সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংবিধান সংশোধন বিলকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিতর্ক চরম আকার নিয়েছে। বিলের লক্ষ্য কেউ ফৌজদারি মামলায় ৩০ দিন বন্দি থাকলে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী রেহাই নেই কারও। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে সরকার ফেলে দিতেই এই বিলকে অস্ত্র করতে উদ্যোগী মোদি সরকার। এহেন বিতর্কের মাঝেই এবার প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দেশের ৪০ শতাংশ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই রয়েছে ফৌজদারি মামলা।
রিপোর্ট বলছে, দেশের মোট ৩০ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ১২ জন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজিদারি মামলা। এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি মামলায় জড়িয়ে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৮৯টি মামলা। তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে রয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। ৪৭টি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এনডিএ শরিক অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর বিরুদ্ধে রয়েছে ১৯টি ফৌজদারি মামলা। এছাড়াও তালিকায় যথাক্রমে রয়েছেন, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (১৩টি), ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন (৫টি), মহারাষ্ট্র মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস (৪টি), হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং (৪টি), কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (২টি), পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের বিরুদ্ধে রয়েছে একটি ফৌজদারি মামলা। তবে ফৌজদারি মামলার প্রেক্ষিতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভাও নিষ্কলঙ্ক নয়। রিপোর্ট বলছে, মোদির মন্ত্রিসভার ৭১ মন্ত্রীর মধ্যে ২৮ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা।
সূত্রের খবর, আগামী বুধবার লোকসভায় সংবিধান সংশোধন বিল পেশ করবেন অমিত শাহ। সেই বিলে বলা হয়েছে, গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগে গ্রেপ্তার কিংবা আটক করা হলে, টানা ৩০ দিন বন্দিও থাকলে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী কিংবা অন্য কোনও মন্ত্রীকে পদ থেকে সরে যেতে হবে। এটি হবে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল। বিলে এই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে যে, বহিষ্কৃত মন্ত্রীরা মুক্তি পাওয়ার পর ফের পদ ফিরে পেতে পারেন।
বিলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধী দলের নেতৃত্বরা। এক্স হ্যান্ডেলে এই ইস্যুতে সরব হয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেন, ‘সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার বদলে কেন্দ্রের সরকার শুধুই ক্ষমতা আর সম্পদে আগ্রহী। আমরা এই কঠোর সংবিধান সংশোধনী বিলে আপত্তি জানাচ্ছি। কৃষক কিংবা দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ না করে সরকার সরকার এই বিল আনছে।’ সোশাল মিডিয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও দাবি, এসআইআর বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনকে অপব্যবহারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এবার বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর জন্য ইডি-কে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে বিজেপি। এই বিল পেশ করে রাজ্যের সরকারগুলিকে ফেলে দেওয়া ও গণতন্ত্রকে নষ্ট করার চেষ্টা চলছে বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই বিতর্কের মাঝেই এবার জানা গেল দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার তালিকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.