সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৯ সালেই ফুরিয়েছিল দেওঘরের (Deoghar) ত্রিকূট পাহাড়ের রোপওয়ের আয়ু! তারপরেও তা দিব্য চলছিল। সেই কারণেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল? এখন এমন প্রশ্নই উঠছে। যেহেতু স্বয়ং ঝাড়খণ্ড ট্যুরিজমের ডিরেক্টর রাহুল সিনহা জানিয়েছেন, তিন বছর আগেই লাইসেন্সের মেয়াদ ফুরিয়েছিল ওই রোপওয়ের। এক্ষেত্রে অবশ্য দায় ঝেড়ে ফেলার সুযোগ পাচ্ছে ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) সরকার। আঙুল উঠছে রোপওয়ে সংস্থা দামোদর রোপওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রা লিমিটেডের দিকে।
রবিবার বিকেলে রোপওয়ে চেপে দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড় (Trikut Hill) দর্শনই কাল হয়েছিল পর্যটকদের। ওই দিন দুপুরের পর আচমকা দু’ টি কেবল কারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন সে দু’টি বৈদ্যনাথ মন্দিরের কাছে দেড় হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল। ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। রোপওয়ে থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় ২ জন পর্যটকের। পরে উদ্ধার কাজের সময় মৃত্যু হয় আরও দুই পর্যটকের। সব মিলিয়ে এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। তবে ৪০ জনের বেশি পর্যটককে নিরাপদে রোপওয়ে থেকে নামিয়ে আনতে পেরেছে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। উদ্ধার কাজ চালানোর সময়েই প্রশাসন জানিয়েছিল যান্ত্রিক ত্রুটিতেই দুর্ঘটনা। কিন্তু কী সেই ত্রুটি?
Footage of Deoghar Ropeway Accident
10-04-2022 4:30pm— Purushottam Keshri (@k_puru30)
এদিন বোঝা গেল, সেই ত্রুটি সাময়িক গোলমাল নয় বরং রক্ষণাবেক্ষণহীন মেয়াদ ফুরনো রোপওয়ের বলি হয়েছেন চার-চারটি তাজা প্রাণ। বিষয়টি স্পষ্ট হয় দুর্ঘটনা নিয়ে ঝাড়খণ্ড ট্যুরিজমের ডিরেক্টর রাহুল সিনহার মন্তব্যের পর। তিনি বলেন, রবিবার রোপওয়েতে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটে। এরপরই তিনি জানান, ওই রোপওয়ে সংস্থার চুক্তি ও লাইসেন্স শেষ হয়ে গিয়েছিল ২০১৯ সালে। যা পুনর্নবীকরণ হয়নি। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, রাজ্য সরকার রোপওয়ে চালাতে দিল কেন? সেই উত্তর দিতে পারেনি ঝাড়খণ্ড সরকার। বরং দামোদর রোপওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রা লিমিটেডের ম্যানেজার মহেশ মাইতি জানিয়ে দিয়েছেন, এখনও ওই রোপওয়ে থেকে যে আয় হয়, তার ভাগ নেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু লাইসেন্স ফুরোনোর পরেও রোপওয়ে চালানো হল কেন?
ম্যানেজারের যুক্তি, চুক্তির সময় বলা হয়েছিল, মেয়াদ ফুরনোর পর দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হবে, সেই কারণেই রোপওয়ে চলছিল। রাজ্য সরকারের দিকে পালটা আঙুল তুলে তিনি বলেন, ঝাড়খণ্ড ট্যুরিজমের ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়া আমাদের পক্ষে রোপওয়ে চালানো সম্ভব ছিল না। সব মিলিয়ে রবিবারের দুর্ঘটনার পর বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ উঠছে শিবু সোরেন সরকারের দিকেই।
এদিকে ঝাড়খণ্ডের দুর্ঘটনার পর সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই নির্দেশিকায় রোপওয়ের রক্ষণাবেক্ষণে জোর দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রক জানিয়েছে, রোপওয়ে প্রকল্পগুলির পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের মান (Bureau of Indian Standards) মেনে চলতে হবে। যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.