ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোদ প্রধানমন্ত্রী থেকে গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে যোগ ছিল সন্ত্রাসযোগের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামী ইয়াসিন মালিকের। সম্প্রতি তাঁর হলফনামায় প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। তিহাড় জেলে বন্দি জম্মু ও কাশ্মীরের এহেন নেতা ইয়াসিন মালিকের হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। তাঁর আর্জি, ইয়াসিন মামলা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হোক।
শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মেহবুবা লেখেন, ‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চিঠি লিখেছি। যেখানে অনুরোধ জানিয়েছি ইয়াসিন মালিকের মামলাটি যেন মানবিক দৃষ্টিতে বিচার করা হয়। ওঁর সঙ্গে আমার রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও এটা অস্বীকার করা যায় না যে উনি সহিংসতা ত্যাগ করে রাজনৈতিক মত প্রকাশ ও অহিংস প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছিলেন।’ শাহের উদ্দেশে চিঠিতে মেহবুবা লিখেছেন, ‘ইয়াসিন মালিক একটা সময়ে সহিংসতার প্রতীক ছিলেন। কিন্তু পরে উনি পথ বদলে অহিংসাকে বেছে নেন। আজ তিনি কারাগারে বন্দি। তাঁর এই রূপান্তর রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বাস রেখেন। ১৯৯৪ সালে তিনি অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পথে হাঁটেন, যা সাহসী পদক্ষেপ।’ গোটা পরিস্থিতি বিচার করে কেন্দ্রের কাছে মেহবুবার আর্জি ইয়াসিনের প্রতি মানবিক হোক কেন্দ্র সরকার।
উল্লেখ্য, মেহবুবার চিঠি এমন একটা সময়ে এসেছে যখন দিল্লি হাই কোর্টকে দেওয়া হলফনামায় একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন ইয়াসিন। তাঁর দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্য স্থাপনে তাঁকে ব্যবহার করেছিল মনমোহন সিংয়ের সরকার। ইউপিএ সরকারের আমলে পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও জঙ্গিনেতাদের সঙ্গে ব্যাক চ্যানেল দিয়ে আলোচনার মাধ্যম হিসাবে তাঁকে ব্যবহার করা হত। ইয়াসিনের দাবি, ২০০৬ সালে তিনি নিজে তৎকালীন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর স্পেশ্যাল ডিরেক্টর ভিকে জোশীর নির্দেশে পাক জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের সঙ্গে দেখা করেন। ২০০০-০১ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জমানায় পাকিস্তানের সঙ্গে রমজান যুদ্ধবিরতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ইয়াসিন। তখন খোদ অজিত ডোভাল তাঁকে দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করান।
এই পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়েই মেহবুবার আর্জি, ‘আমাদের কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে একজন মানুষ যিনি সহিংসতার মধ্যে বড় হয়েছেন। তিনি সেই হিংসা জর্জরিত অঞ্চলে থেকে হিংসা ত্যাগ করে রাজনীতি ও অহিংসার পথে হেঁটেছেন। রাষ্ট্রের উচিত তাঁর সাহসিকতাকে সম্মান জানানো।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.