সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না! যোগাযোগও করা যাচ্ছে না তাঁর সঙ্গে। শনিবার এমনটাই দাবি করলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। এমনকী বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দ্বারস্থ হয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে।
শনিবার কপিল বলেন, “গত ২১ জুলাই উপরাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিয়েছেন ধনকড়। আজ, ৯ আগস্ট। সেই দিন থেকে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমারা জানি না তিনি কোথায় আছেন। তিনি সরকারি বাসভবনে নেই। প্রথম দিন আমি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব জানিয়েছিলেন, তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “আমি লা পাতা লেডিজ শুনেছি। কিন্তু লা পাতা ভাইস প্রেসিডেন্ট শুনিনি।”
তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ধনকড় কোথায়? তিনি কি নিরাপদ? কেন তিনি যোগাযোগ করছেন না? শাহের জানা উচিত! তিনি উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। দেশের জন্য এটা চিন্তার বিষয়।’ কপিল আরও বলেন, “তাঁর (ধনকড়) সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। তিনি একজন আইনজীবীও ছিলেন। অনেক মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমি উদ্বিগ্ন। তাঁর কোনও খবর পাচ্ছি না।”
Vice President Jagdeep Dhankar
Can we be informed :
Where is he ?
Is he safe ?
Why is he incommunicado ?Amit Shah ji should know !
He was our Vice President ; the country should be worried !
— Kapil Sibal (@KapilSibal)
গত ২১ জুলাই উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন ধনকড়। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও তাঁকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় জাতীয় রাজনীতিতে। উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের এই ইস্তফা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেস মহাসচিব জয়রাম রমেশের সন্দেহ, মোদি সরকারের চাপের মুখেই ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন ধনকড়। তাঁর কথায়, “সামনে যেটুকু দেখা যাচ্ছে, পর্দার আড়ালে তার চেয়ে অনেক বড় কিছু ঘটে গিয়েছে।”
VIDEO | In a press conference, Rajya Sabha MP Kapil Sibal () says, “On July 22, Jagdeep Dhankhar resigned, we don’t know where he is… It seems that the Opposition will have to protect him. I had called, I was informed he is taking rest, after that, nobody is taking…
— Press Trust of India (@PTI_News)
আসলে ২১ জুলাই (সোমবার) থেকেই সংসদে শুরু হয় বাদল অধিবেশন। দিনভর উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন ধনকড়। কিন্তু অধিবেশনের প্রথম দিনেই ধনকড়ের কাজে ‘কেন্দ্রবিরোধিতা’র আঁচ পেয়েছিল রাজনৈতিক মহল। প্রথমেই আসে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব গ্রহণ। অধিবেশনের আগের দিন সর্বদল বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে প্রথমে পদক্ষেপ করবে লোকসভা। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের ‘বিরোধিতা’ করেন ধনকড়। বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই ৬৩ জন বিরোধী সাংসদের সই করা প্রস্তাব রাজ্যসভায় গ্রহণ করেন তিনি।
এই ঘটনার খানিক পরে ধনকড়ের আরেক সিদ্ধান্তে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যায় রাজনৈতিক মহল। পহেলগাঁও হামলায় নিরাপত্তার গাফিলতি এবং ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা-কেন্দ্রের দুই ‘অস্বস্তি’র ইস্যু নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে অনুমতি দেন উপরাষ্ট্রপতি। এই ঘটনায় বেশ অসন্তুষ্ট হয় রাজ্যসভার ট্রেজারি বেঞ্চ। উল্লেখ্য, এই একই ইস্যুতে লোকসভায় বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।
অধিবেশনের প্রথম দিনে এমন ঘটনাবলির পরে আচমকাই বিকেল চারটে নাগাদ সরকারি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, বুধবার জয়পুর সফরে যাবেন উপরাষ্ট্রপতি। অধিবেশন চলাকালীনই এমন সফরের কথায় অনেকর মনেই প্রশ্ন জেগেছিল। শেষ পর্যন্ত এদিন রাতে ইস্তফা দেন ধনকড়। তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের মতে, বেশ কিছুদিন ধরেই মনমরা ছিলেন সদ্য প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি। তবে রাজনৈতিক কেরিয়ার এত তাড়াতাড়ি শেষ করবেন না ধনকড়, এমনটাই মত তাঁর ঘনিষ্ঠদের। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতিকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন কপিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.