সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয়দের বিদেশ ভ্রমণে কার্যত নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেন্দ্র। করোনা সংক্রমণ রুখতে এমনই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বৃহস্পতিবার সংসদের দুই কক্ষেই বিবৃতি দিয়ে জানান, জরুরি কাজ না থাকলে বা খুব প্রয়োজন না থাকলে বিদেশে যাবেন না। করোনা পরিস্থিতির উপর সবসময় নজর রাখছি, দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে এদিন জানান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন (Harsh Vardhan)। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের রেশ ধরে এদিন করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্যই আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। করোনা নিয়ে আলোচনা করেতে গিয়ে দিল্লি হিংসা নিয়ে রাজ্যসভায় বিতর্ক বাধলেও তা কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু।
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় করোনা ভাইরাস নিয়ে আলোচনার সময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন হর্ষ বর্ধন। তিনি জানান, “আমি নিজে এই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরাও প্রতিদিন পরিস্থিতির নজরদারি করে চলেছেন।”
Union Health Minister: I am daily reviewing the situation. A Group of Ministers is also monitoring the situation.
— ANI (@ANI)
এপর্যন্ত মোট ৩০টি করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেলেও তাদের মধ্যে ৩ জনই ছিলেন কেরলের। এই ৩ জনের রক্তে করোনার নমুনা না পাওয়ার ফলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই ইটালি থেকে দিল্লিতে ফেরত আসার পর করোনার নমুনা মিলেছে এক ব্যক্তির রক্তে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, হু (World Health Organisation)-এর নির্দেশ মেনে ভারতে অনেক আগে থেকেই করোনা থেকে বাঁচতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখনও প্রায় ৬,১১,১৭৬ জন যাত্রীকে বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং করা হয়। আগে ১২টি দেশের যাত্রীদের ভারতে প্রবেশের আগে স্ক্রিনিং করলেও এখন প্রতিটি দেশের যাত্রীদের প্রবেশের সময়েও স্ক্রিনিং করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে এদিন করোনা ভাইরাস নিয়ে আলোচনার সময় রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। পাশাপাশি করোনা নিয়ে সরকারকে আরও সচেতনতা মূলক প্রচার করার দাবি জানান।
একই রকমভাবে আপ, সপা, তৃণমূলের সাংসদরাও দেশের প্রতিটি স্থানে করোনার সতর্কীকরণ সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারকে গুরুত্ব দিয়েছেন। যেমন, মেট্রো, রেল স্টেশন ও বাসস্টপে বিভিন্ন পোস্টারের মাধ্যমে এই সচেতনতার প্রচারের ওপর জোর দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি করোনা দমনে প্রতিটি ধর্মের বিশ্বাস মেনে বিভিন্ন রাজ্যে নিয়ম পালনের বিষয় থেকে দিল্লি হিংসার বিষয় উঠে এলে তা থামিয়ে দেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। তিনি কড়া সুরে এই বিতর্কের প্রতিবাদ করেন ও জানান, “নিজেদের বিশ্বাসে ভর করে এই রোগের দমনে সকলে ইচ্ছামতো পদক্ষেপ নিতেই পারেন। তবে এটা নিয়ে রাজ্যসভায় উত্তেজনার প্রয়োজন নেই, এটা বাজার নয়।আজ করোনা ছাড়া অন্য বিষয়ে আলোচনা নয়।”
স্কুল শিক্ষা দপ্তরগুলিতে সতর্ক করতে প্রতিটি স্কুলের পড়ুয়াদের ভিড়ে বা জমায়েতে থাকতে বারণ করা হয়েছে। COVID-19 বা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কোনও ব্যক্তিকে হাসপাতালের কোয়ারান্টাইনে বা বাড়িতে ১৪ দিনের নজরদারিতে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে শিক্ষিকাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনও পড়ুয়ার মধ্যে হাঁচি, কাশি বা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষ্মণ দেখা দেওয়া মাত্র তার বাড়ির অভিভাবকদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা করে চিকিৎসার পরামর্শ দিতে হবে। স্কুলের বিভিন্ন জায়গায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার ও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.