ফাইল ছবি
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বুধবার মৃত্যু হয় সিপিআই (মাওবাদী)-র শীর্ষনেতা ও সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। তাঁর মৃত্যুর ফলে মাওবাদীদের কোমর ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও গোয়েন্দারা। কিন্তু এতবড় ধাক্কার পরও হাল ছাড়তে নারাজ সংগঠনের শীর্ষনেতৃত্ব। এর মধ্যেই নয়া সাধারণ সম্পাদক খোঁজার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেশব রাওয়ের মৃত্যুর পর কে সংগঠনের শীর্ষ পদে বসে সে দিকে নজর রেখেছে গোয়েন্দারাও। আপাতত দু’জনের নাম গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর। যদিও সংগঠনের তরফে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। এদিকে, মাওবাদীদের কার্যকলাপের পাশে না দাঁড়িয়েও কেশব রাওকে যেভাবে মারা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করেছে সিপিএম, সিপিআই ও ফরওয়ার্ড ব্লক।
বাসবরাজুর আসল নাম নাম্বালা কেশব রাও। ছত্তিশগড়ের অবুঝমারে দীর্ঘ সময় ধরে চলা এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে মাওবাদীদের এই শীর্ষ নেতার। গনগন্না, কৃষ্ণা, নরসিংহ, প্রকাশ— সাতের দশক থেকে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত বাসভরাজুর একাধিক ছদ্মনাম আছে। একাধিক নাশকতার পিছনে মূল মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করেছেন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ বাসবরাজু। ১৯৫৫ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার জিয়নপেট্টা গ্রামে জন্ম বাসবরাজুর। ওয়ারাঙ্গলের রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন তিনি। বিভিন্ন রিপোর্ট সূত্রের খবর, এই জীবনে জড়িয়ে পরার আগে স্কুল ও কলেজ স্তরে কবাডি খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। সাতের দশক থেকে মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন বাসবরাজু। ১৮ সালে অসুস্থ হওয়ার পর সংগঠনের শীর্ষ পদ থেকে অব্যাহতি নেন মুপ্পালা লক্ষণ রাও ওরফে গণপতি। তাঁর জায়গায় সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে সংগঠনের হাল ধরেন কেশব রাও। তাঁর সময়েই ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া ও বাস্তার অঞ্চলে একের পর এক হামলা চালায় মাওবাদীরা। অসংখ্য আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানের মুত্যুও হয়। অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবারি দাবি করছেন ২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশের ‘আভ্যন্তরীণ বিপদ’ মাওবাদ ধ্বংস করা হবে। সেই কাজই করছে যোথ বাহিনী।
এদিকে মাওবাদীরা যে নতুন সাধারণ সম্পাদক খোঁজার কাজ শুরু করেছে সেই খবর ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে স্বরাষ্টমন্ত্রক। সূত্রের খবর ফের দক্ষিণ ভারত থেকেই নতুন সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ করা হতে পারে। যে দু’জনের নাম নিয়ে আপাতত আলোচনা শুরু হয়েছে তারা হলেন, পলিটব্যুরোর সদস্য বেনুগোপাল ওরফে সোনু ও দেবজি তিরুপতি। আবার মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে সিপিএম। সেইসঙ্গে মাওবাদী নিধনের নামে যেভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে রাষ্ট্র তারও প্রতিবাদ করা হয়েছে সিপিএমের তরফে। রাষ্ট্র হত্যার পথ ছেড়ে মাওবাদীদের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পনের উদ্যোগ নিক বলে দাবি করেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক ডি দেবরাজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.