Advertisement
Advertisement
Gujrat

গুজরাটের দলিত যুবকের লড়াই, স্বাধীনতার ৭৮ বছরে মিলল সেলুনে চুল কাটানোর অধিকার!

গ্রামের নাপিতদের কাছে দলিতদের যাওয়ায় 'নিষেধ' ছিল।

first-dalit-gets-a-haircut-at-an-upper-cast-only-saloon-at-gujarat

প্রতীকী ছবি

Published by: Rakes Kanjilal
  • Posted:August 24, 2025 11:39 pm
  • Updated:August 24, 2025 11:39 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার পর কেটে গিয়েছে ৭৮ বছর। অবশ্য তারও আগে থেকে গ্রামের নাপিতদের কাছে দলিতদের যাওয়ায় ‘নিষেধ’ ছিল। ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবসের কয়েকদিন আগে সেই অন্যায় রীতি ভাঙলেন বছর চব্বিশের এক তরুণ। এই লড়াইতে তিনি পাশে পেলেন সমাজকর্মীদেরও। দলিত ওই যুবকে নাম কীর্তি চৌহান। লুকিয়ে বা ভিন গ্রামের সেলুনে নয়, গত ৭ আগস্ট নিজের গ্রামে ক্ষৌরকারের দোকানেই শিড়দাঁড়া সোজা করে চুল কাটালেন ওই যুবক। যা এই মূহুর্তে ওই গ্রামের সবচেয়ে চর্চার বিষয়। ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের এক প্রত্যন্ত গ্রাম আলওয়াড়ায়।

Advertisement

গ্রামে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ মানুষের বাস। যার মধ্যে দলিতের সংখ্যা অন্তত ২৫০। এতদিন চুল কিংবা দাড়ি কাটাতে হলে পায়ে হেঁটে অন্য গ্রামে যেতে হত দলিত মানুষদের। শুধুমাত্র উচবর্ণেরই ক্ষৌরকারদের দিয়ে চুল কাটানোর অধিকার রয়েছে। এতদিন এটাই হয়েছে। সেই প্রথায় ভাঙলেন দলিত যুবক কীর্তি চৌহান। কিন্তু কে এই কীর্তি চৌহান? পেশায় কৃষিশ্রমিক কীর্তি জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখেছেন বিভেদের কড়াকড়ি। বংশপরম্পরায় গ্রামের কোনও নাপিতই দলিতদের চুল বা দাড়ি কাটেন না। সে অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র উচ্চবর্ণের মানুষের। দূরের গ্রামে চুল কাটাতে গেলেও জাত লুকিয়ে রাখতে হয়। জানাজানি হলে সেই নাপিতের দোকানের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে বরাবর। হঠাৎই কীর্তি মনোস্থির করেন গ্রামের সেলুনে চুল কাটাবেন তিনি। অদম্য লড়াইয়ের পর এই অধিকার অর্জন করেছেন কীর্তি ও গ্রামের অন্য দলিতরা।

তাঁদের হয়ে মাঠে নামেন গ্রামেরই এক সমাজকর্মী চেতন দাভী। উচ্চবর্ণের মানুষদের এই অন্যায় নীতি ও দলিতদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে শুরু করেন চেতন। পরবর্তীকালে পাশে দাঁড়ায় পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন। গ্রামের মোড়লদের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত এই লড়াইয়ে হার মানেন উচ্চবর্ণের লোকজন। গ্রামের মোড়ল এই বৈষম্যনীতির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। চুল কাটার অধিকার পান কীর্তি চৌহান ও গ্রামের অন্য দলিতরা।

এমন অসম্ভবকে সম্ভব করে কীর্তি বলছেন, সেদিন তিনি নিজের গ্রামে স্বাধীনতার সুখ অনুভব করেছেন। গ্রামের অন্য দলিতরা বলছেন, আলওয়াড়ায় এই নিয়ম বহুকালের। স্বাধীনতার আগে তাঁদের পূর্বপুরুষরাও এই বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন। অবশেষে এই অন্যায় ও বৈষম্যের যুগ শেষ হল। এই লড়াই থেকেই আর এক নতুন লড়াইয়ের রসদ খুঁজে পাচ্ছেন আলওয়াড়ার দলিতরা। এখনও কোনও নিমন্ত্রণে গেলে আলাদা করে বসতে বাধ্য করা হয় তাঁদের। দলিতরা স্বপ্ন দেখছেন, এই বিভেদও একদিন মিটে যাবে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ