যে সেনার কাছে ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান থাকবে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন বাহাদুর অবশ্য এই দাবির সত্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, বায়ুসেনায় যুদ্ধবিমানের ঘাটতি মেটাতে প্রায় ২০০টি জেট কিনতে চলেছে ভারত। কয়েক বিলিয়ন ডলারের এই বিশাল চুক্তি বাগিয়ে নিতে ইতিমধ্যে বিশ্বের তাবড় অস্ত্র নির্মাণকারী সংস্থাগুলির মধ্যে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে লড়াই চালাতে গেলে এই মুহূর্তে বায়ুসেনার প্রয়োজন ৪৪টি স্কোয়াড্রনের। কিন্তু বর্তমানে বায়ুসেনার হাতে রয়েছে মাত্র ৩২টি স্কোয়াড্রন। তাই এই ঘাটতি মেটাতে ভারতের ক্রয়তালিকায় রয়েছে F-16, Gripen-E, F-18s, Rafales ও MiG-35 এর মতো বিমান। তবে F-16 ও Gripen-E-র দিকেই পাল্লা খানিকটা ঝুঁকে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে ঘাতক মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১৬ ও সুইডেনে নির্মিত সাব গ্রিপেন ফাইটার এয়ারক্রাফট পরীক্ষা করে দেখছে ভারতীয় বায়ুসেনা। বেশ কয়েক দফার পরীক্ষায় পাশ করলে ১২০টি যুদ্ধবিমান নির্মাণের বরাত পাবে যে কোনও এক বিদেশি সংস্থা। সেক্ষেত্রে প্রথম দফায় কয়েকটি যুদ্ধবিমান আমদানি করা হলেও তারপর ভারতেই বিদেশি প্রযুক্তি ও কারিগরী সহায়তায় তৈরি হবে নয়া যুদ্ধবিমানগুলি।
দেখুন ভিডিও:
Inside view of the cockpit during Smt ‘s sortie on the Sukhoi-30 MKI
— Raksha Mantri (@DefenceMinIndia)
Jodhpur: Defence Minister Nirmala Sitharaman gives a thumbs-up as she takes off for a sortie in the Sukhoi-30 MKI.
— ANI (@ANI)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.