সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৭৯। ইরানে শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি রাজতন্ত্রের পতন। রুহোল্লাহ খোমেইনির হাত ধরে ইসলামিক ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা বলা ভালো মোল্লাতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা। ইরানের ইতিহাসের সন্ধিক্ষণ। সেই সন্ধিক্ষণের নেপথ্যে যে সুপ্রিম লিডার রুহোল্লাহ খোমেইনির হাত, তাঁর শিকড় আসলে ভারতে। তাঁর পূর্বপুরুষরা থেকেছেন এই উত্তরপ্রদেশে।
আজ ইরানে যে মোল্লাতন্ত্রের বলে বলিয়ান হয়ে ইজরায়েল-আমেরিকাকে প্রতিরোধ করার স্বপ্ন দেখছেন আয়াতোল্লা আলি খামেনেই, সেই মোল্লাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আসলে রুহোল্লাহ খোমেইনি। যার পূর্বপুরুষদের বাস ছিল উত্তরপ্রদেশের ছোট্ট গ্রামে। আনুমানিক ১৮০০ সালে উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি কিন্তুর গ্রামে জন্ম নেন শিয়া ধর্মীয় গুরু সৈয়দ আহমেদ মুসাবি। ইসলামকে আরও গভীরভাবে জানা ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি ১৮৩০ সালে চলে যান ইরাকে। সেসময় ভারতে মোগল আমল শেষের দিকে। অনেক জায়গায় ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত। তাই ইসলামের চর্চার জন্য ভারতকে নিরাপদ বোধ করেননি তিনি।
ইরানে কিছুদিন থাকার পর ১৯৩৪ সালে ইরানের খোমেইন শহরে বসবাস শুরু করেন সৈয়দ আহমেদ মুসাবি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইরানে বসবাস করলেও নিজের ভারতীয় পরিচয় ভোলেননি আহমেদ। সেকারণেই নিজের নামের পাশে তিনি জুড়ে নেন ‘হিন্দি’ উপাধি। ইরানে শিয়া ধর্মশিক্ষা দিতেন তিনি। তাঁর সম্মান মোস্তফা হিন্দি, এবং মোস্তফার সন্তান হলেন রুহোল্লাহ খোমেইনি। বাবা এবং দাদুর মতো খোমেইনিও ধর্মগুরুই ছিলেন। কিন্তু তিনি প্রায় গোটা ইরানকে নিজের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত করেন।
এই রুহোল্লাহ খোমেইনির নেতৃত্বেই ইরানে ইসলামিক বিপ্লব শুরু হয়। ১৯৭৯ সালে ইরানে শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির পাশ্চাত্য সমর্থিত রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। সে দেশের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ইতিহাস পুরোপুরি বদলে যায়। আজ যে আয়াতোল্লা আলি খামেনেই সুপ্রিম লিডার হয়ে বকলমে ইরান শাসন করছেন সেটা আসলে রুহোল্লাহ খোমেইনির দান। সেই রুহোল্লাহ খোমেইনির শিকড় আবার এই ভারতেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.