সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে দিল্লি ও নবান্নের বেনজির সংঘাতের সাক্ষী থাকল পশ্চিমবঙ্গ। সোমবার কর্মজীবন থেকে ইস্তফা দিয়ে কৌশলে কেন্দ্রের ফরমান এড়িয়ে গেলেন আলাপন। আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মুখ্য উপদেষ্টা নিয়োগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই ঘটনায় তুমুল আলোড়ন নেটদুনিয়ায়। টুইটারে ট্রেন্ডিং #BengaliPrimeMinister।
Everyone says Bengali Prime Minister, it’s not possible.
AdvertisementI say if Bengalis can make the country independent, then they can also be the Prime Minister.
— Papai Ghosh (@PapaiGh76636810)
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এদিন কেন্দ্র-রাজ্যের রাজনৈতিক সংঘাত ছাপিয়ে নেটদুনিয়ায় প্রকাশ্যে উঠে এল উগ্র বাঙালি জাতিসত্ত্বার এক নগ্নরূপ। বাংলার রাজনৈতিক ময়দানে নয়াদিল্লি বনাম নবান্নের যে দৃষ্টিকটূ লড়াই চলছে তা কিন্তু এক্ষেত্রে গৌণ। নেটদুনিয়ায় একাংশের টুইট ও পালটা টুইটে উঠে এসেছে উগ্র জাতীয়তাবাদের স্বরূপ। বাংলা এবং বাঙালি সত্ত্বা নিয়ে গর্বিত হওয়া আরেক জিনিস কিন্তু তাই বলে ‘গুটকাখোর’ বলে হিন্দিভাষীদের একাংশকে ‘বহিরাগত’ বলা সমর্থনযোগ্য নয়। এহেন উগ্র জাতীয়তাবাদের কী ভয়ংকর ফল হতে পারে তা অসম দেখেছে। আমাদের পড়শি রাজ্যটিতেও ‘বাঙাল খেদাও’ আন্দোলনকে হাওয়া দিয়েছিল রাজনৈতিক মতবিরোধ। প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসেন তা বাংলা এবং বাঙালির জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় হবে। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে পশ্চিমবঙ্গ ‘ভারতবর্ষ’ নামের একটি দেশের অঙ্গরাজ্য। ভাষিক বা ধর্মীয় বিবিধতাই এই দেশের শক্তি।
And how long will we be under this Hindi-Hindutva-Hindustani adulterous ruler?
That’s enough!
Now I want a Bengali Prime Minister!
— Rup Chakraborty (@rupCHAKRABORT11)
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের চিঠির পরও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Banerjee) ছাড়েনি রাজ্য। বরং সোমবার নিজের কর্মজীবন থেকে অবসর নিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা পদে তাঁকে নিযুক্ত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব হলেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এবং স্বরাষ্ট্রসচিব পদে তাঁর বদলে এলেন বি পি গোপালিকা। এদিন বিকেলে পাঁচটার কিছুক্ষণ আগে রাজ্যকে পালটা চিঠি দেয় কেন্দ্র। তাতে মুখ্যসচিবকে অবিলম্বে কেন্দ্রের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ৩১ মে-ই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসর গ্রহণের দিন ছিল। কিন্তু রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি এবং ঘূর্ণিঝড় যশ পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁর কর্মজীবনের মেয়াদ তিন মাস বৃদ্ধির আবেদন জানায় রাজ্য। তাতে সায়ও দেয় মোদি সরকার। কিন্তু এর কয়েক দিনের মধ্যেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলির নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এর পরই তুঙ্গে ওঠে টানাপোড়েন।
তবে রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে মোদি-শাহ জুটিকে পর্যুদস্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে বিরোধী ঐক্যের মুখ হয়ে উঠতে পারেন তিনি। তাছাড়া, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে জাতীয় রাজনীতিতে ‘দিদি’র উত্থান সময়ের অপেক্ষা বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.