Advertisement
Advertisement

রাত নামলে এই মিনারে দেখা যায় প্রেতাত্মার কাটা মাথা!

দেখতে মানুষের মতোই, কিন্তু চোখদুটি অস্বাভাবিক জ্বলজ্বলে! যেন আগুন ঠিকরে বেরোচ্ছে!

Chor Minar- A Tower With A Ghostly Past
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 10, 2016 7:00 pm
  • Updated:June 10, 2016 7:00 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি ভূতের শহর না মানুষের?
দিল্লিবাসীরা, দোহাই, রাগ করবেন না!
আসলে, ভূত মানে অতীতও! যুগের পর যুগ ধরে যা ভারতের রাজধানী হিসেবে রাজনীতির কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে রয়েছে মাথা তুলে, সেখানে আর যাই হোক, ইতিহাসের কমতি হয় না!
আর ইতিহাস মানেই তো যুদ্ধের কথা। শাসনের কথা, শোষণের কথা। শাসকের অত্যাচার আর শোষিতর অতৃপ্তির কথা। সেই অতৃপ্তিই এখনও অভিশাপের মতো জমাট বেঁধে রয়েছে দিল্লির আনাচে-কানাচে।
যার সেরা নজির হতে পারে এই মিনার। চোর মিনার। নয়াদিল্লির অরবিন্দ মার্গের ঠিক উল্টো দিকে হজ খাস এলাকার কুখ্যাত কাটা মাথার মিনার। যা আজও গভীর রাতে আতঙ্কে স্তব্ধ করে রাখে স্থানীয়দের!

Advertisement

chorminar1_web
কাহিনি বলছে, দিল্লিতে তখন চলছে খিলজি বংশের শাসন। আলাউদ্দিন খিলজি তখন বেনজির শাসন আর অত্যাচারের স্মারক হিসেবে তৈরি করেছিলেন এই মিনারটাকে। ২২৫টি রন্ধ্রওয়ালা এই চোর মিনারকে!
লোকমুখে শোনা যায়, আলাউদ্দিন খিলজি খুব একটা মন্দ উদ্দেশ্য নিয়ে এই মিনার বানাননি। তিনি চেয়েছিলেন রাজধানীকে অপরাধের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে। অপরাধ করলে তার শাস্তি কত ভয়াবহ হতে পারে, তা প্রদর্শনের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল এই মিনার। চোরদের শাস্তি দেওয়ার জন্য মিনার- তাই নামও চোর মিনার!
কী করা হত এখানে চোরেদের নিয়ে?
তাদের মাথা কেটে, বল্লমের ডগায় গেঁথে একেকটি রন্ধ্র দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হত! যাতে এই ভয়াবহ শাস্তি দেখে কেউ অপরাধে লিপ্ত হওয়ার সাহস না পায়!

chorminar2_web
এ তো গেল লোকবিশ্বাস! ঐতিহাসিকরা কিন্তু বলছেন অন্য কথা। যেটাও কম ভয়ানক নয়!
আলাউদ্দিন খিলজির এই মিনার ব্যবহৃত হত যুদ্ধবন্দীদের কাটা মাথা প্রদর্শনের জন্য। ৮০০০ মোঙ্গলদের মাথা কেটে তিনি প্রদর্শিত করেছিলেন এই মিনারে। যাতে তারা নিজেদের মতো দল তৈরি করে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে না পারে!
এই জায়গায় এসে একটা প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। মিনারে রন্ধ্র মাত্র ২২৫টি! আর মোঙ্গলরা সংখ্যায় ৮০০০! তাহলে, সবার কাটা মাথা কী ভাবে প্রদর্শিত হয়েছিল?
সবার কাটা মাথা প্রদর্শিত আদপেই হয়নি! এ ব্যাপারে আলাউদ্দিন খিলজি যথেষ্টই শ্রেণিবৈষম্যের পরিচয় দিয়েছিলেন। মোঙ্গল-গোষ্ঠীর বিশেষ বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাটা মাথাই স্থান পেয়েছিল মিনারে। বাকিদের মাথা স্তূপ করে জড়ো করা হয়েছিল মিনারের পাশে! দরকার মতো আবার পুরনো মাথা সরিয়ে নতুন মাথাও প্রদর্শিত হত!

chorminar3_web
স্থানীয়রা বলেন, কালের নিয়মে আলাউদ্দিন খিলজি পৃথিবী থেকে ধুয়ে-মুছে গেলেও তাঁর অত্যাচারের শিকাররা আজও পৃথিবী ছাড়তে পারেনি। গভীর রাতে, অন্ধকারের আড়ালে তারা না কি একে একে জড়ো হয় এই চোর মিনারে। শোনা যায় বিলাপের শব্দ। আর কোথাও না হলেও চোর মিনারের রন্ধ্রপথে ঝড়ের মতো বেগে হাওয়া প্রবাহিত হয়। স্থানীয়রা বলেন, তা না কি যাদের মাথা কেটে নেওয়া হয়েছিল, তাদের দীর্ঘনিশ্বাস!
শুধু তাই নয়, অনেকে আচমকা রন্ধ্রে কাটা মাথাও দেখেছেন প্রেতাত্মার! দেখতে মানুষের মতোই, কিন্তু চোখদুটি অস্বাভাবিক জ্বলজ্বলে! যেন আগুন ঠিকরে বেরোচ্ছে!
বিশ্বাস করা বা না-করা একান্তই আপনার মর্জি! তবে, একটা ব্যাপারে আশা করি একমত হবেন!
ওই মানুষগুলো মৃত্যুর পরেও নিভৃতি পায়নি! তাদের কাটা মাথা টাঙিয়ে রাখা হয়েছিল সবার চোখের সামনে!
আর এখন আপনি রাতের বেলায় চোর মিনারে উপস্থিত হয়ে সেই নিভৃতিতে বাধা না-ই বা দিলেন!

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস