Advertisement
Advertisement
Boeing AI 171 crash

এআই-১৭১ বিপর্যয়ের নেপথ্য নাশকতা? খতিয়ে দেখতে কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ, বাজেয়াপ্ত ফোনও

বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

Investigators questioning Air India's workers over Boeing AI 171 crash
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 19, 2025 10:06 am
  • Updated:June 19, 2025 10:06 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১ বিমান দুর্ঘটনায় যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়াও নাশকতার সম্ভাবনকেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। সাম্প্রতিকালের সর্বাপেক্ষ ভয়াবহ ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নিয়ে ‘৩৬০ ডিগ্রি’ তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত সংস্থাগুলি। অর্থাৎ, যাতে মানুষের ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা সম্ভাব্য নাশকতা-সব কিছুই খতিয়ে দেখা যায়। বিমানের প্রি-ফ্লাইট, অর্থাৎ, উড়ানের আগে প্রস্তুতির কাজে যে সমস্ত কর্মীরা যুক্তি ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা মনে করছেন, ওই ফোনগুলি থেকে সন্দেহজনক আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা তাদের ‘রহস্যজনক’ বার্তা নিয়ে কোনও সূত্র মিলতে পারে। এছাড়াও ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ড্রিমলাইনার বিমান আমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে উড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই মাটিতে আছড়ে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়। বিমান চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও অন্তত ৩৮ জনের। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ, অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রেকের অধীন এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) পৃথকভাবে দুর্ঘটনার তদন্ত করছে। তা ছাড়া, আমেরিকার ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং এনটিএসবি সম্মিলিতভাবে তদন্ত সহযোগিতা করছে। বিমানটির নির্মাতা বোয়িং এবং বিমানে ব্যবহৃত ইঞ্জিনের নির্মাতা জিই এয়ারোস্পেস তদন্তে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল।

ইতিমধ্যেই বিমানের দুটি ব্ল‍্যাকবক্সই উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি বিশ্লেষণের পাশাপাশি, গ্রাউন্ড লেভেলেও তদন্ত শুরু হয়েছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে তদন্তকারীদের এক সূত্র উল্লখ করে দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এআই-১৭১ বিমানটি ওড়ার আগে সেটির দেখাশোনার কাজে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। বিমানটি ওড়ার সবুজ সংকেত যে কর্মীরা দিয়েছিলেন, এমন বেশ কয়েকজনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি ওই সূত্রের। মোবাইলগুলি যাচাই করে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

বিমান বিপর্যয়ে নাশকতার যোগ রয়েছে কিনা, এখনও পর্যন্ত তার কোনও স্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। তথাপি সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মোবাইল ফোন বাজেয়প্ত করা, বিভিন্ন সামগ্রীর উপর নজরদারি বাড়ানো এবং সম্ভাব্য ‘ঘটনার আগেই যোগাযোগ’-এ সবই যৌক্তিকভাবে এ ধরনের সংশয়ের জন্ম দিয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে কড়া নিরাপত্তা রয়েছে। মোবাইলে ছবি বা ভিডিও তোলাও নিষিদ্ধ হয়েছে, যাতে কেউ অপ্রত্যাশিত ভিডিও বা ছবি তুলে সরকারি তথ্যকে প্রভাবিত করতে না পারে।

এরমধ্যেই এক চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। প্রায় ১২ বছরের পুরনো এই বিমানের ডানদিকের ইঞ্জিনটি সম্প্রতি মেরামত করা হয়েছিল। তিন মাস আগে বদলানো হয় সেটি। সূত্রের খবর, ২০২৩ সালের জুন মাসে এই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণ পরীক্ষাও করা হয়েছিল। এই বছরের ডিসেম্বরেই ইঞ্জিন পরীক্ষা করার কথা ছিল। এপ্রিল মাসে এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের বিমা কভার ৭৫০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ কোটি টাকা করা হয়। এই দুর্ঘটনা বিমান বিমা ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ক্লেমের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement